Kartik Maharaj: কার্তিক মহারাজের জীবনী: একটা ইটও নিয়ে আসেননি, সেখান থেকে বেলডাঙার বুকে ১২টা স্কুল-হাসপাতাল গড়েছেন
Kartik Maharaj: ব্রহ্মচারী হওয়ার পর স্বামী হিরন্ময়নন্দজি মহারাজের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। তাঁরই সান্নিধ্যে বড় হয়ে ওঠা কার্তিক মহারাজের। ২০-২২ বছর বয়স থেকেই হিরন্ময়নন্দজির ছত্রছায়ায় ছিলেন। পড়াশোনার মধ্যে ডুবে থাকতেন কার্তিক মহারাজ।
মুর্শিদাবাদ: বেলডাঙা ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের প্রধান কার্তিক মহারাজকে (স্বামী প্রদীপ্তানন্দ) নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর মন্তব্যে তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। মহারাজের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। মমতার অভিযোগ, কার্তিক মহারাজ নাকি বুথে তৃণমূলের এজেন্ট বসতে দেননি। সোমবার বাঁকুড়ার সভা থেকে মুখ্যমন্ত্রী করেছেন আরও বিস্ফোরক অভিযোগ। বলেছেন, ‘ এলাকায় এলাকায় গিয়ে ধর্মের নামে বিজেপির প্রচার করে বেরান। আমি বলছি, আপনি করুন। কিন্তু বিজেপির চিহ্নটা বুকে লাগিয়ে করুন। ধর্মের নামে কেন, লুকিয়ে লুকিয়ে কেন? ‘ মন্তব্যের বিরুদ্ধে পাল্টা আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন কার্তিক মহারাজ। মুখ্যমন্ত্রীকে ক্ষমা চাওয়ার কথাও বলেছেন। এই পরিস্থিতিতে খবরের শিরোনামে ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের কার্তিক মহারাজ।
কার্তিক মহারাজকে নিয়ে কথা বললেন তাঁর শিষ্য দিবাকর কর্মকার। তিনি জানান, কার্তিক মহারাজ কিশোর বয়সেই চলে এসেছিলেন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে। প্রথমে পুরুলিয়ার একটি আশ্রমে গিয়েছিলেন। ঔরঙ্গাবাদ আশ্রমে যান। তখন তাঁর পরনে ছিল সাধারণ পোশাক, প্যান্ট শার্ট। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের ভাবধারা ভালো লাগে তাঁর। ঔরঙ্গাবাদে স্বামী প্রজ্ঞানন্দ মহারাজের কাছে দীক্ষা নেন। এরপর ধীরে ধীরে ব্রহ্মচারী হন।
কার্তিক মহারাজের শিষ্যর কথায়, ” তখন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘে তখন কঠিন জীবন। এক বেলা খাবার জুটত, আরেকবেলা জুটত না। হিসাব করে খাওয়া দাওয়া হত। যৎসামান্য ভিক্ষা থেকে যা আসত, তাই খেতে হত।”
ব্রহ্মচারী হওয়ার পর স্বামী হিরন্ময়নন্দজি মহারাজের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। তাঁরই সান্নিধ্যে বড় হয়ে ওঠা কার্তিক মহারাজের। ২০-২২ বছর বয়স থেকেই হিরন্ময়নন্দজির ছত্রছায়ায় ছিলেন। পড়াশোনার মধ্যে ডুবে থাকতেন কার্তিক মহারাজ।
এরপর তাঁর বেলডাঙায় আসা। শিষ্য দিবাকর কর্মকার বলেন, “তখন সেখানে আশ্রম ছিল না। ভিক্ষা করে, দুটো টিনের চালা দিয়ে একটা ঘর তৈরি করেছিলেন। একটা মন্দির। তাও বছর ৩৫ আগের কথা। ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠা করেন। সন্ন্যাস হন।”
কার্তিক মহারাজ বেলডাঙায় আসার পর থেকেই আদিবাসী মেয়েদের জন্য একটা হাইস্কুল করেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় করেন। ধীরে ধীরে কেন্দ্রের তরফ থেকে সরকারি সাহায্য় আসা শুরু করে। এখন বেলডাঙায় ১২টির মতো স্কুল রয়েছে। ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা প্রায় তিন হাজারের মতো। ছাত্রাবাসে ৪৫০-র মতো আদিবাসী বাচ্চা থাকে। হাসপাতাল রয়েছে। শিষ্য বললেন, “কার্তিক মহারাজ একটা ইটও নিয়ে বেলডাঙায় আসেননি। যা করেছে ভিক্ষা করেই করেছেন।”
এই কার্তিক মহারাজের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক যোগের অভিযোগ ওঠায় তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। বাংলার একাধিক ক্ষেত্রে প্রতিবাদও হয়েছে। বাংলায় এসে খোদ প্রধানমন্ত্রীও এর তীব্র নিন্দা করেছেন।