Murshidabad: ডাইনি অপবাদে জোর করে খাওয়ানো হল মলমূত্র, অপমানে আত্মঘাতী বৃদ্ধ, ঘটনার ভয়াবহতায় শিউরে উঠছেন খোদ বিডিও

Murshidabad: শেষমেশ অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন একজন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয় যে এলাকায় পৌঁছায় পুলিশ ও বিডিও।

Murshidabad: ডাইনি অপবাদে জোর করে খাওয়ানো হল মলমূত্র, অপমানে আত্মঘাতী বৃদ্ধ, ঘটনার ভয়াবহতায় শিউরে উঠছেন খোদ বিডিও
ঘটনাস্থলে বিডিও (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 26, 2022 | 12:37 PM

মুর্শিদাবাদ: এ কেমন নীতি পুলিশি? এ কোন সমাজে বাস করছি আমরা? এক বিংশ শতকে দাঁড়িতেও নক্কারজনক ঘটনার সাক্ষী থাকল বাংলা। খোদ এ রাজ্যেই ডাইনি অপবাদে পাঁচ জনকে মল খাওয়ানোর অভিযোগ উঠল। শেষমেশ অপমান সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন একজন। পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ হয় যে এলাকায় পৌঁছায় পুলিশ ও বিডিও।

মুর্শিদাবাদের রঘনাথগঞ্জ থানার অন্তর্গত জরুর গ্রাম পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রামের আদিবাসী পাড়ার ঘটনা। সেখানে দীর্ঘদিন ধরে বাস করতেন জনতা সর্দার নামে এক ব্যক্তি। এলাকায় তিনি মধু সর্দার নামে পরিচিত। জানা গিয়েছে, জনতা সর্দারের মেয়ে উপসি সর্দার দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ। মেয়ের সুস্থতার জন্য ওই পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই এক ওঝার কাছে ঝাড়ফুঁক করাতে নিয়ে যেতেন। যদিও, তাতে শেষরক্ষা হয়নি। সোমবার দুপুর নাগাদ হঠাৎ করেই মারা যান জনতা সর্দারের মেয়ে উপসি। তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে ওই ওঝা জনতার পরিবারকে জানায়, ওই গ্রামে বসবারকারী দুই পরিবার ফটিক সর্দার, সোনামণি সর্দার, বাবুলাল সর্দার, শেফালি সর্দার, নন্দিনী সর্দার, ফেলানী সর্দার, ও মানিক সর্দার এরা উপসিরে মেরেছে। এরা প্রত্যেকে ডাইনি।

সেই কথা চাউর হতেই ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন গ্রামবাসীরা। ডাইনি সন্দেহে বাড়ির ভিতর থেকে টেনে বের করে এনে এই দুই পরিবারের সদস্যদের বেধড়ক মারধর করেন তাঁরা এমনটাই অভিযোগ। এখানেই শেষ নয়, শুরু হয় নীতি পুলিশি। ওই ব্যক্তিদের মলমূত্র খাওয়ানোরও অভিযোগ ওঠে সংশ্লিষ্ট গ্রামের বাসিন্দাদের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন তাঁরা।

তাঁদের অসুস্থ হওয়ার কথা কানে যায় রঘুনাথগঞ্জ ১ নম্বর ব্লকের বিডিও-র কাছে। ঘটনাস্থলে আসে পুলিশও। তারা এসে অসুস্থদের উদ্ধার করে জঙ্গিপুর মহাকুমা হাসপাতালে ভর্তি করে।এদিকে, গোটা ঘটনার পর অপমানে আত্মঘাতী মানিক সর্দার। গতকাল রাত্রে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন তিনি। পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।

এই ঘটনায় বিডিও আবু তায়েব বলেন, ‘আদিবাসী পরিবারের পঁয়ত্রিশটি পরিবার বাস করে। ওদের মধ্যে একটা অপসংস্কৃতি কাজ করে। সেই রকমই একটা অপসংস্কৃতি ওদের মধ্যে ছিল যে কেউ মারা গেলে ডাইনির প্রভাব ঘটে। সেইটার জন্য ক্ষোভ-বিক্ষোভ। সেই কারণে এদেরকে বোঝাতে আমরা এসেছি। সঙ্গে যাঁরা নিপীড়িত হয়েছেন তাঁদেরও পাশে দাঁড়িয়েছি।’ এই বিষয়ে তৃণমূল নেতা গৌতম ঘোষ বলেন, ‘এই ঘটনাকে আমরা মান্যতা দিই না। তবে কারোর আত্মহত্যা নিতান্তই দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ-প্রশাসন আইনের আইনের কাজ করবে। ওই এলাকায় আমরা গিয়েছিলাম। সচেতনতার বার্তা দিয়েছি।’