Adhir Chaudhury: ‘বানিয়ে গল্প বলতে পারব না, বৈঠক হলে জানাব’, পুরভোটে কি ফের ‘হাতে-কাস্তে’?
Congress: বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, যেহেতু জোট কখনও ভাঙা হয়নি, তাই পুরভোটে জোট রাখা হবে কি না তা বৈঠকের পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
মুর্শিদাবাদ: বিধানসভা নির্বাচনে শূন্য হাতে ফিরতে হয়েছিল তাঁদের। উপনির্বাচনে জোট ভেঙে পৃথকভাবে প্রার্থী দিয়ে বেশ ভাল ফল করেছে বাম-কংগ্রেস। কিন্তু, পুরভোটের সমীকরণ কী হবে তা নিয়ে এখনও কপালে ভাঁজ বাম-কংগ্রেস নেতৃত্বের? ফের কি ‘কাস্তে’ মিলবে ‘হাতে’? প্রশ্ন রাজনৈতিক মহলের। প্রশ্ন জিইয়ে রেখেই ‘সাবধানী’ মন্তব্য প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীর (Adhir Chaudhury)।
সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে অধীর বলেন, “পুরভোটে কী হবে তা এখনই বলতে পারব না। এটা বলা সম্ভব নয়। বানিয়ে বানিয়ে গল্প তো বলব না। বৈঠক হোক। সেখানেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সেইমতো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।” অন্যদিকে, রবিবারই অধীর বলেছিলেন, “এখনও জোট ভাঙেনি। তাই জোট থাকবে না পৃথকভাবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।”
পাল্টা, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, যেহেতু জোট কখনও ভাঙা হয়নি, তাই পুরভোটে জোট রাখা হবে কি না তা বৈঠকের পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু জানিয়েছেন, যেহেতু জোট কখনও ভাঙা হয়নি, তাই পুরভোটে জোট রাখা হবে কি না তা বৈঠকের পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। যদিও বাম শিবিরের অন্দরে খবর, উপনির্বাচনে পৃথক ভাবে প্রার্থী দিয়ে ভোট শতাংশ বাড়লেও কিছু জায়গায় কমেছে। সেদিক থেকে জোটের সিদ্ধান্ত সদর্থক হতে পারে বলেই মত বাম শিবিরের একাংশের। যদিও তা পুরোটাই নির্ভর করছে শীর্ষ নেতৃত্বের উপর।
মঙ্গলবার সিপিএমের রাজ্য কমিটির বৈঠক। পুরসভা নির্বাচনে দলের অবস্থান কী হবে? কংগ্রেসের সঙ্গে জোট কতটা করা যাবে? জোট হলে কোন ফর্মুলায় তা হবে? সব আসনে প্রার্থী দেওয়া না কি বাছাই করা আসনে প্রাথী দেওয়া হবে? উপনির্বাচনের ফল- এই সব একাধিক ইস্যুতে আলোচনা হবে বলে সূত্রের খবর।
অন্যদিকে, কংগ্রেসের তরফেও খুব শিগগির হতে পারে বৈঠক। জোটের ভবিষ্যত নিয়েও হতে পারে আলোচনা। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কার্যত নিজ গড়ে ঘর হারিয়েছে কংগ্রেস। জোটের ‘অপরিণামদর্শীতা’-ই এর কারণ বলে দাবি করেছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। কংগ্রেসের অন্দরের খবর, এখনও অবধি জোটের পক্ষেই সওয়াল করছেন দলীয় কর্মীদের একাংশ।
তবে সিপিএমের একাংশ সওয়াল করেছেন, সব আসনে প্রাথী দিয়ে শক্তি ক্ষয় করার থেকে বাছাই আসনে প্রাথী দিলে লড়াই করতে সুবিধা হবে। আরেক অংশের মতে, সব আসনে প্রার্থী না দেওয়া হলে সংশ্লিষ্ট পুর এলাকায় কর্মীদের মনোবল ধাক্কা খাবে। বাছাই করা আসনে প্রার্থী দিলে ভোট শতাংশের হিসাবে দল ভাল জায়গায় থাকবে। তাই ওয়ার্ড বাছাই করে ভোটে লড়ার পক্ষেই সওয়াল অনেকের।
উপনির্বাচনে হার হলেও মোটের ওপর ভাল ফল করেছে বাম-কংগ্রেস। মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রে গত মাসের ভোটে কংগ্রেস পেয়েছিল ৩৭ শতাংশ ভোট। শান্তিপুরে সিপিএম পেয়েছে ২০ শতাংশ ভোট। উল্লেখ্য এই দুটি আসনেই জোট ছিল না। একে অপরের বিরুদ্ধে প্রার্থীও দিয়েছিল। রাজনৈতিক মহলে অবশ্য এই নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছিল।
সিপিএম ও কংগ্রেস কি তবে আলাদা পথে চলতে শুরু করেছে? ইতিমধ্যেই উপনির্বাচনের ফল নিয়ে আলোচনা করেছে সিপিএম। উপনির্বাচনে বিজেপির ভোট কমে যাওয়াটাও আদতে লাভ হয়েছে বামেদের। তাছাড়াও বাম শরিকদের সঙ্গে দূরত্ব কমে আসছে, যা আসলে ইতিবাচক বলে মনে করছে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্ব।
উপনির্বাচনে কিছুটা অক্সিজেন পেয়েছে বামেরা। পুরভোটেও তারা কোমর বেঁধে নামতে চাইছে। সিপিএম নেতৃত্ব মনে করছে, জয় না হলেও ভোটের শতাংশের বিচারে তাঁরা অনেকটা এগিয়ে আসতে পারবেন। সেদিক থেকে ফের জোটের পথেই হাঁটবে কি না বাম-কংগ্রেস তা নিয়ে এখনও সন্দিহান রাজনৈতিক মহল।
আরও পড়ুন: BJP: ভগবানপুরে দলীয় কর্মী খুনে সিবিআই তদন্তের দাবি, ১০ ঘণ্টা ধর্মঘটের ডাক বিজেপির