কলকাতা : বিধাননগরের চুরির ঘটনা নিয়ে উদ্বিগ্ন পুলিশ প্রশাসন (Bidhannagar Police) থেকে আবাসিকরা। চুরির ঘটনা দিনের পর দিন বেড়েই চলেছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে চুরির অভিযোগে গ্রেফতারের ঘটনা নিছক কম নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও চুরির ঘটনা বেড়েই চলেছে। সপ্তাহ খানেক আগেই পূর্ব বিধাননগর থানার অধীনে পরপর বেশ কয়েকটি বাড়িতে চুরির চেষ্টার ঘটনা ঘটেছিল। প্রতিরোধ করতে গিয়ে পুলিশকে আক্রান্ত হতে হয়েছিল। সেই ঘটনায় অভিযুক্ত গ্রেফতার হলেও এখন মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিধাননগর কমিশনারেটের চারটি থানা – বিধাননগর পূর্ব, বিধাননগর উত্তর ,বিধাননগর দক্ষিণ ও ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানা। এলাকাবাসীরা বলছেন, মূলত গ্রীষ্মকাল এবং শীতকালের চুরির ঘটনা বেশি ঘটে থাকে বিধাননগরে। গ্রীষ্মকালের দুপুরে আবাসিকরা ঘরবন্দি থাকেন। সে ক্ষেত্রে বাড়ি ফাঁকা পেলেই দুপুরে চুরির ঘটনা ঘটে। পাশাপাশি শীতের সকালেও চুরির চেষ্টা বেশি ঘটে থাকে।
চুরির ঘটনা কম করতে বিধাননগরের বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করা হয় পুলিশের তরফে। বেশকিছু পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। বিধাননগর এলাকার প্রবীণ নাগরিকদের কথা মাথায় রেখে পুলিশের পক্ষ থেকে আবাসিকদের সঙ্গে কথা বলে বাড়ি নিরাপত্তাজনিত ব্যবস্থা আরও মজবুত করা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সেই কারণ, বাড়ির চারিদিকের দেওয়াল ৭ থেকে ৮ ফুট উঁচু করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও আঁটসাঁট করার জন্য আরও বেশি সংখ্যায় সিসিটিভি লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সল্টলেক জুড়ে গাছপালা থাকার কারণে, সিসিটিভি লাগানো হলেও অনেক সময়েই তা গাছের ডালপালার কারণে আড়াল হয়ে যায়। ফলে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিতকরণের কাজ অনেকটাই কঠিন হয়ে যায়। সেক্ষেত্রে বেশকিছু গাছপালা ছাঁটা হচ্ছে প্রত্যেকটি ব্লকে। পুলিশি নজরদারি বাড়ানোর পাশাপাশি রাজ্যের শাসকদলের দৃষ্টি আকর্ষন করার আবেদন করছেন আবাসিকরা। সল্টলেক থেকে কেষ্টপুর সংযোগকারী যে ফুটব্রিজগুলি রয়েছে,সেইগুলিতে বেশি নজরদারি এবং সিসিটিভি লাগানোর ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বুলা ভট্টাচার্য নামে বিধাননগরের এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, “আমি চাই আমাদের ব্লকের নিরাপত্তা ব্যবস্থা যাতে জোরদার হয়। সবাই মিলে একত্রিত হয়ে যদি ব্যবস্থা নেওয়া যায়, তাহলে আমার মনে হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঠিকঠাক হবে। পুলিশ যদি এলাকায় এলাকায় দিনে অন্তত চার বার টহল দিয়ে যায়, তাহলে আমার মনে হয় নিরাপত্তা আরও মজবুত হবে।” এলাকারই অন্য এক বাসিন্দা এ আর ভট্টাচার্য বলছেন, “এলাকায় নাইট গার্ডের ব্যবস্থা করতে হবে এবং পর্যাপ্ত সিসিটিভির ব্যবস্থা করতে হবে। ব্যক্তিগত স্তরে প্রত্যেককে নিজেদের বাড়ি নিরাপদে রাখতে হবে।”
অন্য এক স্থানীয় বাসিন্দা সুমিত গোস্বামীর মতে, “অপরাধ হবেই একটা দুটো। কিন্তু সে ক্ষেত্রে অপরাধীদের শনাক্তকরণের কাজটা পুলিশের জন্য অনেক সহজ হয়ে যাবে। যখন ছবিটা ধরা পড়বে, এখন এখন পুলিশের ক্রাইম ডেটা বেসেও মুখ শনাক্তকরণের প্রযুক্তি রয়েছে। সুতরাং, প্রযুক্তি এক্ষেত্রে একটি বড় ভূমিকা নেয় যাতে একজন নাগরিক হোক বা একজন পুলিশ – দুষ্কৃতীদের একটি কড়া বার্তা দেওয়া যাবে।”
আরও পড়ুন : কলকাতা মেট্রোয় বরাদ্দ ২ হাজার ৩১৬ কোটি! কোন প্রকল্পের জন্য কত টাকা?