AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Naihati Boro Maa: ‘ধর্ম যার যার, বড় মা সবার’, নৈহাটির স্টেশন রোডে যেন বিশ্বাসে মিলায় বস্তু…

Naihati Boro Maa: সোনা, রূপো, নানা-মণিমুক্তে সেজে ওঠেন নৈহাটির বড়মা। উচ্চতায় ২১ ফুট। এখানে দক্ষিণাকালীরূপেই পুজিতা হন মা। মায়ের এত গয়না যে সব সাজ সম্পূর্ণ করে উঠতেই সময় লেগে যায় ২৪ ঘণ্টার মতো

Naihati Boro Maa: ‘ধর্ম যার যার, বড় মা সবার’, নৈহাটির স্টেশন রোডে যেন বিশ্বাসে মিলায় বস্তু...
নৈহাটির বড় মাImage Credit: TV9 Bangla
| Edited By: | Updated on: Nov 13, 2023 | 3:08 PM
Share

নৈহাটি: কথায় বলে, ঈশ্বর না টানলে ভক্তরা কোনওভাবেই তাঁর কাছে পৌঁছাতে পারে না। সেই কথা কার্যত সত্যি হয় নৈহাটিতে। কালীপুজো উপলক্ষে সেখানে লাখ-লাখ ভক্তের সমাগম। সংখ্যাটা শুধু বলার জন্য না, সত্যিই কয়েক লক্ষ ভক্তের সমাগম নৈহাটির বড়মাকে দেখতে। দীপাবলির পুণ্য লগ্নে। নৈহাটি স্টেশন থেকে অদূরেই বড়মার মন্দির। স্টেশন চত্বর থেকেই শোনা যায় বড়মা জয়ধ্বনি। অশীতিপর থেকে কোলে সদ্যোজাত নিয়ে মা-বাবা লাখ ভক্তের ভিড়ে সামিল সবাই। সবাই যেন অক্লান্ত, আশা ঘণ্টার পর ঘণ্টার পর লাইনে দাঁড়ানোর পর একবার শুধু বড়মাকে দর্শনের।

এবছর ১০০ বছরে পা দিয়েছে নৈহাটির বড়মার পুজো। তাই ভিড় অন্যান্য বছরের থেকে একটু বেশিই। সেই ভিড় সামলে মায়ের কাছে পুজো দিতে হলে এক বেলা কেটে যায় নিমেষেই। লাইন আবার দু’রকমের, একটা যারা পুজো দিতে চান তাঁদের জন্য আরেকটা শুধুই দর্শনের। কিন্তু শুধু দর্শনও সময়সাপেক্ষ। যে রাস্তা ধরে দর্শনের জন্য এগিয়ে যাওয়া সে রাস্তায় ভিড় আবার যাঁরা দন্ডি কাটছেন তাঁদের ভিড়ে। গঙ্গা থেকে স্নান করে দণ্ডি কাটা শুরু। রাস্তা জুড়ে ভক্তরা ব্যস্ত দণ্ডি কাটায়। হাতে পড়ে ফুট তিনেক মতো রাস্তা দিয়ে দর্শনার্থীদের এগিয়ে যাওয়া। মানুষের ঠেলায় সে ভিড় কখনও এগোয়, কখনও পেছোয়। হিমশিম খাচ্ছে স্বেচ্ছাসেবকরাও। এলাকার যারা বাসিন্দা তাঁদের কথায়, এই কালীপুজোর সপ্তাহটায় তাঁদের নিজেদের বাড়ি ঢুকতেই কয়েক ঘণ্টা লেগে যায়। তবু সেই সব ভিড় ঠেলে যাঁরা বড়মার কাছে পৌঁছাতে পারেন তাঁরা কার্যতই ভাগ্যবান।

সোনা, রূপো, নানা-মণিমুক্তে সেজে ওঠেন নৈহাটির বড়মা। উচ্চতায় ২১ ফুট। এখানে দক্ষিণাকালীরূপেই পুজিতা হন মা। মায়ের এত গয়না যে সব সাজ সম্পূর্ণ করে উঠতেই সময় লেগে যায় ২৪ ঘণ্টার মতো। মুকুট থেকে শুরু করে মায়ের নরমুণ্ড এখানে রূপোর তৈরি। পায়ে অলঙ্কারের পাশাপাশি শোভা পাচ্ছে একাধিক বিছে। কোনওটা রূপোর তো কোনওটা সোনার। শোনা যায়, গয়নার অনেকাংশই ভক্তদের মানত করা। ডান হাতের এক হাতে দেওয়া বিশাল সাইজের দু’টি মিষ্টি। প্যান্ডেলের পিছন দিক সাজানো সারি সারি বেনারসী শাড়িতে। শোনা যায়, কালীপুজো উপলক্ষে বড়মার কাছে নিবেদন করা বেশিরভাগ শাড়িই পৌঁছে যায় দুঃস্থদের কাছে। ভক্তদের নিবেদন করা ফল-মূল মায়ের কাছে পুজোর পর যায় অনাথ আশ্রমে। নৈহাটির এই অরবিন্দ রোডে পরপর বেচা কালী, গাঁজা কালী সহ বেশ কয়েকটি কালীপুজো হয়। সে সব মূর্তিও বিশালাকার। কিন্তু সে সব মূর্তির থেকে উচ্চতায় বড় বড়মা আর তাই এহেন নাম।

ভক্তরা বিশ্বাস করেন বড়মা সকলের মনোষ্কামনা পূর্ণ করেন। তা সে মায়ের কাছে দণ্ডি কেটে পুজো নিবেদন করলেও আবার দর্শন সেরে নিজের মনোবাঞ্ছা জানালেও। আর সেই বিশ্বাসের জোরেই বড়মার কাছে ছুটে যায় ভক্তরা। এ বছর ১৬ নভেম্বর বড়মার বিসর্জন। তার আগে নৈহাটির অরবিন্দ রোডে শুধুই কালো মাথার ভিড়, বড়মাকে একবার দেখার সাধে। দর্শন পেলে আপনা থেকেই ভেতর থেকে বেরিয়ে আসে ‘জয় বড়মার জয়’। অন্তরের বিশ্বাস তখন প্রতিধ্বনিত হয় নৈহাটির আকাশে-বাতাসে।