বারাসত: একসময় রাজ্যের বর্তমান শাসকদল তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা ছিলেন তিনি। ২০২০ সালের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি ঘাসফুল শিবির ছাড়েন। যোগ দেন বিজেপিতে। কিন্তু, কেন তৃণমূল ছেড়েছিলেন তিনি? রবিবার উত্তর ২৪ পরগনার বারাসতে হিন্দু সম্মেলনে তার ব্যাখ্যা দিলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
এদিন তিনি বলেন, “২০২০ সালের ডিসেম্বরের এক তারিখ পর্যন্ত আমাকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছিল তৃণমূল। কিন্তু, আমি ওই দলে থাকতে চাইনি। তার অনেকগুলো কারণ ছিল। তার মধ্যে অন্যতম হল তৃণমূলের তুষ্টিকরণ, তোষণের রাজনীতি।” আর তার বিরোধিতা করেই তিনি তৃণমূল ছাড়েন বলে জানালেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা।
বারাসতে হিন্দু সম্মেলনে বাংলাদেশে হিন্দু-সহ সংখ্যালঘুদের উপর হামলার তীব্র নিন্দা করেন শুভেন্দু। বলেন, “বাংলাদেশে আক্রান্ত, নিপীড়িত হিন্দুদের পাশে সবার দাঁড়ানো উচিত।” একইসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, এখন হিন্দুদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। এরপরই রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করতে গিয়ে তিনি বলেন, “বর্তমান শাসকদলে অনেক গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় ছিলাম। প্রশাসনিক ও দলগতভাবে। তারা আমায় তাড়ায়নি। তারা আমাকে ধরে রাখার চেষ্টা করেছে শেষদিন পর্যন্ত। ২০২০ সালের ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। আমি ওই দলকে পরিত্যাগ করেছি, তার অনেকগুলি কারণের মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ ছিল, তৃণমূলের তুষ্টিকরণ, তোষণের রাজনীতি।” তার বিরোধিতা করতেই তৃণমূল ছাড়েন বলে জানান।
এদিন উত্তর প্রদেশের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, “মুলায়ম সিং যাদব, অখিলেশ যাদবের সময়ে ২০১২ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত উত্তর প্রদেশে পাঁচ বছরে ৩৭৫টি সাম্প্রদায়িক হিংসা হয়েছে। আর এখন সুশাসন কাকে বলে, সুরক্ষা কাকে বলে, উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ দেখিয়ে দিয়েছেন।”
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে তৃণমূল সুপ্রিমোকে হারানোর কথা তুলে ধরে হিন্দুদের এক হওয়ার বার্তা দিলেন শুভেন্দু। বলেন, “নন্দীগ্রামে একশো হিন্দুর মধ্যে ৬৪ জনকে একজোট করতে পেরেছিলাম। তাতেই ১৯৫৬ ভোটে জিতি। আর চব্বিশের লোকসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামে একশোর মধ্যে ৭২ জন হিন্দু একজোট হয়েছিলেন। তাতে বিজেপি প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের লিডও বাড়ে।” রাজ্যে পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়ে তাঁর বক্তব্য, “সমাধান একটাই। হিন্দুদের এক হতে হবে।”