Durga Puja: ব্রতী ও ঢাকি বন্দিরা, আলপনা দিচ্ছেন মহিলা আবাসিকরা, আসানসোল জেলে প্রথমবার দুর্গাপুজোয় পুরোহিত কারারক্ষী
Durga Puja in Asansol Jail: সংশোধনাগারে প্রথমবার দুর্গাপুজোর আয়োজন নিয়ে জেল সুপার চান্দ্রেয়ী হাইত বলেন, "জেলে থাকা আবাসিকরা আবেদন করেছিলেন ছোট করে হলেও পুজোর ব্যবস্থা যদি করা যায়। সেই মতো রাজ্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করি। কারাগার দফতর থেকে অনুমতি পাই।

আসানসোল: কেউ বিচারাধীন বন্দি। কেউ সাজাপ্রাপ্ত। সংশোধনাগারে দিন কাটছে। তাঁদের জন্য এই প্রথম দুর্গাপুজোর আয়োজন করা হল আসানসোলের বিশেষ সংশোধনাগারে। এতে জেলের আবাসিকরা অত্যন্ত খুশি। কম সময়ের মধ্যে সংশোধনাগারের বাইরে এবং ভিতরে সাজিয়ে তোলা হয়েছে আলো দিয়ে। এই পুজোয় পুরোহিত কারারক্ষী। ব্রতী ও ঢাকির কাজ করছেন বন্দিরা। আলপনা দিয়েছেন মহিলা আবাসিকরা। প্রদীপও তৈরি করেছেন তাঁরা।
সংশোধনাগারে প্রথমবার দুর্গাপুজোর আয়োজন নিয়ে জেল সুপার চান্দ্রেয়ী হাইত বলেন, “জেলে থাকা আবাসিকরা আবেদন করেছিলেন ছোট করে হলেও পুজোর ব্যবস্থা যদি করা যায়। সেই মতো রাজ্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করি। কারাগার দফতর থেকে অনুমতি পাই। সমস্ত নিয়ম মেনে এক চালের সাবেকি প্রতিমা দিয়ে পুজো হচ্ছে। মহিলাদের জন্য সরকারিভাবেই নতুন শাড়ি দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে। মূল পুরোহিত কারারক্ষী বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। পুরোহিতের সঙ্গে ব্রতী চারজনই জেলের আবাসিক।” তিনি আরও জানান, “মহিলা বন্দিরা আলপনা দিয়েছেন। ১০৮ প্রদীপ তাঁরাই গড়েছেন। ওঁরা অত্যন্ত খুশি। বাইরে থেকে ঢাক আনা হয়েছে। ঢাক বাজাচ্ছেন এক্সপার্ট আবাসিকরা।”
সপ্তমীর নবপত্রিকা নিয়ে আসা থেকে শুরু করে পুজো হয়েছে নিষ্ঠা ভরে। অষ্টমীর পূজার প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আবাসিকদের পুষ্পাঞ্জলির ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে একসঙ্গে নয়। ভাগ করে করে পুষ্পাঞ্জলি দেবেন। দশমীর দিন হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আবাসিকরা সংগীত, নৃত্য, আবৃত্তিতে অংশ নেবেন। হবে মহিলাদের সিঁদুর খেলাও।
এই মুহূর্তে এই সংশোধনাগারে বন্দির সংখ্যা ৪০০-র কিছু বেশি। তার মধ্যে প্রায় ৩৫ জন মহিলা ছাড়াও আছেন সাজাপ্রাপ্ত ডজন খানেক বন্দি। পুজোর সময় প্রত্যেক দিন খাবারের বিশেষ মেনু থাকছে। সপ্তমীতে মাছের কালিয়া-ভাত, অষ্টমীতে খিচুড়ি-লাভড়া, নবমীতে চিকেন-ভাত এবং দশমীতে মটন। এছাড়াও নিরামিষ যাঁরা খান, তাঁদের জন্য পনির-সহ নিরামিষ তরকারি। প্রতিদিন টিফিনের ক্ষেত্রেও একটু আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে। ঠাকুরের চিড়ে দই, নাড়ু থাকবেই।
জেল সুপার বলেন, “আমরা কর্মীরা সবাই মিলে ওঁদের সঙ্গে একসঙ্গে পুজোর কটা দিন আনন্দ করব। জেলের ভেতরে থেকেও যাতে ওঁরা বুঝতে পারেন উৎসব সবার জন্য।” এই পুজোর পুরোহিত কারারক্ষী বিদ্যুৎ চক্রবর্তী বলেন, “অনেকে মনস্কামনা করছেন। তাঁরা বলছেন, আমাদের জন্য একটু প্রার্থনা করুন। মাকে বলুন যেন আমরাও দ্রুত মুক্তি পাই।” আর বন্দিরা যে খুশি, তা তাঁদের চোখমুখেই ফুটে উঠছে।
