পশ্চিম মেদিনীপুর: বঙ্গের দুর্গাপুজো মানেই তা সকলের। উৎসব এ বাংলায় সবার। সেখানে নেই কোনও ভেদাভেদ। বিসর্জনের পর পুজো প্যান্ডেল থেকে খোলা হচ্ছে বাঁশ। ডেকরেটার্স থেকে খুলে নেওয়া হচ্ছে আলো। বিষাদের সুর তাঁদের মনেও। কয়েকটা দিন পাড়ার মণ্ডপে মণ্ডপে পুজোর কাজে তাঁরাও যে হাত মিলিয়েছেন। শুধু কী তাই? একের পর এক প্রতিমার বিসর্জনে কাঁধ বাড়িয়েছিলেন তাঁরাও। শহরের ১৭০টির বেশি প্রতিমা নিরঞ্জন দিয়েছেন মুসলিম যুবকেরা। তাই এই অস্থির সময়ে তাঁদের বিশেষ ভাবে সংবর্ধিত করল মেদিনীপুর পুরসভা। বাংলাদেশ ঘটনায় যখন তোলপাড় শুরু হয়েছে এপার বাংলাতেও, তখন এই যুবকেরা বলছেন, ‘উৎসব তো সবার’।
মুসলিম যুবকদের হাতেই প্রতিমা নিরঞ্জন হয়েছেন। কয়েক দিন বাপের বাড়ি কাটিয়ে ঊমা ফিরে গিয়েছেন কৈলাসে। আর যে বিশেষ সম্প্রদায়ের যুবকদের হাতে বিসর্জন হয়েছে মূর্তির, তাঁদের সবাইকে সংবর্ধনার মধ্য দিয়েই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে চাইল মেদিনীপুর পুরসভা ।
সোমবার মেদিনীপুর শহরের একদল মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে বিশেষ সংবর্ধনা দেওয়ার আয়োজন করে পুরসভা। যাঁরা কাজ করেছেন প্রতিমা নিরঞ্জনের। মেদিনীপুর শহরের গান্ধীঘাটে গত তিনদিন ধরে হয়েছে প্রতিমা বিসর্জন। সেখানে ১৭০টির-ও বেশি প্রতিমা নিরঞ্জন যাঁদের সাহায্যে হয়েছে, তাঁদের বেশির ভাগেই মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। আর তাই মেদিনীপুর পুরসভা সেই সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায়ের যুবককে বিশেষ ভাবে সংবর্ধিত করল এদিন। যাঁরা গত তিনদিন কঠোর পরিশ্রমের করে মেদিনীপুর শহরের একের পর এক প্রতিমা নিরঞ্জনের কাজ করেছেন। পাশাপাশি সেই প্রতিমার কাঠামো আবার পৌঁছে দিয়েছেন কারও বাড়িতে। দূষণ যাতে না ঘটে, নদীঘাট-ও পরিষ্কার করেছেন তাঁরা নিজের হাতেই। আর সেই সমস্ত কাজ প্রায় ৭০ জন যুবক করেছেন।
আরও পড়ুন: Malda: চুরির অপবাদে শিক্ষককে বেধড়ক মার, তৃণমূল কাউন্সিলর লেলিয়ে দিলেন পোষা কুকুর!
তাই তাঁদের সম্মান জানিয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা দিতে চাইলেন পুর প্রশাসক। তাঁদের মাথায় যিনি ছিলেন তিনিও একজন মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষ। এদিন পৌরসভার পক্ষ থেকে যুবকদের উত্তরীয় দিয়ে বরণ করে নেন পুরসভার পুরপ্রশাসক সৌমেন খান। সৌমেন খানের কথায়, “মুখ্যমন্ত্রীর যে বার্তা ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার’ সেই বার্তাকে সামনে রেখেই আজ এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। আর প্রতিমা নিরঞ্জনের কাজ যারা বংশপরম্পরায় করে আসছে সেই সমস্ত মুসলিম যুবকরাও আজ আনন্দিত এমন সম্মান পেয়ে।” পুরপ্রশাসন বলছে এটাই তো বাংলার পরম্পরা। তবে এই অস্থির সময়ে সমাজকে এমন বার্তা দেওয়াও জরুরি ছিল।
আরও পড়ুন: Khardah: ৪৪ বছর ধরে শাসক দলের প্রার্থী ‘বহিরাগত’! সাংগঠনিক দুর্বলতা, নাকি অন্য কিছু?
আরও পড়ুন: Crime: বউমার ‘অবৈধ সম্পর্ক’ না মানায় শ্বশুরের রহস্যমৃত্যু, আঙুল তৃণমূল নেতাদের দিকে!