রাজ্যের লোকসভা ভোটের প্রচারে বারংবার এসেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ তিন জেলায় চার জাগয়ায় সভা রয়েছে তাঁর। ভাটপাড়া, চুঁচুড়া, পুরশুড়া ও সাঁকরাইলে সভা করবেন তিনি। এ দিন রাজভবন থেকে প্রথমে সোজা সভা করেন ভাটপাড়ায়।
সন্দেশখালিতে কী হচ্ছে পুরো দেশ জানে। এখানকার অভিযুক্তদের প্রথমে তৃণমূল বাঁচালো। এখন ওরা নতুন খেলা খেলছে। ওইখানকার গুন্ডারা মহিলাদের ভয় দেখাচ্ছে। কারণ অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। ওর ঘর থেকে বোমা, বন্দুক উদ্ধার হচ্ছে। কিন্তু ভোটব্যাঙ্ককে খুশি করার জন্য তৃণমূল চাইছে ক্লিনচিট যেন পেয়ে যায়।
কয়েক বছর আগে CAG-র রিপোর্ট এসেছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, তৃণমূল সরকার ২ লক্ষ ৩০ হাজার কোটির কোনও হিসাব দিতে পারেনি। এই পয়সা কিসে-কোথায় খরচ হয়েছে তার কোনও হিসাব নেই। এটা দুর্নীতি। এই দল কতবড় দুর্নীতিবাজ তা বোঝা যায় শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি দেখে। কীভাবে শিক্ষকদের নিয়োগের জন্য রেড কার্ড বানিয়েছিল রাজ্য সরকার। বাজারে বিক্রিও হয়েছিল। এখানে টাকা নিয়ে পদ বিক্রি করা হয়েছে। ভুলভাল ইন্টারভিউ নেওয়া হয়েছে। এই হাল বানিয়েছে তৃণমূল। মোদী বাংলায় হওয়া এই লুঠের পাই-পাই হিসাব নেবে। নেতাদের ঘর থেকে যে নোটের পাহাড় উদ্ধার হয়েছে। তাদের কাউকে ছাড়ব না। মোদী যতদিন থাকবে কোনও ভ্রষ্টাচারী থাকবে না। আর এই টাকা দুঃস্থরা কীভাবে পাবে সেই আইনও মোদী ঠিক করে ফেলেছে।
ব্যারাকপুর পাট শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এখানে অন্যান্য শিল্পও রয়েছে। কিন্তু আজ পাট শিল্প ধুঁকছে। কিন্তু আমরা এর হাল ধরেছি। আমরাই সবজি-চিনি প্লাস্টিকের বদলে পাটের ব্যাগে নিয়ে যাওয়ার নিয়ম করেছি। যাতে সকলের সুবিধা হয়। কিন্তু এখানে তৃণমূল মিথ্যা বলে। এদের মতো দল ভারতের ইতিহাসে খুব কম রয়েছে। এদের বিরুদ্ধে জনতাই বলে, চোর ধরো জেলে ভরো। এই কথা অন্য দল বলে না। এখানকার জনগণ বলে।
আমি বাংলায় পাঁচ গ্যারান্টি দিচ্ছি। যত দিন মোদী আছে ততদিন ধর্মের ভিত্তিতে রক্ষণ দেওয়া যাবে না, এসসি, ওবিসিদের রক্ষণ কেউ ছিনিয়ে নিতে পারবে না, রাম নবমী পালন করতে কেউবাধা দিতে পারবে না, রাম মন্দির নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ কেউ পাল্টাতে পারবে না, সিএএ আইন কেউ রদ করতে পারনে না। আর মোদীর গ্যারান্টি মানে পুরণ হওয়ার গ্যারান্টি।
বাংলার ভাই-বোন আপনাদের সতর্ক হতে হবে। ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য তৃণমূল সিএএ-কে ভিলেন করে দিয়েছে। এই আইন পীড়িতকে নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। এতে কারোর নাগরিকত্ব যাবে না। কিন্তু কংগ্রেস-তৃণমূলের মতো দল মিথ্যে কথা বলছে এটা নিয়ে। এরা মতুয়াদের, নমশুদ্রদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিরোধী। এরা সিএএ আইন শেষ করতে চাইছে।
বাংলায় তৃণমূল সরকার রামের নাম উচ্চারণ করতে দেয় না। এখানে রাম নবমী পালন করতে দেয় না। কংগ্রেস আর বামপন্থীরাও রাম নবমীর বিরুদ্ধে মোর্চা তৈরি করেছিল। আপনারাই বলুন, এদের হাতে দেশ চালানোর ভার দেওয়া যায়? তৃণমূল আর ইন্ডিয়া জোট তুষ্টিকরণের রাজনীতি করে। এরা বলে মোদীর বিরুদ্ধে ভোট জিহাদ করো। তুষ্টিকরণের জেরে ইন্ডিয়া জোট তপশিলি জাতি-উপজাতিদের সংরক্ষরণও চাইছে না।এরা বলে রক্ষণ এখন মুসলমানদের দেওয়া হয়। পুরো রক্ষণ মুসলিমদের দেওয়া হোক।
একটা সময় ছিল যখন বাংলাদেশের অর্থ ব্যবস্থাকে মজবুত করার জন্য যোগদান করা হত। কিন্তু তৃণমূল পুরো ঘোটালা করে দিয়েছে। এক সময় ছিল যখন বাংলায় বড় বড় বিজ্ঞানীর নাম শোনা যেত। এখন জায়গায়-জায়গায় বোমা তৈরির হোম ইন্ডাস্ট্রি তৈরি হয়ে গিয়েছে। একটা সময় বাংলা অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। আজ তৃণমূলের সমর্থনে এরা বাংলায় বেড়ে উঠেছে।
এখানকার বন্ধ কারখানাগুলিকে ফের চালু করা হয়েছে। আগামী ৫ বছরে পূর্ব ভারতে আরও উন্নতি হবে। আর এই সব করার জন্য আপনাদের আর্শীবাদ আমার প্রয়োজন। বাংলার এই মাটি ব্যারাকপুরের মাটি ইতিহাস তৈরি করার মাটি। কিন্তু তৃণমূল এর হাল বেহাল করেছে।
স্বাধীনতার পর থেকে অনেক বছর কংগ্রেসের পরিবার দেশ চালিয়েছে। কিন্তু পূর্ব ভারতের অধিবাসীদের কোনও উন্নতি হয়নি। বাংলা, বিহার বা আর যে কোনও রাজ্যই হোক না কেন সকলের অবস্থা এক। এই রাজ্যগুলিতে যথেষ্ঠ পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে। এরপরও কংগ্রেস কোনও উন্নতি করতে পারেনি। তাই ২০১৪ সালে মোদীকে আপনারা সুযোগ দিয়েছেন দেশের সেবা করার। আর আমি ঠিক করেছি পূর্ব ভারতকে বিকশিত ভারতের গ্রোথ ইঞ্জিন বানাবো। আজ রেল, রোড, এয়ারপোর্ট, জলপথের উন্নতি হয়েছে পূর্ব ভারতে।
আপনাদের দেখে মনে হচ্ছে কিছু অন্যরকম হতে চলেছে। ২০১৯-এর থেকেও বড় সফলতা পাবে বিজেপি। পুরো দেশ বলছে বাংলা আরও জোরে বলছে। আর পুরো বাংলা বলছে, “আবার একবার মোদী সরকার”