Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Kali Puja 2021: পুজো তো দূরস্ত, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবী কালীর ছবি দেখলেও মুছে দেওয়া হয় এই গ্রামে!

Purba Bardhaman: পঞ্জিকাতেও লাল কালি দিয়ে মা কালীর নাম কেটে দেওয়া হয়। শুনলে অবাক হতে হয়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও যদি কখনো কেউ কালীর ছবি পাঠান সঙ্গে সঙ্গে তা ডিলিট করে দেওয়া হয় সিধু মা রুষ্ট হবেন সেই ভয়ে।

Kali Puja 2021: পুজো তো দূরস্ত, সোশ্যাল মিডিয়ায় দেবী কালীর ছবি দেখলেও মুছে দেওয়া হয় এই গ্রামে!
কোলসুরা গ্রামের সেই সিধুমা, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 30, 2021 | 11:11 AM

পূর্ব বর্ধমান:  বর্ধমানের জামালপুর ব্লকের বর্ধিষ্ণু গ্রাম কোলসরা। বর্ধমানের দিকে যেতে ২নং জাতীয় সড়কের জৌগ্রাম মোড় থেকে ডানদিকে মোটামুটি তিন কিলোমিটার গেলেই কোলসরা গ্রাম। কিন্তু, এই গ্রামে একজনই নিষিদ্ধ। তিনি দেবী কালী। পুজো তো দুরস্ত, কালীর নামও এই গ্রামে মুখে আনেন না কেউ।

বঙ্গদেশের অন্যান্য নিরীহ গ্রামের মতনই এই কোলসরা গ্রাম। গ্রামের মেঠো পথ ধরে একটু এগোতেই জাগ্রতা দেবী সিদ্ধেশ্বরী অর্থাৎ সিধুমায়ের মন্দির। এই গ্রামের এক এবং একমাত্র আরাধ্য দেবী। এই সিধুমার রূপও দেবী কালীরই মতো। খড়্গহস্তা, অসুরের মুণ্ডহাতে, মুণ্ডমালিনী দেবী। এই দেবীর পুজো মূলত ঘোষাল বাড়ির কালীপুজো নামেই পরিচিত। তবে সিধুমায়ের জন্যই এই গ্রামে ব্রাত্য অন্যান্য দেবীরা। অন্যান্য দেবদেবীর জন্য গ্রামবাসীদের শ্রদ্ধা থাকলেও অন্য কোনও দেবীর বিশেষ করে কালীর পুজো এইগ্রামে একেবারে নিষিদ্ধ। গ্রামে প্রবেশের পথেই চোখে পড়বে গ্রামবাসীদের লাগানো বোর্ড। যাতে লেখা, “সিদ্ধেশ্বরী মাতার আশীর্বাদ পুষ্ট, শের শাহের স্মৃতিধন্য, সুপ্রাচীন কোলসরা গ্রামে আপনাকে স্বাগত জানাই।”

গ্রামবাসীদের কাছে এই ঘোষাল পরিবারের এই দেবী ‘সিধু মা’ নামেই আদৃতা হয়ে আসছেন। কার্তিক ও চৈত্র মাসে মহা আড়ম্বরে এই দেবীর পুজো হয় গ্রামে। গ্রামবাসীরা মনে করেন যদি অন্য কোনো দেবী পূজায় সিধু মা রুষ্ট হতে পারেন। সেই ভয়ে পূজিতা হয় না অন্য কোনো দেবী। গ্রামের কোনো বাড়িতেই ছবি, ক্যালেন্ডারে কিংবা মূর্তিতে কালীর ছবি কেউ রাখেন না। এমনকি কালীরূপী কোনো বহুরূপীরও এই গ্রামে প্রবেশ নিষেধ। কালীপুজোর তো বালাই নেই। এমনকি পঞ্জিকাতেও লাল কালি দিয়ে মা কালীর নাম কেটে দেওয়া হয়। শুনলে অবাক হতে হয়, সোশ্যাল মিডিয়াতেও যদি কখনো কেউ কালীর ছবি পাঠান সঙ্গে সঙ্গে তা ডিলিট করে দেওয়া হয় সিধু মা রুষ্ট হবেন সেই ভয়ে। ৫ শতাব্দী ধরে এই প্রথা চলে আসছে কোলসরায়। গ্রামবাসীদের প্রত্যেকেরই বক্তব্য তাঁরা শক্তিপূজার বিরোধী নন কিন্তু ‘সিধুমা’-ই একমাত্র স্বীকৃত দেবী।

ঘোষাল পরিবারের বর্তমান বংশধরেরা জানিয়েছেন, ১৫৪০ খ্রীষ্টাব্দে দিগম্বর ঘোষাল সম্রাট শের শাহের নির্দেশে গ্রাণ্ড ট্রাঙ্ক রোড বা বর্তমানের জি টি রোড তৈরীর কাজ দেখাশোনা করতে আসেন বাংলায়। কংস নদীর পথে তিনি একদিন কোলসরা গ্রামে রাত কাটান। সেইদিনই দেবী সিদ্ধেশ্বরী তাঁকে স্বপ্নাদেশ দিয়ে প্রতিষ্ঠা করার নির্দেশ দেন। পরের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে দিগম্বর ঘোষাল তাঁর স্বপ্নাদেশের কথা জানান সম্রাট শের শাহকে। শের শাহের দান করা ৫০০ বিঘায় ৪৭৮ বছর আগে এই কালী মন্দির প্রতিষ্ঠা হয়। বেশ কিছুকাল আগে শের শাহ প্রদত্ত ওই তাম্রফলকটি চুরি হয়ে যায়। কিন্তু আজও তা উদ্ধার হয়নি।

আরও পড়ুন: Kali Puja 2021: ২৫০ বছর ধরে আজও স্বমহিমায় পুজিত সুন্দরবনের অরণ্য কালী!