Potato Farmers Suicide: ফের রাজ্যে আলু চাষির রহস্যমৃত্যু, আত্মহত্যার তত্ত্ব খাঁড়া করছে পরিবার

Potato Farming: সেক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের দাবি, মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন গণেশ। অকাল বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, আলু-ধানের।

Potato Farmers Suicide: ফের রাজ্যে আলু চাষির রহস্যমৃত্যু, আত্মহত্যার তত্ত্ব খাঁড়া করছে পরিবার
যুবকের রহস্যমৃত্যু (ফাইল চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Dec 18, 2021 | 2:51 PM

কালনা: আবারও আলু চাষির রহস্যমৃত্যু। কালনার পর এবার রায়নায় আলুচাষির দেহ উদ্ধার হয়। শস্যগোলা পূর্ব বর্ধমানে পর পর দু’দিনে দুই চাষির মৃত্যুর ঘটনায় শোরগোল পড়েছে জেলা জুড়ে। শনিবার সকালে গণেশ নারায়ণ ঘোষের (৬৩) দেহ উদ্ধার হয়। বাড়ি রায়নার বনতীর গ্রামে। গণেশ আত্মঘাতী হয়েছেন বলেই দাবি পরিবারের।

পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেড়িয়ে আর ফেরেননি গণেশ। শনিবার সকালে এলাকার লোকজন ক্ষেতের পাশে আমগাছে তাঁকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলতে দেখেন। মৃতের আত্মীয়রা জানান, গনেশের তিন বিঘে জমি রয়েছে। যার মধ্যে দুই বিঘে জমিতে তিনি ধান চাষ করেছিলেন। বাকি এক বিঘে জমিতে করেছিলেন আলু চাষ।

জাওয়াদের বিপর্যয়ে সব তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পাকা ধানে ক্ষতির পাশাপাশি আলুর বীজ জমিতে পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। গণেশের দুই মেয়ের বিয়ে হয়ে গেছে। প্রতিবন্ধী স্ত্রীকে নিয়ে রায়না থানার বনতির গ্রামে থাকতেন তিনি। চাষের জন্য বেশ কিছু টাকা দেনা হয়ে গিয়েছিল বলে আত্মীয় ও প্রতিবেশীরা জানান। নিম্নচাপের বৃষ্টিতে ধান ও আলুর প্রায় সবটাই শেষ হয়ে যাওয়ায় মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন তিনি।

সেক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের দাবি, মানসিক অবসাদ থেকেই আত্মঘাতী হয়েছেন গণেশ। অকাল বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, আলু-ধানের। নতুন করে আলু বুনতে গেলেও, এই রবি মরসুমে হাতে আর বেশি সময় নেই। কিন্তু আলু বীজের দাম বেড়ে যাওয়ায়, সেখানেও কৃষকের আরেক সমস্যা। পাওয়া যাচ্ছে না সারও। চলছে কালোবাজারি, লাগছে বেশি দাম। এরকম একটা পরিস্থিতিতে কৃষকের ক্ষতিপূরণের দাবি তুলছে বিজেপি। তাদের আরও দাবি, বিনামূল্যে আলুবীজ দিতে হবে। বন্ধ করতে হবে সারের কালোবাজারি। রাজ্য সরকার আবার বলছে, বারবার বলা সত্ত্বেও কেন্দ্র, সারের জোগানের ব্যবস্থা ঠিকমতো করছে না। আসলে সমস্যা এজন্যই।

কৃষকের ক্ষতিপূরণের প্রসঙ্গে আবার কোনও কোনও মহল থেকে বলা হচ্ছে ফসল বিমার কথা। এই পরিস্থিতিতে বাংলার কৃষকেরা বলছেন, মুখে দরদ দেখালেও, আসলে কোনও সরকারই তাদের পাশে নেই। আলু চাষিদের বেশিরভাগই ধারদেনা করে, সমবায় সমিতি থেকে ঋণ নিয়ে আলুর বীজ বপণ করেছিলেন। এদিকে এবার ডিসেম্বরেও যেভাবে বৃষ্টি হল তাতে ক্ষেতের পর ক্ষেতের ফসল ভাসিয়েছে। মাঠ থেকে জল নামতেই এবার দেখা যাচ্ছে বপণ করা সেই আলু বীজ সবই পচে গিয়েছে। একেবারে মাঠে মারা যাওয়া!

এখনও আলুর জমিতে কাদা মাটি। আলু চাষিদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কী করবেন তাঁরা? কী ভাবে অন্ন তুলে দেবেন পরিবারের মুখে। এলাকার আলু চাষিদের দাবি, সরকার তাঁদের আলু বীজ ও রাসায়নিক সার দিয়ে সহযোগিতা করুক। তাহলে তাঁরা নতুন করে আলু চাষ করতে পারবেন।

তেমনটা না হলে চাপ বাড়বে তাঁদের। কোনওরকমে দু’ কাঠা থেকে পাঁচ কাঠা জমিতে বীজ বুনে বসে থাকতে হবে। তাতে কোনওমতে নুন ভাতটুকু জুটলেও জুটতে পারে। কারণ, তাঁদের পক্ষে এর থেকে বেশী আর চাষ করার ক্ষমতা নেই। একেই চড়া দামে আলু বীজের। সারের দামও একেবারে চড়া।

আরও পড়ুন: Murshidabad TMC Clash: বিধায়ক পৌর প্রশাসককে বললেন ‘সিপিএমের হয়ে কাজ করে ও’, প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল