নন্দীগ্রাম: ২০০৬ সালের নভেম্বর ডিসেম্বর। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নন্দীগ্রামের নাম তখনও কেউ খুব একটা জাননেত না। বাংলার আর পাঁচটা অপরিচিত গ্রামের মতই ছিল হলদি নদীর তিরের নন্দীগ্রাম। রাজ্যে তখন শিল্পের জোয়ার আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে বাম সরকার। হলদি নদির জলেও যেন এল শিল্পের জোয়ার। কয়েক মাসের মধ্যে গোটা রাজ্য এমন কী গোটা দেশেও খবরের হেডলাইনে উঠে আসে নন্দীগ্রাম। তবে শিল্পের জন্য নয়। এক অন্য কারণে। রাজ্যের রাজনৈতিক ইতিহাসের এক নতুন চ্যাপ্টর। নন্দীগ্রাম।
২০০৭ সালের নন্দীগ্রাম থেকে কাট টু ২০২৪ সালের নন্দীগ্রাম। মাঝের সময়ে অনেক অনেক কিছু বদলে গেছে। নন্দ্রীগ্রাম কী বদলেছে? ২০২৪ সালের আগেই এই প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা শুরু হয়ে গিয়েছিল ২০২১ সালে। রাজ্যে বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে ওঠার আগে একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা ঘটে গিয়েছিল। রাজ্যের অত্যন্ত প্রভাবশালী মন্ত্রী ও নন্দ্রীগ্রামের বিধায়ক শুভেন্দু অধিকারীর ফুল বদল। বঙ্গ রাজনীতি তখন তপ্ত। নন্দীগ্রামে দাঁড়িয়েই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও চ্যালেঞ্জটা ছুঁড়ে দিলেন।
২০১১ থেকে ২০২০-র শেষ পর্যন্ত নন্দীগ্রামের রাজনীতি বইছিল এক খাতে। শুভেন্দু অধিকারীর দল বদল পর্ব থেকে শুরু হল নতুন একটা অধ্যায়। নন্দীগ্রাম হয়ে উঠল প্রেস্টিজ ফাইট। শহীদদের অধিকার নিয়েও লড়াই। ২০২১ সালের নির্বাচন ও তার পরবর্তী সময়ে নন্দীগ্রামের রাজনীতি ভাগ হয়ে গেছে আড়াআড়ি ভাবে। একদিকে শুভেন্দু অধিকারী। অন্যদিকে তৃণমূল কংগ্রেস। সিপিএম বনাম তৃণমূলের লড়াই বদলে গেছে তৃণমূল বনাম বিজেপির লড়াইয়ে। ২০০৭ থেকে ২০২০ পর্যন্ত একরকম। ২০২০ থেকে আবার নতুন করে লেখা হচ্ছে নন্দীগ্রামের রাজনৈতিক ইতিহাস। কিন্তু যেটা বদলায়নি, সেটা হল, প্রেস্টিজ ফাইটের তকমা।
নন্দীগ্রাম। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার তমলুক লোকসভা আসনের অন্তর্গত একটা বিধানসভা কেন্দ্র। তমলুক লোকসভা আসনে আরও ৬টি বিধানসভা কেন্দ্র আছে। কিন্তু সবার নজর নন্দীগ্রামে। রাত পোহালেই এই কেন্দ্র ভোট। তার আগে একটা খুনের ঘটনা নিয়ে আবার সরগরম রাজ্য রাজনীতির হটস্পট নন্দীগ্রাম। বিজেপি কর্মীর মা কে কুপিয়ে খুনের অভিযোগে বুধবার রাত থেকে দফায় দফায় তপ্ত হয়ে উঠেছে নন্দীগ্রামের মাটি। অভিযোগ পাল্টা অভিযোগে সরগরম নন্দীগ্রাম।