Durga Puja: খাল পেরিয়ে এই বাড়িতে এসেছিলেন ষোড়শী দুর্গা, আজও দেশলাই দিয়ে যজ্ঞের আগুন ধরানো হয় না কিশোরনগরে
Durga Puja: প্রতিপদ থেকে শুরু হয়ে যায় রাজবাড়ীর পুজো। অষ্টসখীর ঘটোত্তোলন হয়, কূল-দেবতার মন্দিরে সারা বছর পূজিতা হন দুর্গা। দশভূজা, অষ্টভূজা ও চতুর্ভূজা রূপে পুজো করা হয়।
কাঁথি: পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ঐতিহ্যবাহী পুজোগুলোর মধ্যে কাঁথির কিশোরনগর রাজবাড়ীর পূজা অন্যতম। এখানে দেবী পূজিত হন দশভূজা, অষ্টভূজা ও চতুর্ভূজা রূপে। ৩৫০ বছরের বেশি পুরনো এই পুজো উপলক্ষে প্রত্যেকবার বাড়ির প্রাঙ্গনে বসে মেলা। আর মেলার ঐতিহ্য হল আখ।
লোকমুখে শোনা যায়, কোনও এক নিশীথে খাল পেরিয়ে মায়ের আগমন হয়েছিল এই কিশোরনগর গড় রাজবাড়ীতে। তাঁর ইচ্ছেতেই নাকি চণ্ডীমঙ্গল কাব্য আজও প্রাণ পায় ধীবরদের কন্ঠে। পরিবারের সদস্যরা বিশ্বাস করেন, মা চণ্ডীর ইচ্ছেতেই পুজোর ঘট বসে পশ্চিমমুখী হয়ে। কিশোরনগরের রাজবাড়ির দেওয়ালে কান পাতলে শোনা যায় সে সব কাহিনি।
কথিত আছে মা দুর্গা, মশাগাঁ খাল পেরিয়ে রাজবাড়ীতে আসতেন। একবার পুজোর সময় রাতে খালে মাছ ধরতে গিয়ে নরোত্তম নামের এক ধীবর বলেছিলেন তিনি মা দুর্গার ষোড়শী রূপ দেখতে পেয়েছেন। নৌকায় মশাগাঁ খাল পার করিয়ে দেওয়ার জন্য বলেছিলেন ওই কিশোরী। আজও মুখে মুখে ফেরে সেই গল্প। শোনা যায়, ওই ধীবর নাকি খাল পার করানোর জন্য টাকা চেয়েছিলেন। জানতে চেয়েছিলেন, এত রাতে কোথায় যাবেন? সেই রমণী ওই নরোত্তমকে পরামর্শ দেন রাজবাড়িতে চণ্ডীমঙ্গল গান গাইতে বলেন। তিনি জানেন না বলায়, তাঁর জিভে চণ্ডীমঙ্গল লিখে দিয়েছিলেন রমণী। সেই থেকে এই বাড়ির রীতি হল, জেলেরা চণ্ডীমঙ্গল গান পুজোর সময়।
এই খবরটিও পড়ুন
প্রতিপদ থেকে শুরু হয়ে যায় রাজবাড়ীর পুজো। অষ্টসখীর ঘটোত্তোলন হয়, কূল-দেবতার মন্দিরে সারা বছর পূজিতা হন দুর্গা। দশভূজা, অষ্টভূজা ও চতুর্ভূজা রূপে পুজো করা হয়। সপ্তমীতে শোভাযাত্রার মাধ্যমে মূর্তি প্রবেশ করে মন্দিরে। আগে মোষ বলির প্রথা থাকলেও ১৯৪৯ সালে কোনও এক দুর্যোগের রাতে গলার দড়ি ছিঁড়ে পালিয়ে যায় মোষ। এরপর থেকেই বলি বন্ধ হয়ে যায়।
এই পুজোর অনেক পুরনো রীতি আছে। এখানে হোমের আগুন ধরানো হয় চকমকি পাথর বা আতস কাঁচ রোদে ধরে। দেশলাই কাঠি দিয়ে কোনও জ্বালানো হয় না। কাজুবাদাম ছানা ও চিনির পাকে তৈরি হয় পুজোর বিশেষ প্রসাদ, যা পাওয়ার জন্য লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন ভক্তরা। এই পুজোর বিশেষ আকর্ষণ হল আখের মেলা।