পূর্ব মেদিনীপুর: জেলা জুড়ে কমলা সতর্কতা (Orange Warning) জারি রয়েছে। লক্ষ্মীপুজোর আগে ফের প্রবল বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। তাই তৈরি রয়ে়ছে জেলা প্রশাসন। খোলা হয়েছে কন্ট্রোলরুম। পুলিশি নজরদারিও চলছে। কিন্তু তার মধ্যেই দিঘা (Digha) সমুদ্রে স্নানে মাতলেন পর্যটকেরা (Tourists)। আগের দিন বৃষ্টি ও জলোচ্ছাসে হোটেলবন্দি থাকার পর সোমবার চুটিয়ে ছুটি উপভোগ করলেন তাঁরা।
সোমবার সকাল থেকে মেঘলা আবহাওয়া। বৃষ্টি সব ম্লান করে দিয়েছিল। সপ্তাহান্তে ঘোরার আনন্দটাই মাটিতে মিশতে যাচ্ছিল। মুখ ভার ছিল পর্যটকদের। রবিবার দুপুরে থেকেই বৃষ্টি শুরু জেলায় রাস্তাঘাট ভেজা পাশাপাশি যন্ত্রণা বেড়েছে বানভাসি এলাকায়। এদিন সকাল থেকে হোটেলবন্দি থাকার পর পর্যটকদের সোজা গন্তব্য সমুদ্র সৈকত। ছোট বড়, সবাই মেতে ওঠেন সমুদ্রস্নানে।
এদিকে অন্ধ্র উপকূল ও সংলগ্ন পশ্চিম-মধ্য বঙ্গোপসাগরে ঘনীভূত হয়েছে নিম্নচাপ। যার জেরে ইতিমধ্যে পূর্ব মেদিনীপুরে শুরু হয়েছে বৃষ্টিপাত। জেলা বিপর্যয় ব্যবস্থাপন অফিসার মৃত্যুঞ্জয় হালদার জানান, “১৮ থেকে ১৯ অক্টোবর ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরে। বৃষ্টিপাতের সঙ্গে দাপট থাকবে ৪০-৫০কিলোমিটার বেগের ঝোড়ো হাওয়ার।
জেলায় কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। সমুদ্র-ও উত্তাল হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে নামতে নিষেধ করা হয়েছে। শনিবার রাত থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়েছে জেলায় বিভিন্ন জায়গায়। প্রবল বৃষ্টি হয়েছে দিঘা এবং সংলগ্ন এলাকায়ও।সকালে খানিকটা উত্তাল ছিল সমুদ্র। আমরা ব্লক প্রশাসন, পুলিশ এবং মৎস্য দপ্তরকে এ বিষয়ে সতর্ক করেছি।”
এদিকে পুজোর পরও সপ্তাহান্তে ছুটিতে ভালই ভিড় রয়েছে দিঘায়। সোমবার সকালের দিকে সমুদ্রে নামার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হতে হয় পর্যটকদের। নুলিয়া-পুলিশের বাধায় হোটেলে ফিরতে হয় তাঁদের। তবে দুপুরের পর আর তাঁদের আটকে রাখা সম্ভব হল না। বৃষ্টি একটু ধরতেই অনাবিল আনন্দে মেতে ওঠেন পর্যটকরা। হোটেল থেকে সোজা গন্তব্য সমুদ্র সৈকত। সমুদ্রে গা ভেজানোই তো দিঘার মূল আকর্ষণ। ফলে সকাল থেকেই অপেক্ষায় প্রহর গুনছিলেন যেন তাঁরা। তাই দুপুরে মুহূর্তেই সৈকত ভরিয়ে তোলেন পর্যটকরা। সমুদ্রে গা ভাসানোর সঙ্গে চলে দেদার সেল্ফি আর গ্রুফি তোলার হিড়িক। যদিও সোমবার থেকে বৃষ্টি বাড়ার সম্ভাবনা থাকায় মাইকিং করে সতর্কতা জারি করা হবে প্রশাসনের তরফে।
মৎস্য মন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, “রাজ্য সরকারের দুর্যোগের নির্দেশিকা মেনে ইতিমধ্যে বিভিন্ন মৎস্য অভিযান কেন্দ্রগুলোতে সমুদ্রে যাওয়া মৎস্যজীবী ভাইদের ফিরে আসার কথা বলেছি। বহু ট্রলার, নৌকা ইতিমধ্যে ফিরে এসেছে। তিনটি ট্রলার একটু বেশি গভীরে চলে যাওয়ায় ফিরতে পারেনি। তবে ওঁদের নামখানার আশ্রয় নিতে হয়েছে। বিগত দিনে যেমন দেখেছিলাম, দুর্যোগের সমুদ্রে যাত্রার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে যন্ত্র চালিত নৌকো মৎস্য শিকারে বেরিয়ে বিপাকে পড়েছিলেন। তেমন পরিস্থিতি হলে সেই সব লোকজনের বিরুদ্ধে প্রশাসন এবং মৎস্য দফতর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। ইতিমধ্যে জেলার নন্দীগ্রাম, পেটুয়াঘাট, শংকরপুর, দিঘা মোহনা, শৌলায় ফিরেছে বহু ট্রলার। আশা করি আর কোনও মৎস্যজীবী নেই সমুদ্রে।”
কিন্তু সমুদ্রে স্নানে মাতোয়ারা পর্যটকদের ধরে রাখার উপায় বোধ হয় কারও কাছে নেই। রয়েছে দুর্যোগ, চলছে বৃষ্টি, তার মধ্যে ভিড় জমেছে দিঘা সৈকতে।
আরও পড়ুন: Malda: চুরির অপবাদে শিক্ষককে বেধড়ক মার, তৃণমূল কাউন্সিলর লেলিয়ে দিলেন পোষা কুকুর!