Purbo Medinipur College: ফ্যানের ব্লেড বাঁকা, আসবাবপত্র ভাঙা, অধ্যক্ষের রুম তছনছ, কলেজে ‘তাণ্ডব চালালেন’ দুই তৃণমূল ছাত্রনেতা’

Purbo Medinipur College: তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মুগবেড়িয়া কলেজ ইউনিটের সভাপতি সুশান্ত খাটুয়া জানিয়েছেন, ভাঙচুরের ঘটনা প্রসঙ্গে কিছুই জানেন না তিনি। কলেজে গোলমালের কথা শুনে কার্যত বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি।

Purbo Medinipur College: ফ্যানের ব্লেড বাঁকা, আসবাবপত্র ভাঙা, অধ্যক্ষের রুম তছনছ, কলেজে 'তাণ্ডব চালালেন' দুই তৃণমূল ছাত্রনেতা'
কলেজে ভাঙচুরের অভিযোগ
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 01, 2022 | 7:51 AM

পূর্ব মেদিনীপুর: অধ্যক্ষের ঘর থেকে শুরু করে একাধিক ক্লাসরুমের বিভিন্ন আসবাবপত্র, পাখা, লাইট সহ কলেজ বিল্ডিংয়ের একাধিক সিসি ক্যামেরা ভেঙে চলেছে তাণ্ডব। সম্প্রতি পূর্ব মেদিনীপুরের মুগবেড়িয়া গঙ্গাধর কলেজে ভাঙচুরের ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই সমালোচনার ঝড়। অভিযোগ উঠেছে কলেজেরই দুই তৃণমূল ছাত্র নেতা ও তাঁদের অনুগামীদের বিরুদ্ধে।

সোমবার সন্ধ্যায় কলেজে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের দুই ছাত্রনেতা ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ভাঙচুরের সেই ছবি ইতিমধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। তবে উল্লেখ্য, এই ব্যাপারে পুলিশ এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগই নিতে চায়নি। অন্তত অভিযোগ উঠছে তেমনটাই। মুখ খুলতে চাননি কলেজ কর্তৃপক্ষও।

কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতারাও অস্বীকার করেছেন ভাঙচুরের কথা। তবে সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, ছাত্রনেতাদের সঙ্গে কলেজ অধ্যক্ষের গোলমালের জেরে এই ঘটনা। যার সূত্রপাত দুপুর নাগাদ। জোর করে কলেজের ছাত্রীদের পরিচয়পত্র দেখানোকে কেন্দ্র করে ঝামেলার সূত্রপাত। ছাত্রীদের সঙ্গে ছাত্রনেতাদের অভব্য আচরণের প্রতিবাদ করেন অধ্যক্ষ স্বপন মিশ্র। তাতেই ক্ষিপ্ত হয়ে পড়েন ছাত্রনেতারা।

সোমবার সন্ধ্যাবেলায় বহিরাগতদের নিয়ে কলেজে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর অভিযোগ ওঠে ওই দুই ছাত্রনেতার বিরুদ্ধে। কলেজের সম্পত্তি নষ্ট হওয়ার কথা স্বীকার করলেও এ বিষয়ে মন্তব্য এড়িয়ে গিয়েছেন অধ্যক্ষ। তিনি বলেছেন, ‘তেমন কিছুই হয়নি। এটা নিয়ে খবর হোক আমি চাইছি না। কলেজের সম্মানের বিষয় রয়েছে। এ ব্যাপারে কিছু জানার হলে কলেজের গভর্নিংবডির লোকজনের সঙ্গে কথা বলুন।”

তৃণমূল ছাত্র পরিষদের মুগবেড়িয়া কলেজ ইউনিটের সভাপতি সুশান্ত খাটুয়া জানিয়েছেন, ভাঙচুরের ঘটনা প্রসঙ্গে কিছুই জানেন না তিনি। কলেজে গোলমালের কথা শুনে কার্যত বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। বলেছেন, “ইউজি সেকশনের অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে সোমবার ছাত্র পরিষদ থেকে একটা আন্দোলন হয়েছিল। ভাঙচুর, গণ্ডগোলের কিছুই ঘটেনি। আমাদের আন্দোলনের পর যদি কিছু হয়ে থাকে তা জানা নেই। তবে কেন ঘটনার সময় বা পরে অধ্যক্ষ পুলিশ ডাকলেন না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে নানা মহলে।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে সরব হয়েছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআই। সংগঠনের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা কমিটির সম্পাদক জাকির হোসেন মল্লিক বলেছেন, “ছাত্র ইউনিয়নের নির্বাচন বন্ধ করে দিয়ে রাজ্যের শাসকদল তাদের স্নেহধন্য মস্তানদের কলেজ ইউনিয়নের মাথায় বসিয়েছে। তারই ফলশ্রুতি এই ঘটনা। কলেজ কর্তৃপক্ষ চাইলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নিতে পারবে না। তবে আমরা বসে থাকব না। ঘটনার প্রতিবাদে আমরা পথে নামব। কলেজের গেটে ছাত্রছাত্রীদের সংগঠিত করে প্রতিবাদ জানাব।”

বিশেষ সূত্রে খবর, কলেজ ভাঙচুরে অভিযুক্ত দুই তৃণমূল ছাত্র নেতা সুকান্ত খাটুয়া ও সৌরভ সেনের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই অভিযোগ জমা পড়েছে সংগঠনের রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। তাদের পদচ্যুত করার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এ ব্যাপারে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ জেলা সভাপতি শতদল বেরা বলেন, “এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করি আমরা এবং এই ঘটনা কখনওই আমাদের দলের নীতি বা আদর্শ নয়। এই খবর পেতেই রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যর নির্দেশে মুগবেড়িয়া তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ইউনিট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেই সিধান্ত কলেজকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের পক্ষে।”

গেরুয়া ছাত্র সংগঠন অখিল ভারত বিদ্যার্থী পরিষদের জেলা প্রমুখ চন্দ্র শেখর পইড়া বলেন, “এই ঘটনা নতুন কিছু নয় ওটা ওদের শিক্ষা। স্কুল,কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়কে ওরা ক্লাবের আড্ডাখানায় পরিণত করেছে।”