পূর্ব মেদিনীপুর: সদ্যই গঙ্গাসাগর কমিটি (Gangasagar Mela Committee) থেকে বাদ পড়েছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কমিটি থেকে বাদ পড়াকে কার্যত ‘জয়’ বলেই দেখেছে রাজ্য। অন্যদিকে, সরকারের বিরুদ্ধে তোপ দেগেছেন তিনি। শুক্রবার গঙ্গাপুজোর অনুষ্ঠানে গিয়ে ফের রাজ্যকে নিশানা করলেন অধিকারী পুত্র (Suvendu Adhikari)।
গঙ্গাপুজোর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শুভেন্দু বলেন, “কোভিড বিধিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সরকার খেলা-মেলা সবই চালাচ্ছে। ওরা খারাপ করল, ওরা নিয়ম ভাঙল মানে এই নয়, যে আমরাও তাই করব। আমরা খারাপ কাজ করি না।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমরা যে অনুষ্ঠান করছি, তা কোভিড বিধি মেনেই করব। যাতে সংক্রমণ না ছড়ায়। পরের বছরের মধ্যে যাতে দেশ করোনামুক্ত হয়, সেই প্রার্থনা জানিয়ে এই পুজো।”
গঙ্গাসাগর মেলা শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা জানিয়েছেন, মেলায় কোনওভাবেই কোভিড বিধি ভেঙে জমায়েত চলছে না। সমস্ত নিয়ম মেনেই মেলা চলছে। যেহেতু, আরটিপিসিআর পরীক্ষা, টিকাকরণ-সহ সমস্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে তাই সংক্রমণের আশঙ্কা অনেক কম এমনটাই জানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজা। যদিও, শুক্রবার মেলা চত্বরে দেখা গিয়েছে, অনেক পুণ্যার্থী মাস্ক ছাড়াই ঘুরে বেড়াচ্ছেন। একসঙ্গে মিলে স্নানও করছেন একাধিক।
গঙ্গাসাগর মেলা কমিটির থেকে বাদ পড়ার পর, রাজ্য সরকারকে নিশানা করে শুভেন্দু বলেছিলেন, “রাজ্য সরকার বিজেপি-কে ভয় পায়, বিরোধী দলনেতাকে ভয় পায়, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সিঙ্গল পয়েন্ট অ্যাজেন্ডা হল বিরোধী দলনেতাকে আটকাও।”
কিছুদিন আগেই গঙ্গাসাগর মেলা অনুষ্ঠিত হবে কি না তা নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। কোভিড পরিস্থিতিতে কীভাবে মেলা হবে তা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন। সেই পরিস্থিতিতে মেলা কমিটি সম্পূর্ণ ভেঙে নতুন করে কমিটি তৈরি করা হয়। হাইকোর্টের নির্দেশে তালিকা থেকে বাদ যান শুভেন্দু অধিকারী। বদলে, অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়কে নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত করা হয়। কমিটিতে রয়েছেন লিগ্যাল সার্ভিসেস সদস্য সচিব। গঙ্গাসাগর মেলার নজরদারি কমিটিতে শুভেন্দু অধিকারীর নাম থাকা নিয়ে প্রথম থেকেই একটা চাপানউতোর তৈরি হয়েছিল।
মামলাকারীরা অনেকেই বলেছিলেন যে, শুভেন্দু অধিকারী বিরোধী দলনেতা। সেক্ষেত্রে এই মেলা ঘিরে টানাপোড়েনে লাগতে পারে রাজনৈতিক রঙও। ‘রাজনৈতিক ব্যক্তিমুক্ত’ কমিটি গঠনের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন আইনজীবীদের একাংশ। পাশাপাশি আরও একটি বিষয় উল্লেখ্য, পুরনো কমিটিতে রাখা হয়েছিল রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকে। ওই পদে নিয়োগ এখনও আটকে রয়েছে। এরপরই নতুন কমিটির পক্ষে রায় দেয় হাইকোর্ট। তাতে বাদ যান শুভেন্দু।
আরও পড়ুন: TMC MP Aparupa Podder on Kalyan Banerjee: ‘ঘরশত্রু বিভীষণ…ওঁর পদত্যাগ করা উচিত’