পুরুলিয়া: টাকা এসেছিল শৌচালয় তৈরির। তৈরিও হয়েছে। দেওয়ালে লেখাও হয়েছে ‘পাবলিক টয়লেট’। কিন্তু, ভিতরে ঢুকতেই একেবারে অন্য ছবি। কোথায় শৌচালয়, এ যে বিশ্রামাগার! এ ছবিই দেখা যাচ্ছে পুরুলিয়ার আরশা ব্লকের হেশলা গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার ঝুঁজকা গ্রামে। টয়লেটের ভিতরে গেলেই দেখা যাচ্ছে গ্রামবাসীদের জন্য তৈরি করা হয়েছে বসার বেঞ্চ। সেখানে বসে টয়লেট না করতে পারলেও কিছুক্ষন বিশ্রাম নিতে পারবেন গ্রামের বাসিন্দারা। তা নিয়েই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। বিরোধীদের অভিযোগ, জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য আসা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা অন্য খাতে খরচ করা হচ্ছে। প্রকাশ্যেই লুঠ হয়ে যাচ্ছে সরকারি টাকা।
এদিকে বিরোধীরা বলছে জমির মালিক বুধন মাহাতো তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থক। বুধনের দাবি, স্থানীয় তৃণমূল নেতা মলয় কুমার তাঁর কাছে বিশ্রামাগার তৈরির জন্য অনুরোধ করেন। তিনি মৌখিক অনুমতিও দেন। সূত্রের খবর, ওই জমিতেই পাবলিক টয়লেটের জন্য ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা ধার্যও করা হয়।
যার জমিতে এই টয়লেট নির্মাণ করা হয়েছে সেই তৃণমূল সমর্থক বুধন মাহাতো বলেন, “আমার কাছে দলের নেতা মলয় কুমার এসেছিলেন। রেস্ট রুম করার জন্য জমি দিতে বলেছিলেন। আমি রাস্তার ধারে কিছুটা জমিতে রেস্ট রুম করার অনুমতি দিয়েছি।” পুরুলিয়া-আরশা রাজ্য সড়কের ওপরেই নির্মাণ করা হয়েছে এই টয়লেট। ঘটনার কথা সামনে আসতেই কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি বিবেক রাঙ্গা বলেন, “আমরা বারবার বলেছি সরকারের টাকা মানে সাধারণ মানুষের করের টাকা। কিন্তু রাজ্য সরকার, তৃণমূলের নেতা, চোর-আমলারা কেন্দ্রীয় প্রকল্পের টাকা নষ্ট করছে। এ কেমন টয়লেট যেখানে ভিতরে গেলেই বিশ্রামাগার। তার মানে সাধারণ মানুষের টাকা পুরোপুরি কাটমানি হিসাবে নিয়ে নওয়া হয়েছে। একইভাবে তৃণমূল নেতার বাড়িতেও টয়লেট বানানো হয়েছে।”
আক্ষেপের সুর এলাকার প্রাক্তন তৃণমূল নেতার গলাতেও। হেশলা গ্রামের প্রাক্তন তৃণমূল নেতা দেবেন মাহাতো বলেন, “হেশলা গ্রাম পঞ্চায়েতে ব্যাপক লুঠ চলছে। দলের নেতাদের জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। সরকারি প্রকল্পে কাটমানি তুলছে পঞ্চায়েত সমিতি থেকে পঞ্চায়েত সদস্যরা।” যদিও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান দেবাঙ্গনা কুমারের যুক্তি, এলাকার মানুষই টয়লেট তৈরি করার সময় বাধা দেয়। তাঁদের দাবি ছিল সেখানে একটা বিশ্রামাগারের। তাঁদের দাবিকে মান্যতা দিয়েই ওই ওটা তৈরি করা হয়েছে।