সরকারে নয়, দরকারে থেকে মধ্যমগ্রামে ২৪ ঘণ্টা অক্সিজেন পরিষেবা চালু করল রেড ভলেন্টিয়ার্স

চিকিৎসক সুজিত ঘোষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, "রেড ভলেন্টিয়ার্স যেভাবে কাজ করছে তাতে ওঁদের কুর্নিশ জানাতে হয়। বিগত দেড় বছর লাগাতার এইভাবে নিজেদের জীবন তুচ্ছ করে সংক্রমণের ভয় জয় করে মানুষের পাশে থাকা ও পরিষেবা দিয়ে যাওয়ার জন্য ওঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ।"

সরকারে নয়, দরকারে থেকে মধ্যমগ্রামে ২৪ ঘণ্টা অক্সিজেন পরিষেবা চালু করল রেড ভলেন্টিয়ার্স
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 31, 2021 | 12:29 AM

উত্তর ২৪ পরগনা: করোনা আবহে মধ্য়মগ্রামের মানুষের জন্য ২৪ ঘণ্টা অক্সিজেন পরিষেবা চালু করল রেড ভলেন্টিয়ার্স (Red Volunteers)। ২০২০-তে করোনার প্রথম ঢেউয়ের সময় থেকেই শ্রমজীবী ক্যান্টিন থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেওয়ার মতো নানা কাজ করে এসেছে রেড ভলেন্টিয়াররা। ‘সরকারে না থেকে’ কার্যত দরকারেই পাশে পাওয়া গিয়েছে তাঁদের। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বেড়েছে সংক্রমণ,সঙ্গে মৃত্যুও। তাই, শুধু খাবার দেওয়া নয়, বাড়ি বাড়ি অক্সিজেন দেওয়া থেকে শুরু করে বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা, চিকিৎসার ব্যবস্থা সবই করছেন তাঁরা। রবিবার, ক্ষুদিরাম ফাউন্ডেশন ও স্থানীয়দের সহযোগিতায় পাঁচটি অক্সিজেন সিলিন্ডার নিয়ে এই পরিষেবা শুরু করলেন রেড ভলেন্টিয়ার্সের সদস্যরা। এদিন, এই অক্সিজেন পরিষেবা কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট চিকিৎসক সুজিত ঘোষ।

রেড ভলেন্টিয়ার্সদের তরফে জানা গিয়েছে, ১০ নম্বর ওয়ার্ডের বঙ্কিম পল্লিতে শহীদ ক্ষুদিরাম বসু মেডিক্যাল ব্যাঙ্কেই রাখা হবে অক্সিজেন সিলিন্ডারগুলি (Oxygen cylinder)। মধ্যমগ্রামের মোট ২৮টি ওয়ার্ডেই যাতে এই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া যায়,তার চেষ্টা করা হবে। পাশাপাশি, কেউ করোনা আক্রান্ত হলে তাঁর জন্য বিনামূল্যে অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা থেকে শুরু করে ওষুধ, খাবার এমনকী হাসপাতালের ব্যবস্থাও করা হবে। মেডিক্য়াল ব্যাঙ্কে থাকছেন চিকিৎসকরাও। থাকছে টেলিমেডিসিনের ব্যবস্থাও।

চিকিৎসক সুজিত ঘোষ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বলেন, “রেড ভলেন্টিয়ার্স যেভাবে কাজ করছে তাতে ওঁদের কুর্নিশ জানাতে হয়। বিগত দেড় বছর লাগাতার এইভাবে নিজেদের জীবন তুচ্ছ করে সংক্রমণের ভয় জয় করে মানুষের পাশে থাকা ও পরিষেবা দিয়ে যাওয়ার জন্য ওঁদের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। এই কঠিন পরিস্থিতিতে আমাদের উচিত ওঁদের পাশে থেকে সমর্থন করা, সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া। সেইটুকু আমরা করতেই পারি।”

উল্লেখ্য, করোনাকালে, গত বছর থেকেই শ্রমজীবী ক্যান্টিন থেকে শুরু করে বাড়ি বাড়ি খাবার, ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন এসএফআই ও ডিওয়াইএফআই ছাত্র সংগঠনের কর্মীরা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে উত্তরোত্তর পরিস্থিতি ভয়ানক হয়ে উঠতে কোমর বেঁধে পথে নামেন সিপিআইএমের ছা্ত্র সংগঠনের কর্মীরা। কিন্তু, বিধানসভা নির্বাচনের পরে কার্যত ‘বামশূন্য’ বাংলা। তারপরে, নানা বিদ্রুপের মুখে পড়েন রেড ভলেন্টিয়ার্সরা। সোশ্যাল মিডিয়া (Social Media) থেকে শুরু করে সর্বত্রই ‘রাস্তায় থাকা কমরেড’ নামে তীব্র ব্যঙ্গের শিকারও হন এই কর্মীরা। কিন্তু দমে যাননি। পাল্টা ‘সরকারে নয়,দরকারে আছি’ স্লোগান দিয়ে নতুন উদ্যমে মাঠে নামেন রেড ভলেন্টিয়ার্সরা। ঠিক কত সংখ্যক রেড ভলেন্টিয়ার্স বাংলায় কাজ করছেন তা অজানা। ছোট ছোট এলাকায় ভাগ হয়ে কাজ করছেন তাঁরা। সংক্রমিতও হয়েছেন অনেকে। যদিও রেড ভলেন্টিয়ারদের দাবি, রাজনীতি নয়, মানুষের পাশে থাকতেই স্বেচ্ছায় এই কাজে নেমেছেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: মাস্ক খুলে, খালি গায়ে রাস্তায় ঘুরপাক খাচ্ছিল করোনা রোগী, হাসপাতালে ধরে আনল স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা!