ভাঙড়: খালের দু’পাশের একাধিক গ্রামের সংযোগকারী রাস্তা বলতে সম্বল একটি মাত্র কাঠের সাঁকো। অন্তত হাজার খানেক মানুষের স্কুল, কলেজ, অফিস-কাছারি পৌঁছাতে ব্যবহার করতে হয় সেটি। শুধু তাই নয়, বাইক ও সাইকেলও পারাপার করানোর জন্য মানুষ নির্ভরশীল ওই একই সাঁকোর উপর। অথচ এহেন গুরুত্ব পূর্ণ সংযোগকারী সেতুই জীর্ণ দশায় প্রায় এক দশক। ক্রমশ কঙ্কালসার দুপ্রান্ত থেকে চেহারা বেরিয়ে এলেও নির্বিকার প্রশাসন।
দিনের পর দিন দুর্ঘটনার সংখ্যা বাড়তে থাকায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। একাধিকবার সাঁকো মেরামতির দাবি জানিয়েও কোনও ফল হয় না বলে অভিযোগ। যদিও প্রশাসনের দাবি, সেচ দফতর বিষয়টি দেখছে। নির্দিষ্ট সময়ে সাঁকো মেরামতির কাজ করা হবে।
ভাঙড়ের কুলবেড়িয়া-আবাদপাড়ায় বাগজোলা খালের উপর প্রায় এক দশকের বেশি পুরানো কাঠের সেতু আজ জীর্ণদশাগ্রস্থ। অথচ ভাঙড়ের কুলবেড়িয়া, আবাদপাড়া, পুকুরআইট, হাটগাছা সহ একাধিক গ্রামের অন্তত কয়েক হাজার মানুষ নির্ভরশীল এই সেতুর উপরই। কিন্তু অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সেতুটি বেহাল অবস্থায় পড়ে থাকলেও প্রশাসন কোনও ব্যবস্থা নেয়নি। এমনকী বারবার তৃণমূল নেতাদের জানিয়েও মেলেনি কোনও সুরাহা। বরং দিনের পর দিন আরও খারাপ হয়ে আসছে সেতুর স্বাস্থ্য। নিচ থেকে খুলে যাচ্ছে পাটাতন।
স্থানীয় বাসিন্দা পূর্ণিমা নস্কর বলেন, “এই কাঠের সেতুর একদিকে এক কিলোমিটারের মধ্যে নিউটাউন, অন্যদিকে বাসন্তী হাইওয়ে, সোনারপুর। নিত্যদিন স্কুল কলেজ, ব্যবসা-বানিজ্য বা কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য এই সেতু ব্যবহার করতে হয় আমাদের। প্রত্যেকদিন হাজার খানেক মানুষ পারাপার করে। সেতুর অবস্থা খারাপ হওয়ায় মাঝেমাঝেই দুর্ঘটনা ঘটে। কিছুদিন আগেও বাইক পড়ে গিয়েছে খালে।” দেবব্রত লায়েক বলেন, “এই সেতুর ওপর দিয়েই বাধ্য হয়ে আমরা পারাপার করি। এমনকী কেউ অসুস্থ হলেও তাকে নিয়ে যেতে হয় এই সাঁকোর উপর দিয়ে। কিছুদিন আগেও পারাপার করতে গিয়ে দুটি বাইক পড়ে গিয়েছিল খালে। প্রশাসন সব জানে কিন্তু কোনও ব্যবস্থা নেয় না। ঢালাই সেতুর দাবি আমাদের দীর্ঘদিনের। নিদেনপক্ষে এই সেতুর সংস্কার দ্রুত প্রয়োজন।”
এদিকে, সমস্যার দ্রুত সমাধান হবে বলে আশ্বাস দেন ভাঙড় ২ নম্বর ব্লকের বিডিও কার্তিক চন্দ্র রায়। তিনি বলেন, “পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের নিয়ে আমি নিজে বিভিন্ন জায়গায় পরিদর্শন করেছি। সেতুগুলির অবস্থা সম্পর্কে আমরা অবগত। অনেক জায়গায় সাধারন মানুষ নিজেরাই ঠিক করে ফেলেছেন। তবে বাগজোলা খাল কাটার পরিকল্পনা রয়েছে সেচ দফতরের। সেই কাজ করে সেতুগুলো মেরামতের কাজে হাত দেবে সেচ দফতর।”
আরও পড়ুন: Bankura Bandh: ধর্মঘটীদের সঙ্গে পুলিশের লাগাতার ধস্তাধস্তি, তীব্র উত্তেজনা বাঁকুড়ায়