দক্ষিণ ২৪ পরগনা: বিদ্যুতের হুকিং করার প্রতিবাদ করেছিলেন। আর তার জেরে আক্রান্ত হলেন এক দম্পতি। বৃহষ্পতিবার রাতে ঘটনাটি ঘটেছে ক্যানিং থানার অন্তর্গত দিঘিরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েতের মাঝেরপাড়া গ্রামে। পেশায় লরি চালক সিরাজুল গায়েন বৃহস্পতিবার বাড়িতে ছিলেন না। তাঁর স্ত্রী আজমিরা গায়েন বাড়িতে কাজ করছিলেন। বিকালে তাঁদের বছর আড়াইয়ের সন্তান আরিয়ান খেলছিল। আচমকা প্রতিবেশী ইলিয়াস গায়েনের হুকিং করা বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে পড়ে সে। স্থানীয় প্রতিবেশীরা দেখতে পেয়ে তড়িঘড়ি ছোট্ট শিশুটিকে সরিয়ে নেন। বড়সড় দু্র্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় শিশুটি।
সেই সময়ের মতো সমস্ত কিছু মিটে গেলেও গোল বাধে রাতের দিকে। কলকাতা থেকে কাজ সেরে ফিরে আসেন সিরাজুল।হুকিং বন্ধ করার কথা বলে প্রতিবাদও করেন। কারণ যে কোন মুহূর্তে আরেও বড় ধরনের বিপদ ঘটতে পারে।
অভিযোগ হুকিংয়ের প্রতিবাদ করতেই আচমকা ইলিয়াস গায়েন, মিন্টু গায়েন, আমিরন গায়েনরা লাঠি ও কুড়ুল নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। এলোপাথাড়ি মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। পরে কুড়ুল দিয়ে কোপানো হয় সিরাজুলকে।
স্বামীকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তাঁর স্ত্রী আজমীরাও। অভিযোগ, তাঁকেও মাটিতে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয় এবং মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন ওই দম্পতি। প্রতিবেশীরা গুরুতর জখম অবস্থায় ওই দম্পতিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানেই আশঙ্কাজনক অবস্থা চিকিৎসাধীন রয়েছেন ওই দম্পতি।
প্রতিবেশীরা বলছেন, “এটা তো অন্যা কাজ। হুকিং করা কখনই উচিত নয়। সেক্ষেত্রে এদের তো ছোটো একটা বাচ্চাও রয়েছে। বাচ্চাটা ইতিমধ্যেই বড় দুর্ঘটনার মুখে পড়তে পারত। কোনওক্রমে বাঁচিয়ে দেওয়া গিয়েছে। কিন্তু প্রতিবাদ করাতেই ওরা ক্ষেপে উঠল। হুকিংয়ের প্রতিবাদ করায় তাদের মারধর করা হয়। মাটিতে ফেলে এলোপাথাড়ি মারা হয়। আমরা কোনওক্রমে গিয়ে ঠেকাই ওদের। কিন্তু গ্রামবাসীরা প্রায় সকলেই রেগে রয়েছেন।”
আরেক প্রতিবেশীর কথায়, “এর আগেও অনেক বারণ করা হয়েছিল। কিন্তু কোনওক্রমে তারা সেকথা শোনেনি। বাচ্চার কিছু হয়ে যেত, এ কথা কাজ সেরে জানতে পেরেই রেগে গিয়েছিল ইলিয়াস। আর সেটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জল যে এতদূর গড়াবে কে জানে!”
পুলিশে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। রাত থেকে তাঁরা হাসপাতালেই ভর্তি। সুস্থ হয়ে ফিরলে তাঁরা অভিযোগ দায়ের করবেন বলে জানিয়েছেন ওই দম্পতি। তবে এই ঘটনায় এলাকায় চাপা উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।
আরও পড়ুন: KLO: মুখ্যমন্ত্রীর ডাকে এবার শান্তি আলোচনায় কেএলও, তবে কি আলাদা হচ্ছে উত্তরবঙ্গ?