AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘ভাঙড় আমি ছাড়ব না’, সেই পুরনো মেজাজে আরও বেশি ‘আত্মপ্রত্যয়ী’ আব্বাস

একুশের হাইভোল্টেজ নির্বাচনে এই ভাঙড় কেন্দ্রটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করছে।

'ভাঙড় আমি ছাড়ব না', সেই পুরনো মেজাজে আরও বেশি 'আত্মপ্রত্যয়ী' আব্বাস
নিজস্ব চিত্র
| Updated on: Feb 22, 2021 | 2:37 PM
Share

দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ভাঙড় ছাড়বেন না, হুঙ্কার আত্মপ্রত্যয়ী ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের (Indian Secular Front) মুখ আব্বাস সিদ্দিকির (Abbas Siddiqui)। বাম-কংগ্রেসের সঙ্গে দক্ষিণবঙ্গে আসন সমঝোতা চূড়ান্ত করেছেন আব্বাস। এরই মধ্যে ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা দিবস উপলক্ষে ভাঙড়ের (Bhangore) ভোজেরহাটে একটি সভায় উপস্থিত হন তিনি। সেখানেই তিনি স্পষ্ট জানান, ভাঙড় বিধানসভা কেন্দ্রের আসনটি ছাড়বেন না।

শনিবার রাতে হুগলির বৈদ্যবাটিতে বৈঠকে বসেন তিন দলের নেতারা। এই বৈঠকে দক্ষিণবঙ্গের আসন সমঝোতা নিয়ে বাম-কংগ্রেস ও ইন্ডিয়ার সেকুলার ফ্রন্টের মধ্যে আসন সমঝোতা নিয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়। প্রায় ৮০ শতাংশ আসন নিয়ে আলোচনা হয়ে যায়। তবে বাকি উত্তরবঙ্গের আসনগুলি নিয়ে আলোচনা। এক্ষেত্রে আইএসএফের বেশ কিছু আসনের দাবি মানতে চায়নি কংগ্রেস। তবে দক্ষিণবঙ্গে ভাঙড়ও ছাড়বেন না বলে আব্বাস জানিয়ে দিয়েছেন।

আব্বাস বলেন, “আপনারা জানেন আমার সঙ্গে আসন সমঝোতার কথা চলছে। আমি পরিষ্কার বলেছি আপনারা আমাকে কোথায় আসন দেবেন কী দেবেন না আমি জানি না, আমাকে ভাঙড় দিতে হবে।” তাঁর আরও সংযোজন, “আমি ভাঙড়ের মানুষের মুখে হাসি ফোটাব, ভাঙড়ে উন্নত মানের হাসপাতাল বানাব, ভাঙড়ের মা বোনেদের সম্মান রক্ষা করব।”

একুশের হাইভোল্টেজ নির্বাচনে এই ভাঙড় কেন্দ্রটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হিসাবে কাজ করছে। বলা ভালো সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ভোট অর্থাৎ ৩০ শতাংশ ভোটটাই ফ্যাক্টর হচ্ছে শাসক-বিরোধী দু’পক্ষের কাছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ৩০ শতাংশ ভোট কাটাকাটি হলে চাপে পড়তে পারে শাসক শিবির। ওই অংশের ভোটকে লক্ষ্য রেখে আব্বাসের সঙ্গে কথা বলেন ওয়েইসিও। সেক্ষেত্রে ভাঙড় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে। সেই ভোট ঝুলিতে পুরতে ভাঙড়কে হাতছাড়া করতে চান না আব্বাসও।

পাশাপাশি ভাঙড় আসন নিয়ে সিপিএমের সঙ্গে সিপিআইএমএল রেডস্টারের বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ওই আসনে প্রার্থী দিতে চাইছে রেডস্টার। আলিমুদ্দিন সূত্রে খবর, ভাঙড় সিপিআইএমএলের দাবি মানতে নারাজ সিপিএম। আর তা নিয়েই তৈরি হয়েছে দ্বন্দ্ব।

পরিসংখ্যান বলছে, ১৯৭২ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ১০টি বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে ৮ বারই জিতেছে সিপিএম। তাই এই কেন্দ্রটি আত্মবিশ্বাসী সিপিএম। এদিকে ২০১৭ সালে ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড তৈরির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিল রেডস্টার। আর তাকে সামনে রেখেই ভাঙড়ে তাদের ভাল প্রভাব রয়েছে বলে দাবি করছে রেডস্টার। সিপিএমের বক্তব্য, মাত্র কিছু জায়গাতেই ভাল প্রভাব রয়েছে রেডস্টারের, ভাঙড়ের সর্বত্র নয়। রেডস্টারের দাবিতে চাপে সিপিএম নেতৃত্ব।

বাম-কংগ্রেস ও আব্বাসের দল ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের সঙ্গে জোট নিয়ে আলোচনা করেছে। তাকে সামনে রেখেই আত্মপ্রত্যয়ী আব্বাস বললেন, “আমার রাজনীতি করার ইচ্ছা ছিল না। আমি না নামলে অনেককে জেলে ভরে দেওয়া হচ্ছিল। আমি নেমেছি বলেই বামফ্রন্ট-কংগ্রেস পতাকা তুলতে পেরেছে। আমি নামার আগে ওরা সবাই ঘরের ভেতরে ঢুকে ছিল।”

সিপিএম নেতা তুষার ঘো। এ প্রসঙ্গে বলেন, “আলোচনা চলছে। এখনও নাম ঘোষণা হয়নি, কোন কেন্দ্রে কে দাঁড়াবেন। তবে আব্বাস সিদ্দিকি সাহেব যখন দাবি করেছেন, নিশ্চিত বাম কংগ্রেস ও আব্বাস সিদ্দিকির সংগঠনের প্রতিনিধিরা মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেবে। আমাদের কর্মীরা তা মেনে নেবেন।”

দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা কংগ্রেস সভাপতি জয়ন্ত দাস বলেন, “ভাঙড়ে আমাদের রাজনৈতিক ধারাবাহিকতা রয়েছে। আমরা অধীর দার নেতৃত্বের বহু মিটিং মিছিল এখানে করেছি। কে কী বলল, তা নিয়ে ভাবব না। উচ্চ নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নেবে, আমরা মেনে নেব।”

আরও পড়ুন: আসাউদ্দিনের বঙ্গ সফরের আগেই কোচবিহারে মিমের প্রার্থী ঘোষণা

এদিনের সভায় আব্বাসকে দেখা গিয়েছিল সেই পুরনো মেজাজেই। হাত নাড়িয়ে, গলা চড়িয়ে ভাঙড়বাসীর পক্ষে সওয়াল করলেন আব্বাস। দিলেন পাশে থাকার বার্তা।