ইউটিউবে শিখে কালাচ সাপ ধরতে গিয়েছিল যুবক! তারপর? হাসপাতালের বেডে নিজেই শোনাল সে কথা
Raigung: রায়গঞ্জের চার নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লীর বাসিন্দা সৌরভ পণ্ডিত। শুক্রবার রাতে এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে কালাচ সাপ ঢোকার খবর পেয়ে ছুটে যান তিনি।
উত্তর দিনাজপুর: কোনও প্রশিক্ষণের বালাই নেই। সোশাল মিডিয়ায় ভিডিয়ো দেখে বিষধর কালাচ সাপ ধরতে গিয়েছিলেন এক যুবক। যা হওয়ার হল তাই! বাহাদুরি করতে গিয়ে বিষধর কালাচের কামড় খেয়ে সোজা ঠাঁই হল হাসপাতালের বেডে। রায়গঞ্জের এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠছে, বাস্তব জ্ঞান ও সচেতনতা কি ধীরে ধীরে লুপ্ত হয়ে যাচ্ছে? ছেলের এমন কাণ্ডে বাবারও কপালে হাত। তাঁর আর্তি, কেউ যেন ভুলেও এমন ঘটনা না ঘটান। অতি উৎসাহ আর উন্মাদনার বশে এমন কাজে জীবনহানিও যে ঘটতে পারে! তাই সঠিক প্রশিক্ষণ না নিয়ে সাপ ধরা অনুচিৎ এবং বন আইনে এই কাজ বেআইনি বলেও মত সর্প বিশেষজ্ঞদের।
রায়গঞ্জের চার নম্বর ওয়ার্ডের রবীন্দ্রপল্লীর বাসিন্দা সৌরভ পণ্ডিত। শুক্রবার রাতে এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে কালাচ সাপ ঢোকার খবর পেয়ে ছুটে যান তিনি। ঘরের কোণে লুকিয়ে থাকা সাপটিকে নিজের বাগে এনে দু’ হাতে ধরেও ফেলেন। এরপর সেটিকে একটি প্লাস্টিকের বড় কৌটোয় বন্দি করতে গেলেই ঘটে বিপত্তি। অভিযোগ, সৌরভের ডান হাতের দুই আঙুলে সাপের দংশন টের পান। যদিও তাঁকে সাপটি ছোবল দিয়েছে কি না তা এখনও নিশ্চিত নন তিনি। তবে আতঙ্কে রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে সোজা চিকিৎসকদের শরণাপন্ন হন।
খবর পেয়ে তাঁর পরিবারের লোকেরাও হাসপাতালে পৌঁছন। তৎক্ষনাৎ শুরু হয় চিকিৎসা। রায়গঞ্জের ওই যুবকের রক্তের নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করছেন চিকিৎসকরা। তাঁর শরীরে বিষ রয়েছে কি না বা থাকলেও তা থেকে ক্ষতির সম্ভাবনা কতটা সবরকম খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদিও বিষধর সাপের কামড় নিয়ে সন্দিহান ওই যুবক হাসপাতালের বেডে বসে থাকলেও, মনে মনে যথেষ্টই ভয় পেয়ে গিয়েছেন বলেই জানান। সৌরভ পণ্ডিত জানান, ইউটিউব দেখেই সাপ ধরার কায়দা শিখেছেন। সেটাই বাস্তবায়িত করতে গিয়ে বিপত্তি।
এদিকে ছেলের এমন কাণ্ডে হতবাক তার পরিবারও। আতঙ্কিত সৌরভের বাবার বক্তব্য, “ছেলে কোনওদিনই এ সবের কোনও প্রশিক্ষণ নেয়নি। বন্ধুরা মিলেই নিজেদের মধ্যে ওরা এসব করে। অন্যদের বলব যাতে কেউ এমন না করে।” পাশাপাশি এদিন এই যুবকের কাণ্ড দেখে হতবাক পশুপ্রেমী সংগঠনের কর্মীরাও। তাঁদের দাবি, এমন ঘটনা অনেকেই ঘটিয়ে ফেলেন। কিন্তু বন দফতরের অনুমতি না নিয়ে বা সঠিক প্রশিক্ষণ না নিয়ে কোনও সাপই ধরা উচিৎ নয়। এতে জীবনহানিও ঘটতে পারে। আর কালাচ সাপ কামড়ালেও সঙ্গে সঙ্গে কামড়েছে কি না সেটা বোঝা খুবই শক্ত। অনেক সময় দেখা যায়, পরে পেটে ব্যথা অনুভব করেন আক্রান্ত ব্যক্তি। কিন্তু ততক্ষণে বিষ শরীরে মিশে গিয়ে মৃত্যুও ঘটে যেতে পারে।
সর্প বিশেষজ্ঞদের কথায়, কালাচ সাপ খুবই বিষধর এবং তার কামড়ের স্থানে কোনও চিহ্নও বোঝা যায় না। তাই একে অনেকে রহস্যময়ী সাপ বলে থাকেন। তবে শুধু কালাচ নয়, যে কোনও বিষধর সাপ ধরার ক্ষেত্রেই উপযুক্ত প্রশিক্ষন জরুরি বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। আপাতত রায়গঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে রয়েছেন ওই যুবক। আরও পড়ুন: ‘রাতে মা থাকে না, তখনই এসব করে! ও আমার সৎ বাবা বলেই হয়ত…’ বিস্ফোরক ষষ্ঠের ছাত্রী