ইয়াঙ্গন: একদিকে লেলিহান শিখা বেরচ্ছে কাপড়ের কারখানা থেকে। অন্যদিকে সেনাবাহিনীর গুলিতে লুটিয়ে পড়ছেন একের পর এক অভ্যুত্থান বিরোধী। মায়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের পর সবচেয়ে রক্তাক্ত দিন ছিল রবিবার। হ্লাইনথায়া (Hlaingthaya) শহরে একটি চিনের সাহায্যপ্রাপ্ত কাপড় কারখানায় আগুন লাগতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সেনাবাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান কমপক্ষে ২২ জন। অন্যদিকে শহরের অন্যান্য স্থানেও অশান্তিতে আরও ১৬ জন আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়েছে। প্রাণ হারিয়েছেন এক পুলিশকর্মীও, এমনটাই জানিয়েছে রাজনৈতিক বন্দিদের সাহায্যকারী একটি সংস্থা।
গত ১ ফেব্রুয়ারি মায়ানমার (Myanmar) দখল নেয় সে দেশের সেনাবাহিনী। আটক করা হয় নোবেলজয়ী জননেত্রী আন সান সু কি(Aung San Suu Kyi)-কে। তাঁর বিরুদ্ধে দেশের আমদানি-রফতানি আইন ভঙ্গ ও জাতীয় দুর্যোগ আইনের ২৫ ধারা অনুযায়ী অভিযোগ দায়ের করেছে জান্তা বাহিনী। এরপরই সেনা অভ্যত্থানের বিরুদ্ধে ও জননেত্রীর মুক্তির দাবিতে উত্তাল হয় মায়ানমার। ২০ ফেব্রুয়ারিও প্রতিবাদ মিছিল চলাকালীন গুলি চালায় পুলিশ। ঘটনায় প্রাণ হারান দুইজন, আহত হন কমপক্ষে ২০ জন।
আরও পড়ুন: আত্রাই নদে পলো দিয়ে মাছ ধরা এখন রীতি, জমিয়ে মাতলেন সকলে
রবিবারের ঘটনা সম্পর্কে চিনের দূতাবাসের তরফে জারি করা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুষ্কৃতী চিনের অর্থে পরিচালিত কাপড়ের কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেয়। এই ঘটনায় বহু চিনাকর্মী আহত হয়েছেন। কারখানার ভিতরেও আটকে পড়েছেন অনেকে। ইতিমধ্যেই চিনের তরফে মায়ানমারে আটক চিনা কর্মীদের ও সম্পত্তি রক্ষা করার অনুরোধ করা হয়েছে। গোটা ঘটনাকে “অতি ভয়ঙ্কর” বলে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। যদিও চিনের এই অনুরোধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে মায়ানমারের জনতা। তাঁদের দাবি, সেনা অভ্যত্থানের পিছনে চিনা মদত রয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, কারখানা থেকে কালো ধোঁয়া বের হতে দেখার পরই আন্দোলনকারীদের উপর গুলি চালাতে শুরু করে সেনাবাহিনী। যদিও সেনা পরিচালিত স্থানীয় সংবাদ চ্যানেলে বলা হয়েছে, চারটি কাপড়ের কারখানা ও একটি সার কারখানায় আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। ঘটনাস্থানে দমকল পৌঁছনোর চেষ্টা করলে প্রায় দুই হাজার মানুষ বাধা দেয়। এরপরই কঠোর পদক্ষেপ করতে বাধ্য হয় সেনাবাহিনী।
রাজনৈতিক বন্দিদের সাহায্যকারী সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, সেনা অভ্যুত্থানের পর এখনও অবধি কমপক্ষে ১২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার অবধি ২১৫০ জনেরও বেশি মায়ানমারবাসীকে আটক করা হয়েছে। মুক্তি দেওয়া হয়েছে মাত্র ৩০০ জনকে।
আরও পড়ুন: ‘মোদী আসবেন, এটাই তো আনন্দের’, খুশিতে ডগমগ বাংলাদেশ