AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Mysterious Mount Kailash: এভারেস্টের চেয়েও প্রায় আড়াই হাজার মিটার ছোট! তাও কেন কেউ উঠতে পারে না রহস্যময় কৈলাসে?

Mount Kailash: বারবার চেষ্টা চালিয়েছেন পর্বতারোহীরা, কিন্তু সাফল্য আসেনি। ২০০১ সালে চিনের একদল গবেষক রহস্য সমাধানে মাঠে নামেন। পাঠানো হয় একটি হেলিকপ্টার। আবহাওয়াও এক্কেবারে পরিষ্কার ছিল, কোনও সমস্যা ছিল না। সূত্রের খবর, তবুও হেলিকপ্টারটি অকারণে ভেঙে পড়ে।

Mysterious Mount Kailash: এভারেস্টের চেয়েও প্রায় আড়াই হাজার মিটার ছোট! তাও কেন কেউ উঠতে পারে না রহস্যময় কৈলাসে?
দিনে দিনে বেড়েছে রহস্য Image Credit: Getty Images
| Updated on: Oct 31, 2025 | 10:02 PM
Share

কলকাতা: বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে রহস্যময় পর্বত। শোনা যায় যাঁরাই নাকি এখানে উঠতে চেষ্টা করেন তাঁদের শরীরে অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটতে থাকে। চুল-নখ দ্রুত বাড়ে, ত্বকে পরিবর্তন আসে। এমনকি তাঁরা দ্রুত বয়স্ক হয়ে যাচ্ছেন তাও বুঝতে পারেন। কথা হচ্ছে ৬ হাজার ৬৩৮ মিটারের মাউন্ট কৈলাসকে নিয়ে। উচ্চতায় এভারেস্টের চেয়ে ২২০০ মিটার কম। কিন্তু এভারেস্টে যেখানে সাত হাজারেরও বেশি মানুষ উঠেছে, সেখানে কৈলাসে কেউই সফল হননি। আর এখানেই রয়েছে এক বিশাল রহস্য। 

রয়েছে অলৌকিক সব গল্প

বারবার চেষ্টা চালিয়েছেন পর্বতারোহীরা, কিন্তু সাফল্য আসেনি। ২০০১ সালে চিনের একদল গবেষক রহস্য সমাধানে মাঠে নামেন। পাঠানো হয় একটি হেলিকপ্টার। আবহাওয়াও এক্কেবারে পরিষ্কার ছিল, কোনও সমস্যা ছিল না। সূত্রের খবর, তবুও হেলিকপ্টারটি অকারণে ভেঙে পড়ে। এরপর থেকেই চিন সরকার কৈলাসে আরোহন সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে দেয়। এ নিয়ে নানা গুজবও তৈরি হতে থাকে। ছড়িয়ে পড়ে গোটা বিশ্বেই। 

অন্যদিকে স্থানীয়দের বিশ্বাস, ভগবান শিব ও পার্বতী হাজার হাজার বছর ধরে কৈলাসে ধ্যানমগ্ন। অন্যদিকে আর এক অংশ মনে করেন পর্বতের ভিতরে নাকি একটি অদৃশ্য নগরী লুকিয়ে আছে। তাঁকে ঘিরেও রয়েছে নানা অদ্ভুত সব কাহিনী।  অনেক অভিজ্ঞ পর্বতারোহী বলেন — “কৈলাসে উঠতে গেলেই মনে হয় যেন কেউ থামিয়ে দিচ্ছে।” বিশ্বখ্যাত পর্বতারোহী রেইনহোল্ড মেসনার, যিনি এভারেস্ট জয় করেছিলেন, তিনিও কৈলাসের কথা শুনলেই চমকে ওঠেন। তিনি বলেন, “এই পর্বত শুধু একটি পর্বত নয়। এখানে এমন কিছু আছে যা মানুষের বোঝার বাইরে।”

কী বলছে বিজ্ঞান? 

NASA-ও স্যাটেলাইট দিয়ে পর্বতের কিছু অদ্ভুত ছবি সংগ্রহ করে। যা দেখে কৌতূহল আরও বাড়ে।  এই পর্বতের ভৌগোলিক গঠন আশ্চর্যজনক। এখান থেকেই চারটি প্রধান নদী চারদিকে প্রবাহিত হয়েছে: উত্তর, পূর্ব, দক্ষিণ ও পশ্চিমে। কৈলাসের পাশে দুটি হ্রদ রয়েছে। একটি মানস সরোবর। যা মূলত মিষ্টি জলের হ্রদ। অন্যদিকে রয়েছে লবণাক্ত হ্রদ রাক্ষসতাল। যেখানে কোনও প্রাণ নেই। শোনা যায় কখনও কখনও এই হ্রদের জল রহস্যজনকভাবে অদৃশ্য হয়ে যায়।

কৈলাসকে বলা হয় “পৃথিবীর কেন্দ্রবিন্দু” বা “Axis Mundi”, কারণ এটি যেন আকাশ ও পৃথিবীর সংযোগস্থল। এটি উত্তর মেরু থেকে ৬,৬৬৬ কিমি এবং দক্ষিণ মেরু থেকে দ্বিগুণ দূরে অবস্থিত। এই অবস্থানের কারণেও অনেকে মনে করেন এখানের প্রকৃতি পৃথিবীর যে কোনও প্রান্তের থেকে অনেকটাই আলাদা। 

১৯৯৯ সালে রাশিয়ার বিজ্ঞানী আর্নেস্ট কৈলাসে গবেষণা করেন। তাঁর মতে, এই পর্বতটি প্রাকৃতিক নয়, বরং এটি একটি মানুষের তৈরি বিশাল পিরামিড। যা কোনও প্রাচীন উন্নতা সভ্যতারই নিদর্শন। রাতের বেলায় তাঁরা নাকি দেখেছিলেন পর্বতের চারপাশে নানা রঙের আলো জ্বলছে। আশপাশে ভূমিকম্প হলেও কৈলাস নাকি নিজে কখনও নড়ে না। যদিও এ নিয়েও পক্ষে-বিপক্ষে রয়েছে নানা মত। 

২০১৫ সালে নতুন গবেষণায় দেখা যায়, কৈলাসের আশেপাশের পাথরগুলো থেকে অস্বাভাবিক শক্তিশালী ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক এনার্জি নির্গত হচ্ছে, যা আজও বিজ্ঞান দিয়ে ব্যাখ্যা করা যায়নি। NASA বলছে, কৈলাস অঞ্চলে পৃথিবীর সাধারণ মানের চেয়ে ৩,০০০–৮,০০০ ন্যানোটেসলা বেশি চৌম্বক শক্তি রয়েছে।

এই অতিরিক্ত চৌম্বক বল মহাকর্ষের আচরণ পর্যন্ত বদলে দেয়। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এর নিচে হয়তো কোনও গভীর গুহা বা সুপ্ত আগ্নেয়গিরি লুকিয়ে আছে। সে কারণেও কৈলাসের এই অদ্ভুত চরিত্র দেখা যেতে পারে। সে কারণেই যাঁরা এখানে ওঠার চেষ্টা করেন তাঁদের শরীরে অদ্ভুত পরিবর্তন ঘটে। চুল-নখ দ্রুত বাড়ে, ত্বকে পরিবর্তন আসে, এমনকি তারা বয়স্ক হয়ে যাওয়ার অনুভূতি পান। এর অদ্ভুত অবস্থানের জন্য অতিরিক্ত UV রশ্মি ত্বকের ক্ষতি করে, কোষ পুনর্গঠনও দ্রুত হয়। অক্সিজেনের ঘাটতিতে শরীরে দ্রুত ক্ষয় হয়। চৌম্বক ক্ষেত্রের প্রভাব শরীরের হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করে দেয়। অনেক গবেষক আবার মনে করেন, কৈলাসের চারপাশে সময়ের প্রবাহ যেন একটু ভিন্নভাবে চলে। একে তারা বলেন “টাইম ডাইলেশন”। যদিও সবটা নিয়েই রয়েছে নানা মত। চলছে নিরন্তর গবেষণা।