কাবুল: গত পরশু আফগানবাসীর উদ্দেশে বার্তা দিয়েছিলেন আসরাফ ঘানি। সন্ত্রাস বন্ধ করার আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি। তিনি ২৪ গণ্টা না পেরতেই আফগানিস্তান ছেড়ে চলে যান তিনি। রবিবার দুপুর থেকেই কানাঘুষো শোনা যাচ্ছিল। পরে যখন দেখা যায়, প্রেসিডেন্টের ভবনে ঘোরাফেরা করছে তালিবান, তখন খবরের সত্যতা স্পষ্ট হয়। এরপরই তিনি নিজে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে বিশেষ বার্তা দেন। তবে আপাতত তাঁর অবস্থান কোথায়, তা জানা যায়নি। সূত্রের খবর, দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় তাঁর সঙ্গে ছিল চারটে গাড়ি ভর্তি নগদ টাকা। হেলিকপ্টারেও ছিল টাকা। শুধু তাই নয়, জায়গা না হওয়ায় কিছু টাকা ফেলে যেতে হয় বলেও শোনা যাচ্ছে।
রাশিয়ার একটি সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, ঘানি দেশ ছেড়ে যাওয়ার সময় তাঁর কাছে ছিল বিপুল পরিমান নগদ টাকা। আফগানিস্তানের রুশ দূতাবাসে কর্তব্যরত এক আধিকারিক জানিয়েছেন, সব টাকা নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়নি ঘানির পক্ষে, তাই কিছু নগদ টাকা বিমানবন্দরেই ফেলে যেতে বাধ্য হন তিনি। প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছিল যে তিনি তাজিকিস্তানে গিয়েছেন। কিন্তু পরে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গিয়ে্ছে যে তাঁর হেলিকপ্টার তাজিকিস্তানে নামতে দেওয়া হয়নি। তাই ওমানের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন তিনি। আবার কোনও কোনও রিপোর্ট বলছে, আমেরিকায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে তাঁকে।
দেশ ছাড়ার পর ঘানির ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঘানি দেশবাসীর উদ্দেশে লিখেছেন, যে তাঁর সামনে এদিন দুটো কঠিন বিকল্প ছিল। হয় তালিবানের মুখোমুখি হতে হত অথবা তাঁর ‘প্রিয় দেশ’ ছেড়ে পালিয়ে আসতে হত। গত ২০ বছর ধরে এই দেশ রক্ষার স্বার্থে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন বলেও উল্লেখ করেছেন ঘানি। কেন চলে এলেন, সেই ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে তাঁর দাবি, তিনি যদি থাকতেন তাহলে বহু আফগানের মৃত্যু হত আর কাবুল শহর ধ্বংস হয়ে যেত। কার্যত বিপর্যয় হতে পারত ৬০ লক্ষ মানুষের এই শহরে।
আসরাফ ঘানির দাবি কাবুলে হামলা চালাতে এসেছে তালিবান তাই রক্তবন্যা যাতে না হয় সে জন্য দেশ ছেড়ে চলে গিয়েছেন তিনি। তিনি লিখেছেন, ‘তরবারি আর বন্দুকের বিচারে তালিবান জিতে গিয়েছে। এখন দেশের মানুষের সম্মান রক্ষার দায় তাদের।’ তবে তিনি মনে করেন, ‘ক্ষমতায় এলেও হৃদয় জিততে পারেনি এই সন্ত্রাসবাদী শক্তি। তাঁর মতে, এমন রুক্ষ ক্ষমতা কখনোই মানুষের হৃদয়ে বৈধতা পায় না। তাই তিনি বলেছেন, আফগানিস্তানের মহিলা সহ দেশের সব মানুষের হৃদয়ে যাতে তারা বৈধতা পায় সেই, পরীক্ষাই এখন দিতে হবে তালিবানকে। আরও পড়ুন: ‘আমরা স্বাগত জানাচ্ছি’, তালিবানের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর বার্তা চিনের