‘আমরা স্বাগত জানাচ্ছি’, তালিবানের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর বার্তা চিনের

কিছুদিন আগেই বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছিলেন তালিবান প্রতিনিধি মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদরকে। এই বরাদরকেই তালিবান প্রশাসনিক ক্ষমতার শীর্ষে বসাবে বলে সূত্রের খবর।

'আমরা স্বাগত জানাচ্ছি', তালিবানের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়ানোর বার্তা চিনের
কিছুদিন আগেই প্রকাশ্যে এসেছিল সেই ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 16, 2021 | 5:17 PM

বেজিং: যেন এমন একটা দিনের জন্যই অপেক্ষা করেছিল চিন। একদিকে যখন কাবুল বিমানবন্দরে আফগানবাসীর দেশ ছাড়ার প্রাণপন লড়াই, অন্যদিকে তখনও তালিবানকে সরাসরি বন্ধুত্বের বার্তা দিল বেজিং। ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে চিনের জন্য বরাবরই গুরুত্বপূর্ণ আফগানিস্তান। তাই সন্ত্রস্ত আফগানিস্তানে তালিবানদের সঙ্গেও হাত মেলাতে পিছপা হচ্ছে না চিন। কিছুদিন আগেই চিনের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন তালিবানের এক প্রতিনিধি মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদর। সূত্রের খবর, সম্ভবত তাঁকে তালিবান শাসিত আফগানিস্তানের প্রশাসনিক ক্ষমতার শীর্ষে রাখতে চায় তালিবান।

গতকাল রাতেই কাবুল দখল করেছে তালিবান। প্রেসিডেন্টের ভবনের অন্দরে ঢুকে পড়েছে তারা। আজ সকাল থেকেই তাই কাবুল ছাড়ার হিড়িক। এই পরিস্থিতির মাঝেই তালিবানের হাতে আফগানিস্তানের পতন সম্পর্কে বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনয়িং বলেন, ‘আমরা স্বাগত জানাচ্ছি। আফগানিস্তানের মানুষ নিজেরা যাতে তাদের ভাগ্য নির্ধারণ করে, সেটাই চায় চিন। আফগানিস্তানের সঙ্গে বন্ধুত্ব ও সহযোগিতাপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি করতে চায় চিন।’ আগামিদিনে আফগানিস্তানের উন্নয়নে অংশ নেওয়ার কথাও জানিয়েছেন এই চিনা আধিকারিক। শুধু তাই নয়, তালিবানও যে চিনের সঙ্গে সখ্য তৈরির ইচ্ছা প্রকাশ করেছে, সে কথাও জানিয়েছে চিন।

সেই সঙ্গে ওই মুখপাত্র তালিবানের কাছে আর্জি জানিয়েছেন যাতে এক উদার ইসলামিক সরকার গঠন হয়। আফগান নাগরিকদের সুরক্ষা দেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন তিনি। কাবুলে অন্যান্য দেশের দূতাবাদস বন্ধ হয়ে গেলেও, চিনের দূতাবাসে কাজ চলছে আগের মতোই। তবে গত কয়েক মাসে অন্যান্য চিনা নাগরিককে ফিরিয়ে এনেছে বেজিং। কিছুদিন আগেই চিনা বিদেশমন্ত্র ওয়াং ই-র এবং তালিবান প্রধান মোল্লা আবদুল ঘানি বরাদরকে ছবিতে একসঙ্গে দেখা গিয়েছে। সূত্রের খবর, দুজনের মধ্যে বেশ কিছুক্ষণ আলোচনাও হয়। তালিবান জানায় যে তারা আফগানিস্তানকে জঙ্গি ঘাঁটি করে তুলবে না। অন্যদিকে, চিন বদলে আর্থিক সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বলে সূত্রের খবর।

আন্তর্জাতিক মহলের মতে, চিনের তরফে তালিবানকে আগেই মদত দেওয়া হয়েছে। আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনা সরিয়ে নেওয়ার পর থেকে সেখানে নিজেদের আধিপত্য বাড়াতে সুবিধা হয়েছে চিনে। দক্ষিণ এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চলে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার করতে যে বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে, তার পথেই অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছিল আফগানিস্তান। এশিয়ার বিরাট বাজারে ব্যবসা করতেও কিছুটা অসুবিধা হচ্ছিল চিনের। কিন্তু আফগান তাদের আয়ত্তে এসে গেলে সে ক্ষেত্রে সুবিধা হতে পারে।

এ দিকে ভারতকে কোণঠাসা করতে চিনের কিছুটা সুবিধা হবে বলেও মনে করছে কূটনৈতিক মহল। ২০ বছর আগে তালিবানি শাসন শেষ হওয়ার পর থেকে আফগানিস্তানে ব্যাপক বিনিয়োগ করেছে ভারত, প্রভাব বিস্তারও করেছে। ক্রমশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে ওই এলাকায়। তাই আফগানিস্তানে চিন প্রভাব বিস্তার করতে চাইলেও অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছিল ভারত। অনেকদিন ধরে বেল্ট অ্যান্ড রোড উদ্যোগের আওতাতেও আফগানিস্তানকে আনতে চেয়েছিল চিন। সে সব ক্ষেত্রেও এবার চিনের সুবিধা হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আরও পড়ুন: ভিডিয়ো: টায়ার আঁকড়েই দেশ ছাড়ার আপ্রাণ চেষ্টা, মাঝ আকাশ থেকে পড়ে মৃত ৩