ঢাকা: বাংলাদেশে আবারও আক্রান্ত হিন্দুরা। বেছে বেছে হিন্দুদের উপরে চলছে হামলা। এবার কাঠগড়ায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীই। চট্টগ্রামের হাজারি গলিতে হিন্দুদের সঙ্গে ধুন্ধুমার মেট্রোপলিটন পুলিশের। সংঘর্ষে অনেকে গুরুতর আহত হয়েছেন। পুলিশ ৪৯ জনকে গ্রেফতার করেছে। মামলা দায়ের করা হয়েছে ৫৮২ জনের বিরুদ্ধে।
ঘটনার সূত্রপাত হয় গত ৫ নভেম্বর। বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম প্রথম আলো-র প্রতিবেদন অনুসারে, জামাত-ই-ইসলামি নামক একটি কট্টরপন্থী ইসলামিক সংগঠনের সদস্য ওসমান আলি হিন্দু ধর্ম ও ইসকনের নামে সোশ্যাল মিডিয়ায় অবমাননাকর পোস্ট করেন। এর প্রতিবাদেই চট্টগ্রামের হাজারি গলির বাসিন্দারা ওই ব্যক্তির দোকানের বাইরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। এরপরই অশান্তি শুরু হয়।
অভিযোগ, পুলিশ বাহিনী এসে বেছে বেছে হিন্দুদের উপরই চড়াও হয়। তাদের লাঠিপেটা করে, মারধর করে। পরে বাংলাদেশের সেনাও নামানো হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় একাধিক ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে এই সংঘর্ষের। সেই ভিডিয়োতেও দেখা যাচ্ছে, পুলিশ ও সেনা নির্বিচারে মারধর করছেন। এমনকী, সিসিটিভি ভাঙতেও দেখা যায় পুলিশকে। প্রথম আলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, পরিস্থিতি সামাল দিতে শূন্যে কয়েক রাউন্ড গুলিও চালানো হয়েছে।
বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিনও ভিডিয়ো পোস্ট করেন। ভিডিয়োর ক্যাপশনে লেখা, “চট্টগ্রামের হাজারি লেন। হিন্দু বনাম মিলিটারি।”
— taslima nasreen (@taslimanasreen) November 6, 2024
পুলিশের দাবি, প্রতিবাদীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট ছুড়ছিল। এমনকী, অ্যাসিডও ছো়ড়ে বলে অভিযোগ। সংঘর্ষে ৯ জন অফিসার আহত হয়েছেন বলে খবর।
হিন্দু সম্প্রদায়ের পাল্টা অভিযোগ, সংঘর্ষে দুই সম্প্রদায় জড়িত থাকলেও, পুলিশ কেবলমাত্র হিন্দু বাসিন্দাদেরই নিশানা করেছে।
হাজারি গলিতে মূলত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষরাই থাকেন। এই হিংসা, সংঘর্ষের পর বিপুল সেনা মোতায়েন রয়েছে। বাসিন্দাদের এলাকা ছেড়ে বেরতে দেওয়া হচ্ছে না। বাড়ি বাড়ি গিয়ে তল্লাশি চালানো হচ্ছে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে অগস্ট মাসে গণআন্দোলনের মুখে পড়ে হাসিনা সরকারের পতন এবং নোবেলজয়ী মহম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বে অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই বাংলাদেশে হিন্দুদের উপরে হামলার একাধিক ঘটনা সামনে এসেছে। ভারত সরকারের তরফে এই হামলার নিন্দা করা হয়েছে। সম্প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পও এই হামলার নিন্দা করেছেন।