Black Frog: সবুজ ব্যাঙ হয়ে গিয়েছে কুচকুচে কালো, বিপর্যয়ের ৩৬ বছর পরও দগদগে চেরনোবিলের ঘা

Chernobyl Black Frog: ১৯৮৬ সালে ঘটেছিল চেরনোবিল বিপর্যয়। ৩৬ বছর পরও সেখানে পাওয়া গেল অভিযোজিত কালো রঙের ব্যাঙ।

Black Frog: সবুজ ব্যাঙ হয়ে গিয়েছে কুচকুচে কালো, বিপর্যয়ের ৩৬ বছর পরও দগদগে চেরনোবিলের ঘা
চেরনোবিল (ফাইল চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 08, 2022 | 9:31 AM

মাদ্রিদ: রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধকে ঘিরে ফের দানা বাঁধছে পারমাণবিক যুদ্ধের আশঙ্কা। আর এর মধ্যেই আরও এক গবেষণায় উঠে এল পারমাণবিক বিস্ফোরণের ক্ষতির এক অদ্ভুত চিত্র। ১৯৮৬ সালে ইউক্রেনের চেরনোবিল পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রে বিপর্যয় ঘটেছিল। ইতিহাসে এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে ভয়ানক পারমাণবিক বিপর্যয় বলে মনে করা হয়। তারপর, ৩৬ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু, সেই সময় যে ক্ষতি হয়েছিল, এখনও তার প্রভাব জারি রয়েছে প্রকৃতিতে। এক নতুন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, যে ওই বিপর্যয়ের ফলে চেরনোবিল এলাকার ব্যাঙেদের অভিযোজন ঘটেছে। তাদের গায়ের বর্ণ সবুজ থেকে বদলে কুচকুচে কালো হয়ে গিয়েছে।

চেরনোবিলের বিপর্যয়ে মানব ইতিহাসে বিশ্বের সর্ববৃহৎ তেজস্ক্রিয় পারমাণবিক পদার্থের মুক্তি ঘটেছিল। ৩৬ বছর পর, স্পেনের ওভিয়েডো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা পারমাণবিক শক্তি কেন্দ্রের চারপাশে প্রায় ১,০০০ বর্গ মাইল এলাকা জুড়ে গবেষণা চালিয়েছেন। আর তাতেই একেবারে কুচকুচে কালো রঙের ব্যাঙগুলির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। বিশ্বের আর কোথাও এমন অস্বাভাবিক চেহারার ব্যাঙ নেই বলে দাবি করেছেন গবেষকরা।

প্রধান গবেষক হেরমান ওরিজ়াওলা বলেছেন,”চেরনোবিলে প্রথম রাতেই আমরা এই ব্যাঙগুলি পেয়েছিলাম। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পাওয়ার প্ল্যান্টের কাছে এই প্রজাতির সন্ধান করছিলাম। আমরা অনেকগুলি ব্যাঙ সনাক্ত করেছি, যেগুলির রঙ ছিল একেবারে কালো। ব্যাঙ-সহ অনেক বহু জীবেরই গাঢ় বা কালো বর্ণের জন্য দায়ী হল মেলানিন নামে এক পদার্থ। এই মেলানিন, অতিবেগুনি রশ্মি থেকে শুরু করে আয়নাইজিং বিকিরণ পর্যন্ত, বিভিন্ন ধরণের বিকিরণের কারণে দেহকে ক্ষতি হওয়া থেকে রক্ষা করে। বিপর্যয়ের পর থেকে ব্যাঙেদের ১০ থেকে ১২টি প্রজন্ম কেটে গিয়েছে। ফলে বর্জিত এলাকার মধ্যে এই কালো ব্যাঙগুলি বেশি রয়েছে।”

সাধারণত যে ব্যাঙের রং হয় ঊজ্জ্বল সবুজ, সেগুলিই বদলে গিয়েছে কুচকুচে কালো রঙে

পরীক্ষার জন্য ওই অঞ্চলের আশেপাশে ১২টি বিভিন্ন প্রজনন এলাকা থেকে প্রায় ২০০টি পুরুষ ব্যাঙ সংগ্রহ করেছেন গবেষকরা। দেখা গিয়েছে, পরিত্যক্ত শক্তি কেন্দ্রটি থেকে যত দূরে যাওয়া হয়েছে, ততই ব্যাঙগুলির ত্বকের রং হালকা হয়েছে। কাছাকাছি এলাকার ব্যাঙগুলির রং, বাকিদের তুলনায় গাঢ় ছিল। তবে, তারা কীভাবে বিকিরণ থেকে রক্ষা পেয়েছে, তা এখনও অজানা।

এই অভিযোজিত ব্যাঙগুলির রং আপাতত বদলের কোনও সম্ভাবনা নেই বলেই মনে করছেন গবেষকরা। হেরমান ওরিজ়াওলা বলেছেন: “বর্তমানে বিকিরণ অনেক কমে গিয়েছে। তাই মেলানিনের প্রতিরক্ষামূলক ভূমিকা এখন তেমন গুরুত্বপূর্ণ নয়। কাজেই তাদের রং ফিকে হয়ে যাওয়ার কথা। তবে, আমাদের গবেষণায় আরও দেখা গিয়েছে, এই কালো রং ধরে রাখাটা বেশ সহজ। শরীরে বিশেষ চাপ পড়ে না। তাই এই রংটা থেকে যেতে পারে।”