তালিবানের দখলে দেশ, বুরখায় মুখ ঢাকতে ব্যস্ত মহিলারা, ৩ দিনেই দাম বাড়ল ১০ গুণ!
ফের একবার তালিবানের হাতে ক্ষমতা চলে যেতেই নতুন, আধুনিক আফগানিস্তান গঠনের স্বপ্ন বিশ বাও জলে। মহিলারা ফের বুরখায় মুখ ঢাকতে শুরু করেছ্ন, খুব একটা বাড়ির বাইরেও দেখা যাচ্ছে না তাদের।
কাবুল: অনেকেই দেশ ছেড়ে পালাতে সক্ষম হলেও তাদের পক্ষে দেশ ছেড়ে যাওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তাই তালিবানি শাসনই মেনে চলতে হবে। নতুন সরকার এখনও গঠন হয়নি, তার আগেই হু হু করে চড়ছে বুরখার দাম। কারণ তালিবানের নিয়ম, হিজাব বা বুরখা ছাড়া পথে বের হতে পারবেন না মহিলারা।
১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল অবধি যে অন্ধকার যুগ দেখেছিল আফগানিস্তান, তাই-ই পুনরায় ফিরতে চলেছে বলে আশঙ্কা দেশবাসীর। ২০০১ সালে ৯/১১ হামলার পর মার্কিন সেনা অভ্যুত্থানে তালিবান শাসন থেকে মুক্তির স্বাদ পেয়েছিলেন তারা। কিন্তু এ বার মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে আমেরিকাও। সেনা প্রত্যাহারের পর তাদের একমাত্র লক্ষ্য নিজেদের দেশের নাগরিকদেরই ফিরিয়ে আনা।
এই পরিস্থিতিতে সবথেকে বিপদের মুখে আফগানিস্তানের মহিলারাই। শরিয়া শাসনের কথা এখনও ভোলেননি তারা, জানেন নিয়ম অমান্য করলে কী নির্মম পরিণতি হতে পারে তাদের। সেই ভয়েই রবিবার থেকেই বুরখার দোকানে লাইন দিয়েছিলেন তারা। দুদিন কাটতেই বিপুল চাহিদায় আকাশছোেঁয়া দাম সেই বুরখার।
পূর্বে তালিবান শাসনের সময়কালেও মহিলাদের সর্বক্ষণ হিজাব বা বুরখা পরে থাকতে হত। বাড়ি থেকে বের হলে সঙ্গে সবসময় স্বামী বা রক্তের সম্পর্ক রয়েছে, এমন কোনও পুরুষ সঙ্গীকে পাশে রাখতে হত। স্কুল যাওয়া, চাকরি করাতেও নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল।
ফের একবার তালিবানের হাতে ক্ষমতা চলে যেতেই নতুন, আধুনিক আফগানিস্তান গঠনের স্বপ্ন বিশ বাও জলে। মহিলারা ফের বুরখায় মুখ ঢাকতে শুরু করেছ্ন, খুব একটা বাড়ির বাইরেও দেখা যাচ্ছে না তাদের। যাদের বুরখা কেনার সামর্থ্য নেই, চদর কেটেই তারা নিজেদের জন্য বুরখা তৈরি করে নিচ্ছেন। কারণ, কয়েক দিনেই আফগানিস্তানে মহিলাদের বেঁচে থাকার অন্যতম শর্ত হতে চলেছে এউই বুরখা।
তালিবান শীর্ষনেতাদের তরফে নারী শিক্ষা ও স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ না করার আশ্বাস দেওয়া হলেও পূর্ব অভিজ্ঞতা থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, নির্দিষ্ট অঞ্চল শাসনের দায়িত্বে যে তালিবান নেতা থাকেন, তাদের চিন্তাধারার উপরই সমস্ত নিয়ম নির্ভর করে।
ইতিমধ্যেই কাবুল, কুন্দুজ, কান্দাহারের প্রতিটি রাস্তা থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে নারীদের যাবতীয় পোস্টার। অশোভন পোশাক নয়, কেবল হিজাব না থাকার কারণেই সাদা বা কালো রঙে ঢেকে ফেলা হচ্ছে যাবতীয় পোস্টার।
গতকালই তালিবানের মুখপাত্র জাবিহুল্লা মুজাহিদ সাংবাদিক বৈঠক করে বলেন, “বিদেশি শক্তিকে তাড়িয়ে আমরা স্বাধীনতা এনেছি। আমরা বদলার পথে হাঁটব না। আফগানিস্তান আর যুদ্ধবিধ্বস্ত জায়গা নয়। আর কোনও সংঘর্ষ চাই না আমরা। বাইরে বা ভিতরে কোনও শত্রু চাই না। শীঘ্রই শক্তিশালী ইসলামিক তৈরি সরকার হবে। মহিলাদের সমস্ত অধিকার সুনিশ্চিত করা হবে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য সর্বত্র তাঁরা আমাদের সঙ্গে কাজ করতে পারবেন। শরিয়ত মেনে মহিলারা সব কাজ করতে পারবেন।”