চাকায় লেগে রয়েছে শুধু দেহের অংশ! অবতরণের পর কাবুলবাসীর ভয়ানক পরিণতির কথা জানাল মার্কিন বায়ু সেনা
সোমবার মার্কিন বায়ুসেনার যে বিমানটি উদ্ধারকার্যে গিয়েছিল, মঙ্গলবার তার তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, সি-১৭ বিমানের চাকায় মানবদেহের অবশিষ্টাংশ পাওয়া গিয়েছে। কোন পরিস্থিতিতে এই ধরনের ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানানো হয়।
ওয়াশিংটন: তালিবানি শাসন চাননি তারা, তাই মুক্তির আশায় পালাচ্ছিলেন অন্য দেশে। কিন্তু তাদের মতোই আরও কয়েক হাজার আফগানিও পালাচ্ছিলেন একইভাবে। সেই কারণেই বিমানের ভিতরে ঠাঁই মেলেনি তাদের। অন্ধকার ভবিষ্যত থেকে মুক্তি পেতে কোনও কিছু না ভেবেই তাই চেপে বসেছিলেন বিমানের বাইরের অংশে। কেউ আঁকড়ে ধরে রেখেছিলেন চাকা, কেউ বা আবার ইঞ্জিনের উপরই চেপে বসেছিলেন। উড়ানের মাঝপথেই যাত্রীদের ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল সেই ভয়ঙ্কর চিত্র, যেখানে দেখা যাচ্ছিল প্রপেলারের উপর ধাক্কা খাচ্ছে দুটি পা। মঙ্গলবার মার্কিন বায়ু সেনার তরফেও জানানো হল যে, তাদের সি-১৭ বিমানের চাকায় মানবদেহের অংশ মিলেছে।
সোমবার থেকেই কাবুলের হামিদ কারজ়াই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে দেখা গিয়েছিল মানুষের ঢল। প্রাণ বাঁচানোর তাগিদে যে যেদিকে পারছে, ছুটছে। ১৫০ যাত্রী বহনকারী মার্কিন বিমানেই চেপে বসেছিলেন ৬৮০ জন আফগানি। মাটিতেই গাদাগাদি করে কোনও রকমে চুপ করে বসেছিলেন তারা। বিমানের উপরে, চাকার পাশে বা ডানার উপরও লোককে বসে থাকতে দেখা যায়।
উড়ান শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই দেখা যায়, বিমান থেকে খসে পড়ছেন দুইজন। শোনা যায় তাদের আর্তনাদও, বাড়ির ছাদে আছড়ে পড়ে সেই মৃতদেহগুলি। প্রশ্ন ছিল, বাকি যারা বিমানের চাকায় বা বাকি অংশ আঁকড়ে ধরে দেশ ছেড়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন, তারা কি সুরক্ষিতভাবে আমেরিকায় পৌছেছিলেন?
সোমবার মার্কিন বায়ুসেনার যে বিমানটি উদ্ধারকার্যে গিয়েছিল, মঙ্গলবার তার তরফে একটি বিবৃতি জারি করে জানানো হয়, সি-১৭ বিমানের চাকায় মানবদেহের অবশিষ্টাংশ পাওয়া গিয়েছে। কোন পরিস্থিতিতে এই ধরনের ঘটনা ঘটল, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানানো হয়। গোটা ঘটনায় কতজনের মৃত্যু হয়েছে, সে সম্পর্কেও আন্দাজ করার চেষ্টা হচ্ছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, সোমবার বায়ুসেনার ওই বিমানটি নামতেই শতাধিক আফগান নাগরিক চারিদিক থেকে বিমানটি ঘিরে ফেলে। বিমানে ওঠার জন্য ধাক্কাধাক্কি, মারামারি শুরু হয়। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছে বুঝতে পেরেই সি-১৭ র ক্রুরা স্থির করেন যত দ্রুত সম্ভব বিমানবন্দর থেকে উড়ান শুরু করার। উড়ান শুরু করার পরও বিমানের চারপাশে রানওয়ে ধরে লোকজনের ছোটাছুটি লক্ষ্য করা যায়।
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, বায়ু সেনার বিশেষ তদন্ত দফতর বিমান ও সাধারণ মানুষের মৃত্যু সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখছে। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট ও ভিডিয়োও খতিয়ে দেখা হচ্ছে প্রমাণস্বরূপ। আরও পড়ুন: তালিবানের কাছে কখনওই মাথা নোয়াব না, ঘোষণা আফগানিস্তানের ‘কেয়ারটেকার প্রেসিডেন্ট’ আমরুল্লাহ সালেহর