AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Thailand’s Ayutthaya: থাইল্যান্ডেরও রয়েছে এক অযোধ্যা, রাজারা সকলেই ছিলেন রাম!

Thailand's Ayutthaya: দূরত্ব প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটারের। তবে দুই জায়গাকেই এক সূত্রে গেঁথেছেন রাম। শুধু দুটি দেশ নয়, দুই দেশের মানুষের মধ্যেও যোগসূত্র হয়ে উঠেছেন রাম। ভারতের রাম আবেগ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু, থাইল্যান্ডও কতটা রামময়, তা অনেকেরই জানা নেই।

Thailand's Ayutthaya: থাইল্যান্ডেরও রয়েছে এক অযোধ্যা, রাজারা সকলেই ছিলেন রাম!
থাইল্যান্ডের অযোধ্যা, আয়ুথায়াImage Credit: Twitter
| Updated on: Jan 22, 2024 | 10:15 AM
Share

ব্যাংকক: ভারতের উত্তর প্রদেশে যেমন অযোধ্যা আছে, তেমনই থাইল্যান্ডেও রয়েছে এক অযোধ্যা। শুধু তাই নয়, এই অযোধ্যার সব রাজার নামেই রয়েছে রাম। থাইল্যান্ডে অবশ্য অযোধ্যাকে বলা হয় আয়ুথায়া। উত্তর প্রদেশের অযোধ্যার থেকে তার দূরত্ব প্রায় ৩,৫০০ কিলোমিটারের। তবে দুই জায়গাকেই এক সূত্রে গেঁথেছেন রাম। শুধু দুটি দেশ নয়, দুই দেশের মানুষের মধ্যেও যোগসূত্র হয়ে উঠেছেন রাম। ভারতের রাম আবেগ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। কিন্তু, থাইল্যান্ডও কতটা রামময়, তা অনেকেরই জানা নেই।

থাইল্যান্ড বা সিয়াম রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তেরশ শতকের প্রথমার্ধে। ব্যাংকক থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার উত্তরের শহর আয়ুথায়া ছিল সিয়ামের রাজধানী তথা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহর। এই আয়ুথয়া শব্দটি এসেছে রামের জন্মস্থান অযোধ্যা থেকেই। থাইল্যান্ডের রয়েছে নিজস্ব রামায়ণও, যাকে বলা হয় ‘রামাকিয়েন’। আয়ুথায়া রাজ্যের প্রথম রাজা ছিলেন ‘রামাথিবোদি’, যার অর্থ ভগবান রাম। তিনিই এই শহরের নামকরণ করেছিলেন, আর তাঁর নামেও রয়েছে রাম বা রামায়ণের প্রভাব। তাঁর রাজ্যের যাবতীয় আচার-অনুষ্ঠানগুলি তৈরি হয়েছিল হিন্দু বৈদিক শাস্ত্রের উপর ভিত্তি করেই। আর রাজ্য চলত রামায়ণে উল্লিখিত রামের ধর্মীয়-রাজনৈতিক মতাদর্শ অনুসারে।

আয়ুথায়ার ধ্বংসাবশেষ

চোদ্দশ থেকে আঠারোশ শতাব্দীর মধ্যে, বিশ্বের বৃহত্তম শহরগুলির অন্যতম ছিল আয়ুথায়া। কূটনীতি ও বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল। ১৭৬৭ সালে বার্মিজ সেনাবাহিনী শহরে হামলা চালিয়ে শহরটি ধ্বংস করেছিল। পুড়িয়ে ছাড়খাড় করে দিয়েছি আয়ুথায়া। বাসিন্দারা শহর ত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। আর কখনও এই শহরের পুনর্নির্মাণ করা হয়নি। তবে, বার্মিজ সেনাবাহিনীর হামলা থেকে অনেক পাথরের মন্দির এবং বৌদ্ধ মঠ বেঁচে গিয়েছিল। আজ এই এলাকা এক বিরাট প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান হিসাবে পরিচিত। আয়ুথায়ার মন্দির এবং স্মৃতিস্তম্ভগুলির কাঠামোগত নকশায় হিন্দু প্রভাব স্পষ্ট। সঙ্গে রয়েছে সুখোথাই শৈলীর মিশ্রণ, অনেকটই বিখ্য়াত আঙ্কোর ওয়াট মন্দির চত্ত্বরের ধ্বংসাবশেষের মতো।

সিয়ামের পরবর্তী শাসক, চক্রী রাজবংশের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন রাজা প্রথম রাম। ১৭৮২ সালে তিনি সিংহাসনে বসেছিলেন। সেই সময় আয়ুথায়া রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা রামাথিবোদির মতোই তিনি রাম নাম গ্রহণ করেছিলেন। তারপর থেকে এখনও পর্যন্ত, থাইল্যান্ডের প্রতিটি রাজার নামে রয়েছে রাম। আসলে মনে করা হয়, রাজারা সকরলেই রামের অবতার।

বহু মানুষ দেখতে আসেন আয়ুথায়ার ধ্বংসাবশেষ

মজার বিষয় হল, রামায়ণকে ভারত থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় নিয়ে গিয়েছিলেন বৌদ্ধ ধর্মপ্রচারকরা। আয়ুথায়া রাজ্যের সময় লেখা হয় সেখানকার রামায়ণ, রামাকিয়েন। থাই সংস্কৃতিতে রামের এতটাই প্রভাব রয়েছে, যে অযোধ্যার রাম জন্মভূমি মন্দিরের ভূমিপুজোর সময়, আয়ুথায়া থেকে মাটি পাঠানো হয়েছিল। এখন রাম মন্দিরের প্রাণ প্রতিষ্ঠার সময়, থাইল্যান্ডের দুটি নদী থেকে জলও পাঠানো হয়েছে। দুটি দেশের আরও সাংস্কৃতিক মিল রয়েছে। ভারতের দীপাবলি উৎসবের মতো থাইল্যান্ডেও রয়েছে আলোর উৎসব লয় ক্রাথং। বিভিন্ন স্থানে শিব, পার্বতী, গণেশ এবং ইন্দ্রের মূর্তি স্থাপন করে পুজো করা হয়।

থাই সংস্কৃতিতে বিশাল প্রভাব রয়েছে রাম এবং রামায়ণের

অযোধ্যায় রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা উপলক্ষে রাম দন্মভূমির সঙ্গে আয়ুথায়ার শহরের কয়েক শতাব্দীর পুরানো বন্ধন পুনরুজ্জীবিত হয়েছে। ২২ জানুয়ারি, অযোধ্যায় রাম মন্দিরের প্রতিষ্ঠা অনুষ্ঠানের সরাসরি সম্প্রচার করা হচ্ছে ব্যাংককে। সেখানে বেশ কিছু জায়গায় কীর্তন, ভজন, পূজা এবং স্তোত্রপাঠের আয়োজন করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই অযোধ্যা থেকে রাম জন্মভূমি মন্দিরের প্রসাদের অর্ডারও দিয়েছে থাইল্যান্ডের বেশ কিছু সংগঠন। অযোধ্যার রাম মন্দিরের একটি প্রতিরূপও তৈরি করা হয়েছে।