ইসলামাবাদ : পাকিস্তানের ক্ষমতা দখল নিয়ে টানাপোড়েন অব্যাহত। সেদেশের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের পরও ইমরান খানের নাছোড় মনোভাবের জেরে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আস্থা ভোট নিয়ে দেখা দিয়েছে ধোঁয়াশা। এরই মাঝে পাকিস্তানের শাসকদল তেহরিক-ই-ইনসাফ এবার সুপ্রিম রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দেশের শীর্ষ আদালতে রিভিউ পিটিশন দাখিল করল। তবে সুপ্রিম কোর্ট সেই রিভিউ পিটিশন গ্রহণ করেছে কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এদিকে পাকিস্তানের ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে আজ আস্থা ভোট হওয়ার কথা থাকলেও তা আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়।
এর আগে পাকিস্তানের বিরোধীদের অনাস্থা প্রস্তাব ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে খারিজ করেছিলেন ডেপুটি স্পিকার কামিস সুরি। ডেপুটি স্পিকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে পাক শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিল বিরোধী দলগুলি। প্রায় এক সপ্তাহ শুনানি চলার পর পাক সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বনদিয়ালের নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ রায় দেয় যে ডেপুটি স্পিকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত অসাংবিধানিক এবং পাক সুপ্রিম কোর্ট আস্থা ভোট করানোর নির্দেশ দেয়। সুপ্রিম কোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যেই নিজের অসন্তোষ ব্যক্ত করেছিলেন পাক ‘ওয়াজির-এ-আজম’ ইমরান খান। তিনি তাঁর ‘বিদেশি ষড়যন্ত্র’-এর তত্ত্বে অনড়।
এই আবহে পিটিআই-এর তরফে বাবর আওয়ান এবং অ্যাডভোকেট মহম্মদ আজহার সিদ্দিকি সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ পিটিশন ফাইল করে গত ৭ এপ্রিলের রায় (আস্থা ভোট করানোর নির্দেশ) খারিজ করার আবেদন জানিয়েছেন। আবেদনকারীদের দাবি, পাক সংবিধানের ১৮৪(৩) ধারা অনুযায়ী আদালত তখনই কোনও বিষয়ে রায় দিতে পারে বা এক্তিয়ার রয়েছে যদি সেই মামলা জনসাধারণের সঙ্গে যুক্ত থাকে। পাশাপাশি কাসিম সুরির অনাস্থা প্রস্তাব খারিজের সিদ্ধান্তকেও সঠিক আখ্যা দিয়ে আবেদনকারীরা দাবি করেছেন যে পাক সংবিধানের ৫ নং ধারা অনুযায়ী সেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আবেদনকারীদের যুক্তি, আস্থা ভোট সংক্রান্ত বিষয়গুলি সংবিধানে উল্লেখিত রয়েছে এবং ‘সব ছোট ছোট বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করতে পারে না।’
এদিকে আজকে পাকিস্তানের সময়ে রাত সাড়ে ৮টায় পাক ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির অধিবেশন ফের শুরু হয়েছে। মধ্যরাত পর্যন্ত এই অধিবেশন চলবে বলে জানা গিয়েছে। পাক সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইমরান খান আস্থা ভোট বিলম্বিত করতে চাইছেন। এবং সেই সময়ে পাক অ্যাসেম্বলির বাইরে নিজের দলের সমর্থকদের একজোট করে বিরোধীদের কোণঠাসা করতে চাইছেন। এদিকে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী, অনাস্থা ভোট না হওয়া পর্যন্ত অ্যাসেম্বলিতে আজকের অধিবেশন স্থগিত করা যাবে না।
আরও পড়ুন : Aravindan Balakrishnan : কমরেডের কুকীর্তি, ধর্ষণের দায়ে বন্দিদশায় মৃত্যু নেতার