‘বিগ ব্লো…’, ক্ষীণবল মোদী, কীভাবে দেখল আন্তর্জাতিক মিডিয়া?
বিশ্বের সবথেকে বড় গণতন্ত্রের ভোট। মঙ্গলবার (৪ জুন), গোটা দিন সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমের তীক্ষ্ণ নজর ছিল ভারতের দিকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ দুর্বল সংখ্যাগরীষ্ঠতা পাওয়ায় অধিকাংশই বিস্ময় প্রকাশ করেছে। কী বলছে তারা? আসুন দেখে নেওয়া যাক -
নয়া দিল্লি: ভোটের ফল অনেককেই চমকে দিয়েছে। যেখানে ৪০০ পারের কথা হচ্ছিল, এনডিএ ৩০০-ই পার করতে পারেনি। মোদীর তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরা হয়তো আটকাবে না, কিন্তু, এখন মোদী সরকারকে অনেকটাই এনডিএ শরিকদের উপর নির্ভর করতে হবে। বিশ্বের সবথেকে বড় গণতন্ত্রের ভোট। মঙ্গলবার (৪ জুন), গোটা দিন সারা বিশ্বের সংবাদমাধ্যমের তীক্ষ্ণ নজর ছিল ভারতের দিকে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ সংখ্যাগরীষ্ঠতা পেলেও, আগের থেকে শক্তি কমায় অধিকাংশই বিস্ময় প্রকাশ করেছে। কী বলছে তারা? আসুন দেখে নেওয়া যাক –
ব্রিটেনের সংবাদমাধ্যম ‘বিবিসি’ লিখেছে, “জোর ধাক্কা খেলেন ভারতের মোদী। তাঁর জোট, কম সংখ্যক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে চলেছে।” বিবিসির মতে, ইন্ডিয়া জোটের ‘গণতন্ত্র বাঁচাও’ স্লোগান ভোটারদের প্রভাবিত করেছে। এছাড়া, ব্যয় বৃদ্ধি, বেকারত্ব বৃদ্ধি, সাংবিধানিক পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলি তুলে ধরাতেই বিরোধী পক্ষ আশাতীত সাফল্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে এই ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম।
ব্রিটিশ দৈনিক, ‘গার্ডিয়ান’-এর শিরোনাম – “নরেন্দ্র মোদী ‘ঐতিহাসিক’ তৃতীয় মেয়াদের দাবি করছেন, কিন্তু অনুমান বলছে তাঁর দলের সম্পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়ার সম্ভাবনা কম।” ইন্ডিয়া জোট নিয়ে তারা লিখেছে, “অপ্রত্যাশিত ভাল ফল করেছে রাহুল গান্ধীর মধ্যপন্থী কংগ্রেস পার্টির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের জোট ইন্ডিয়া। ২৩০টিরও বেশি আসনে এগিয়ে তারা।” তারা আরও লিখেছে, দিল্লিতে বিজেপির সদর দফতরে উদযাপনের জাঁক এবার বেশ কম। এর আগের নির্বাচনের গণনার দিন যেরকম ভিড় ছিল, এদিন তা ছিল না।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘সিএনএন’ লিখেছে, “মোদী নির্বাচনে বিজয় ঘোষণা করলেন বটে, কিন্তু তাঁর দল বিস্ময়কর পরাজয়ের সম্মুখীন।” আরও লেখা হয়েছে, বিজেপি সংসদের নিম্নকক্ষে ব্যাপক সংখ্যাগরিষ্ঠতা আশা করছিল। সেটা পেলে তারা দেশের সংবিধান পরিবর্তন করতে সক্ষম হত। কিন্তু, বিজেপিকে এখন সরকার গঠনের জন্য জোট-শরিকদের উপর নির্ভর করতে হবে।
কাতারের সংবাদমাধ্যম ‘আল জাজিরা’র শিরোনাম, “নির্বাচনে বিজেপি ধাক্কা খাওয়ায় মোদীর ভাগ্য নির্ধারণ করবে শরিকরা।” তারা লিখেছে, “প্রধান রাজ্যগুলিতে বড় ক্ষতি হওয়ায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারাতে চলেছে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর দল বিজেপি। গত এক দশক ধরে তারাই আধিপত্য বিস্তার করেছে। কাজেই এর ফলে, রাজনৈতিক দৃশ্যপটে নাটকীয় পরিবর্তন চিহ্নিত হল।” এক্সটি পোলগুলির ব্যর্থতা নিয়েও লেখা হয়েছে আল জাজিরার রিপোর্টে। সেই সঙ্গে অযোধ্যায় বিজেপির হার নিয়ে লেখা হয়েছে, “ফৈজাবাদ কেন্দ্রে বিজেপি পরাজিত হয়েছে। এখানে জানুয়ারি মাসে মোদী একটি বিতর্কিত হিন্দু মন্দির উদ্বোধন করেছিলেন।”
মার্কিন নিউজ ওয়েবসাইট, ‘নিউজউইক’-এর শিরোনাম – “মোদীর বিজেপি নির্বাচনে ধাক্কা খাওয়ায় ভারতে বিরোধীরা উদযাপন করছে”। তারা লিখেছে, “স্থানীয় সমস্যাগুলিতে জোর দেওয়া এবং ঐক্য ও ন্যায়বিচারের বিষয়ে আখ্যান তৈরি করেছিল বিরোধীরা। এই কৌশল সম্ভবত ভোটারদের প্রভাবিত করেছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিজেপি বিশাল জয় পাবেন বলে আশা করেছিলেন। কেউ কেউ নির্বাচনে ৫৪৩ আসনের মধ্যে ৪০০টিরও বেশি আসনের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন। কিন্তু বিজেপির ক্ষতির মাত্রা অনেককেই অবাক করে দিয়েছে।”