Khaleda Zia: একটা ফোন আসতেই হাপুস নয়নে কান্না, তারপরই দরজা বন্ধ করেন খালেদা জিয়া! ১০ বছর আগে কী ঘটেছিল?
Khaleda Zia Demise: কোকোকে নিয়ে বিতর্কও কম ছিল না। মা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিএনপির আর্থিক দিক সামলাতেন কোকো। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেই সময় থেকে তারেক ও আরাফত - দু’ভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করে।

ঢাকা: বাংলাদেশে শোকের ছায়া। প্রয়াত বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া (Khaleda Zia)। গোটা দেশ স্মৃতিচারণ করছেন খালেদা জিয়ার। কীভাবে একজন সাধারণ গৃহিণী থেকে বিএনপির দাপুটে নেত্রী হয়ে উঠেছিলেন, বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন, তার চর্চা চারিদিকে। শোনা যাচ্ছে, তাঁর স্বামী তথা বাংলাদেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরের পাশে তাঁকে কবরস্থ করা হবে। মাকে শেষ দেখা দেখতে কয়েকদিন আগেই দেশে এসেছেন তারেক রহমান (Tarique Rahman)। তবে জানেন কি, তারেক একা নন, তাঁর ভাই-ও ছিল। ১০ বছর আগেই পুত্রশোক পেয়েছিলেন খালেদা জিয়া। কী হয়েছিল পরিবারের ছোট ছেলে কোকোর?
২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মৃত্যু হয় খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফত রহমান কোকোর। এই ক’দিন আগে, ২৫ ডিসেম্বর যখন তারেক রহমান দীর্ঘ ১৭ বছরের স্বেচ্ছা নির্বাসন কাটিয়ে বাংলাদেশে ফিরেছিলেন তারেখ রহমান, তখন বিমানবন্দরে উপচে পড়ছিল কর্মী সমর্থকদের ভিড়। ১০ বছর আগেও এমনই ভিড় ছিল হজরত শাহজালাল বিমানবন্দরে। তবে সেই ভিড় আনন্দের ছিল না, ছিল দুঃখের। কফিনবন্দি হয়ে মালয়শিয়া থেকে আনা হয়েছিল আরাফত রহমান কোকোর।
১৯৭০ সালের ১২ অগস্ট কুমিল্লার সেনা আবাসে জন্ম হয় আরাফত রহমানের। প্যালেস্টাইনি নেতা ইয়াসের আরাফতের নামে ছোট ছেলের নাম রেখেছিলেন খালেদা জিয়া ও জিয়াউর রহমান। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে যখন জিয়াউর রহমান যোগ দেন, তখন ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে মা খালেদার সঙ্গে গৃহবন্দি ছিলেন কোকোও। ১৯৮১ সালে জিয়াউর রহমানের হত্যার সময় শিশু ছিলেন কোকো, তারেক রহমান নাবালক। দুই ছেলেকে আগলে নিয়েই দলের দায়িত্ব নেন খালেদ জিয়া।
বাংলাদেশের ক্রিকেটকে বিশ্বমঞ্চে পরিচিত করিয়েছিলেন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে কোকো। তিনিই তৈরি করেছিলেন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সংগঠন। ২০০৪ সালে মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামকে ক্রিকেটের জন্য বরাদ্দ করেন।
তবে কোকোকে নিয়ে বিতর্কও কম ছিল না। মা প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন বিএনপির আর্থিক দিক সামলাতেন কোকো। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন খালেদা জিয়া। সেই সময় থেকে তারেক ও আরাফত – দু’ভাইয়ের বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করে।
২০০৬ সালে খালেদা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জমানায় দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। জিয়া পরিবারের তিন জনের বিরুদ্ধেই দায়ের হয় মামলা। ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর খালেদা জিয়া ও কোকোকে গ্রেফতার করা হয়। অর্থ পাচারের মামলায় কোকোকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ২০০৪ থেকে ২০০৬ সালের মধ্যে সিঙ্গাপুরে অর্থ পাচারের অভিযোগে তাঁকে ছ’বছরের কারাদণ্ড এবং ৩৮ কোটি ৮৩ লক্ষ বাংলাদেশি টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।
জেলে থাকাকালীনই অসুস্থ হয়ে পড়েন কোকো। ২০০৮ সালে প্যারোলে মুক্তি পান। চিকিৎসার জন্য প্রথমে থাইল্যান্ডে ও পরে মালয়েশিয়াতে চলে যান। ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি হৃদরোগে আক্রান্ত হন। কুয়ালালামপুরের হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার কয়েক মিনিট পরই মৃত্যু হয় কোকোর। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৪৫ বছর।
ছেলের মৃত্যুর খবর যখন আসে, তখন ঢাকার গুলশনের বিএনপি কার্যালয়ে ছিলেন খালেদা জিয়া। ছেলের খবর শুনেই কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। আত্মীয়দের জড়িয়ে কাঁদতে শুরু করেন, অসুস্থ হয়ে পড়েন। এরপরে ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। তখন সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিল। যদিও পরে তারেক রহমানের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন খালেদা জিয়া। ভাইয়ের মৃত্যুর খবর শুনে লন্ডন থেকে মালয়শিয়া যান তারেক। তিনিই বাংলাদেশে কোকোর দেহ পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিলেন।
