AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে শান্তি চুক্তি সই করাল রাশিয়া! কার দখলে গেল নাগোরনো কারাবাখ?

TV9 বাংলা ডিজিটাল: শত শত মানুষের প্রাণ গিয়েছে। ভেসেছে রক্তের স্রোত, অবশেষে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হল আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় প্রায় ১২০০ মানুষের মৃত্যুর পর মঙ্গলবার শান্তি চুক্তিতে সই করলেন নিকোল পাসিনিয়ান ও ইলহাম আলিয়েভ। সেপ্টেম্বরে দুই দেশের সীমান্ত নাগরনো-কারাবাখ নিয়ে পুরোনো বিবাদ ফের জ্বলে উঠেছিল। তারপর ক্রমাগত ভেঙেছে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি। তুরস্ক […]

আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে শান্তি চুক্তি সই করাল রাশিয়া! কার দখলে গেল নাগোরনো কারাবাখ?
ফাইল চিত্র
| Updated on: Nov 12, 2020 | 12:44 PM
Share

TV9 বাংলা ডিজিটাল: শত শত মানুষের প্রাণ গিয়েছে। ভেসেছে রক্তের স্রোত, অবশেষে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হল আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে। রাশিয়ার মধ্যস্থতায় প্রায় ১২০০ মানুষের মৃত্যুর পর মঙ্গলবার শান্তি চুক্তিতে সই করলেন নিকোল পাসিনিয়ান ও ইলহাম আলিয়েভ। সেপ্টেম্বরে দুই দেশের সীমান্ত নাগরনো-কারাবাখ নিয়ে পুরোনো বিবাদ ফের জ্বলে উঠেছিল। তারপর ক্রমাগত ভেঙেছে সংঘর্ষ বিরতি চুক্তি। তুরস্ক ও পাকিস্তানের উস্কানিতে বিবাদ যুদ্ধে পরিণত হওয়ার উপক্রমও তৈরি হয়েছিল। মাথা গলাতে শুরু করেছিল সারা বিশ্ব। তবে ১০ নভেম্বর, মঙ্গলবার উত্তেজনায় রাশ টানল রাশিয়া।

প্রতীকী চিত্র

কী স্থির হল চুক্তিতে? চুক্তিতে স্থির হল দুই পক্ষ যে যে অবস্থানে আছে সেখান থেকে আর অগ্রসর হবে না। যার ফলে লাভবান হল আজারবাইজান। বিবাদের সময় নাগরোনো কারাবাখের প্রায় ১৫-২০ শতাংশ জমি দখল করেছিল আজারবাইজান। শান্তি চুক্তির ফলে এই জমি এখন তাদের।

এই শান্তি চুক্তির ফলে সীমান্তে সামরিক কার্যকলাপ বন্ধ রাখবে দুই দেশ। পরবর্তী ৫ বছরের জন্য দুই দেশের সীমান্তে থাকবে রাশিয়ার শান্তি রক্ষাকারী বাহিনী। নাগরনো কারবাখ অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে থাকবেন প্রায় ২,০০০ রাশিয়ার শান্তিরক্ষী।

দুই দেশের বন্দিদের তাদের নিজেদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ফেরত দেওয়া হবে মৃতদেহ। উন্মুক্ত হবে নাখচিভান থেকে আজারবাইজান পর্যন্ত একটি করিডর। যার দায়িত্বে থাকবেন রুশ শান্তিরক্ষীরা।

আরও পড়ুন: আমরা ক্লান্ত, কিন্তু করোনা ক্লান্ত নয়! আরও বেশি করে সতর্ক হওয়ার বার্তা দিলেন হু প্রধান

৩ দেশের কূটনৈতিক অবস্থান:

বিবাদের সময় দুই দেশকেই অস্ত্র বিক্রি করেছে রাশিয়া। আজারবাইজানকে সরাসরি সহযোগিতার কথা বলেছিল পাকিস্তান ও তুরস্ক। আর্মেনিয়া একাধিকবার অভিযোগ তুলেছিল যে পাকিস্তানি জঙ্গিরা আজারবাইজানের হয়ে সীমান্তে কার্যকলাপ চালাচ্ছে। তবে আর্মেনিয়া বা আজারবাইজান কাউকেই সরাসরি সমর্থন করেনি রাশিয়া। গত মাসে একটি বিবৃতিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের প্রেস সেক্রেটারি দমিত্রি পেসকভ জানিয়েছিলেন, রাশিয়া সবসময় দুই দেশের মধ্যে সাম্য বজায় রেখেছে। দুই দেশের সঙ্গেই রাশিয়ার ‘ধারাবাহিক ভাল সম্পর্ক।’ শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর জমি ফিরে পেয়ে খুশি আজারবাইজান। সে দেশের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ শান্তি চুক্তিকে ‘ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ’ বলেছেন। কিছুটা হলেও নাখুশ আর্মেনিয়া। শান্তি চুক্তির প্রতিবাদে রাজধানীতে জড়ো হয়েছেন সে দেশের সাধারণ মানুষ। আর্মেনিয়ার প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাসিনিয়ান চুক্তিকে আর্মেনিয়াবাসীর জন্য ‘অত্যন্ত বেদনাদায়ক’ বলেছেন।

বিগত শান্তি চুক্তি: এর আগে দুই দেশের মধ্যে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৯৪ সালে। তারপরেও পরিস্থিতি বদলায়নি। লাগাতার গুলি চলেছে সীমান্তে। ২০১৬ সালে যুদ্ধের আকার নিয়েছিল এই বিবাদ। তারপর রাশিয়ার মধ্যস্থতায় ফের শান্তি ফিরেছিল। গত কয়েক বছর ধরে অরগানাইজেশন অ্যান্ড কো অপারেশন ইন ইউরোপ মিনাস্ক গ্রুপ দুই দেশের মধ্যে শান্তি স্থাপনের লক্ষ্যে কাজ করছে। এই সংস্থার রয়েছে ফ্রান্স, রাশিয়া ও আমেরিকা।

Armenia And Azerbijan

নাগরনো কারাবাখের ইতিহাস: ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন (USSR) ভেঙে গড়ে ওঠে দুটি স্বাধীন দেশ, আর্মেনিয়া (Armenia) ও আজারবাইজান ( Azerbaijan)। সে সময় নাগরনো কারাবাখকে আজারবাইজানের অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছিল রাশিয়া। কিন্তু সেখানকার বাসিন্দারা চেয়েছিলেন আর্মেনিয়ার সঙ্গে থাকতে। তারপর থেকে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী নাগোরনো কারাবাখ আজারবাইজানের অন্তর্গত। কিন্তু আর্মেনিয়ানদের বসতি হওয়ায় সেখানে আর্মেনিয়া সরকারের ক্ষমতা চলে। এমনকি গণভোটের মাধ্যমেও সেখানকার বাসিন্দারা স্থির করেছিলেন তারা আর্মেনিয়ার সঙ্গে থাকবেন। কিন্তু স্বাধীনতার ২৯ বছর এই অঞ্চল নিয়ে কমেনি বিবাদ। নাগোরনো কারাবাখের অধিকাংশই আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণে। শুধুমাত্র সীমান্তের পাশের কিছু অঞ্চল আজারবাইজানের নিয়ন্ত্রণে। নতুন এই শান্তি চুক্তির মাধ্যমে বদলালো লাইন অব অ্যাকচুয়াল কন্ট্রোল।

আরও পড়ুন: ভারতীয় মেয়েকে বিয়ে করে এ দেশেই থেকে যান বাইডেনের ‘গ্রেট, গ্রেট, গ্রেট, গ্রেট, গ্রেট গ্র্যান্ডফাদার’

Armenia And Azerbijan

ছবি-সংগৃহীত

সাম্প্রতিক বিবাদের কারণ: প্রায়শই নাগোরনো কারাবাখে চরমে পৌঁছয় সীমান্ত উত্তেজনা। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ফের শুরু হয় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। সেন্টার ফর ইস্টার্ন স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী এবারের বিবাদ শুরু করেছিল আজারবাইজান। আজারবাইজানের জাতীয় পরিষদের চেয়ারম্যান বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, আজারবাইজান সেনারা ৩০ বছর ধরে শত্রু দ্বারা অধিকৃত জমি পুনরুদ্ধারের কাজ করছে। রাশিয়ার সমর্থনেই এই কাজ করতে পারছে আর্মেনিয়া একথাও বলেছিলেন জাতীয় পরিষদের চেয়ারম্য়ান। তারপরেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। যা আসতে আসতে বৃহৎ আকার ধারণ করে।