ওয়াশিংটন: নমোর প্রথম সাক্ষাতেই মুগ্ধ বাইডেন। শুক্রবার প্রথমবার হোয়াইট হাউসে মুখোমুখি হয়েছিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন (Joe biden)। দুই দেশের মধ্যে আগামিদিনে সম্পর্ককে কীভাবে আরও মজবুত করা যায়, তা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর পরিকল্পনা শুনে বিস্মিত হওয়া থেকে নিজেকে আটকাতে পারলেন না জো বাইডেন।
চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই প্রেসিডেন্ট হন জো বাইডেন। সেই সময় ফোনে শুভেচ্ছা জানালেও করোনা সংক্রমণের কারণে সামনাসামনি দেখা হয়নি। তবে ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক যে দুই দেশের কাছেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা নতুন করে বলার বাকি রাখে না। সেই কারণে কোয়াড সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজি হতেই তাঁকেহোয়াইট হাউসে (White House) আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
শুক্রবারের একান্ত বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভারত ও আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করার উপরে জোর দেন। এর জন্য তিনি ৫ ‘T’-র কথাও বলেন, এগুলি হল- ঐতিহ্য় (Tradition), প্রতিভা (Talent), প্রযুক্তি (Technology), বাণিজ্য ( Trade) এবং বিশ্বাসযোগ্যতা (Trusteeship)।
দুই দেশেরই একসঙ্গে কাজ করার সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে বলে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জে বাইডেনকে জানান প্রধানমন্ত্রী। আগামিদিনেও এই ঐতিহ্যকে ধরে রাখার উপর জোর দেন। একইসঙ্গে প্রতিভার উপরও বিশেষ জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, দুই দেশের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যেই অগুণতি প্রতিভা লুকিয়ে রয়েছে। পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে এই প্রতিভাাদের বিশেষভাবে কাজে লাগানো যেতে পারে বলেই জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
আমেরিকার মাটিতে পা রাখতেই প্রবাসী ভারতীয়দের কাজ থেকে যে অভ্যর্থনা পেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী, সেই বিষয়টিরও উল্লেখ করে বলেন, “ভারত ও আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করতে দুই দেশের সাধারণ মানুষ ও তাদের মধ্যে সম্পর্কের দিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। কারণ যে কোনও সম্পর্কের ক্ষেত্রেই মানুষের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।”
বাণিজ্যের কথাও উল্লেখ করতে ভোলেননি প্রধানমন্ত্রী। ভারত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত করতে দুই দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে, এ কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমেরিকার কাছে এমন অনেক জিনিস আছে, যা ভারতের প্রয়োজন। আবার ভারতের কাছে এমন অনেক জিনিস আছে যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য উপকারী হতে পারে। এই দশকে বাণিজ্য একটি উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে।”
প্রযুক্তিই ভবিষ্য়ৎ, তাই দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করতে আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।গান্ধীজির প্রসঙ্গে কথা উঠতেই পারস্পরিক বিশ্বাসের প্রসঙ্গ তোলেন প্রধানমন্ত্রী। মার্কিন প্রেসিডেন্ট গান্ধী জয়ন্তীর কথা বলতেই প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গান্ধীজি সর্বদা বিশ্বাসের কথা বলেছেন। এই বিশ্বাস এমন একটি চিন্তাধারা, যা আগামিদিনে আমাদের পৃথিবীতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে।”
এর পাশাপাশি, জলবায়ু পরিবর্তন থেকে শুরু করে কোয়াড জোটের গুরুত্ব সহ একাধিক বিষয় নিয়ে দুই দেশের রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে কথা হয়। ভারত মার্কিন সম্পর্ক কীভাবে আরও মজবুত করা যায়, তা নিয়ে নতুন দিশা দেখাতে পারে, তা নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা করা হয়।