Russia Captures Chernobyl Nuclear Plant: ৩৬ বছরেও কমেনি তেজস্ক্রিয়তা! যুদ্ধের প্রথম দিনেই কেন সেই চেরেনোবিল দখল নিল রাশিয়া?
Russia-Ukraine Conflict: রাশিয়া থেকে ইউক্রেনে ঢোকার জন্য বেলারুসের পথ ধরেই সীমান্তবর্তী এলাকায় হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনা। এরই মাঝে পড়ে চেরেনোবিল।
কিয়েভ: চেরেনোবিলের ভয়াবহ নিউক্লিয়ার দুর্ঘটনার (Chernobyl nuclear power plant Blast) কথা মনে রয়েছে? ১৯৮৬ সালে ইউক্রেন(Ukraine)-র রাজধানী কিয়েভ (Kyiv) থেকে ১০৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চেরেনোবিলের নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টে পরীক্ষা চলাকালীনই বিস্ফোরণ হয়েছিল। সাদা ধোঁয়ায় ঢেকে গিয়েছিল গোটা আকাশ, শুধু ইউক্রেন নয়, আশেপাশের বেলারুস সহ ইউরোপের একাধিক অংশে ছড়িয়ে পড়েছিল তেজস্ক্রিয় পদার্থ (Radiation)। প্রাণ হারিয়েছিলেন কমপক্ষে প্রায় ৯৩ হাজার মানুষ। রাতারাতি শ্মশানে পরিণত হয়েছিল গোটা শহর। এত বছর কেটে যাওয়ার পরও বিশ্বের অন্যতম তেজস্ক্রিয় ক্ষেত্র হিসাবেই পরিচিত চেরেনোবিল। বৃহস্পতিবার ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করার পরই, সেই নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট দখল করে নিল রাশিয়ান বাহিনী (Russian Army)। যুদ্ধ শুরু হওয়ার প্রথম দিনেই চেরেনোবিলে ইউক্রেনের সেনার সঙ্গে সংঘর্ষ হওয়ায়, ওই প্ল্যান্ট থেকে ফের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ বের হতে শুরু হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হল, এমন ভয়ঙ্কর জায়গা দখল নিতে উদগ্রীব কেন রাশিয়া?
রাশিয়া থেকে ইউক্রেনে ঢোকার জন্য বেলারুসের পথ ধরেই সীমান্তবর্তী এলাকায় হামলা চালাচ্ছে রুশ সেনা। এরই মাঝে পড়ে চেরেনোবিল। রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মুখে বলেছেন যে, তিনি ইউক্রেন দখল করতে চান না। বিচ্ছিন্নতাবাদী যে শক্তিগুলি মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তাদের দমন করতেই ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করা হয়েছে। তবে রুশ সেনার গতিবিধি বলছে অন্য কথা। চেরেনোবিল দখল নেওয়াও সেই ইঙ্গিতই দিচ্ছে।
যুদ্ধের প্রথম দিনেই চেরেনোবিল দখল নেওয়ার প্রধান কারণ হল, বেলারুস থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে পৌঁছনোর সবথেকে সোজা পথ হল চেরেনোবিলই। রাশিয়ান সৈন্য যদি ইউক্রেনকে দখল করতে যায়, তবে তার সবথেকে সোজা উপায় হল রাজধানী দখল করাই। সেই ক্ষেত্রে কিয়েভে পৌঁছতে গেলে চেরেনোবিলের থেকে সোজা পথ আর কিছু হয় না। রুশ সেনাকে ইতিমধ্যেই জমি ছেড়ে দিয়েছে বন্ধু দেশ বেলারুস। সীমান্ত টপকে ইউক্রেনের ভিতরে ঢুকে পড়লেও, লড়াইয়ে সাফল্য পেতে রাজধানীতে পৌঁছনোর সোজা পথই খুঁজছে রাশিয়া।
আমেরিকার প্রাক্তন সেনা প্রধান জ্যাক কেন জানিয়েছেন, চেরেনোবিলে রাশিয়ান সেনার যাওয়ার বা দখল নেওয়ার অন্য কোনও উদ্দেশ্য নেই। তারা চায় সোজাপথে কিয়েভে পৌঁছতে, সেই কারণেই চেরেনোবিলকে নিশানা বানিয়েছে রুশ সেনা। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর তরফেও আমেরিকার এই তত্ত্বকেই সমর্থন করা হয়েছে।
কী ঘটেছিল চেরেনোবিলে?
১৯৮৬ সালের এপ্রিল মাসে চেরেনোবিলের একটি রিয়্যাক্টরে সুরক্ষা পরীক্ষার সময়ই বিস্ফোরণ হয়। এরপরই প্রায় গোটা ইউরোপ জুড়ে ওই নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণের তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে। আমেরিকার পূর্ব অংশেও এই তেজস্ক্রিয়তার আঁচ পৌঁছেছিল। বেলারুস ও রাশিয়াতেও নিউক্লিয়ার বিস্ফোরণের প্রভাব পড়েছিল। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে প্রায় ৯৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। সেই সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন ওই বিপর্যয়টিকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল। ফের একবার চেরেনোবিলের দখল নেওয়ার জন্য ইউক্রেন বাহিনীর সঙ্গে যে সংঘর্ষে জড়িয়েছে রুশ বাহিনী, তাতে ফের একবার তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়েছে। ফের কী তবে বড় কোনও বিপদ ডেকে আনছে রাশিয়া?