মস্কো: আশঙ্কা আগেই করা হয়েছিল, এবার হয়তো তা সত্যিও হতে চলেছে। টানা এক মাস ধরে চাপা উত্তেজনা, টানাপোড়েনের পর গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবারই ইউক্রেন(Ukraine)-র উপর সামরিক অভিযান চালানোর কথা ঘোষণা করেন রাশিয়া(Russia)-র প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন (Vladimir Putin)। এরপরেই বিশ্বের অন্যান্য শক্তিধর দেশগুলি আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যে প্রয়োজনে ইউক্রেনের উপরে নিউক্লিয়ার হামলা(Nuclear Attack)-ও চালাতে পারে রাশিয়া। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরই ইউক্রেনের পাশে আমেরিকা, ব্রিটেন, ফ্রান্সের মতো দেশগুলি দাঁড়ানোয়, বদলা নিতে রবিবার রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তাঁর দেশের পরমাণু অস্ত্র প্রতিরোধী দলকে সতর্ক থাকতে বললেন। রাশিয়ার নিউক্লিয়ার শক্তি ডেটেরেন্স ফোর্সকে উচ্চ সতর্কতায় থাকার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই নির্দেশের কারণ হিসাবে তিনি জানিয়েছেন, পশ্চিমী দেশগুলি তাঁর দেশের বিরুদ্ধে শত্রুতামূলক আচরণ করছে।
গোটা বিশ্বমঞ্চই যেখানে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার এই আগ্রাসন নিয়ে চিন্তিত, সেই সময়ে রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিনের এই নির্দেশ আরও উদ্বেগ বাড়াচ্ছে। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভাল, মস্কোর কাছেই বিশ্বের সবথেকে বড় নিউক্লিয়ার অস্ত্র ভাণ্ডার রয়েছে। একইসঙ্গে দেশের সামরিক শক্তিকে মজবুত করছে ব্যালেস্টিক মিসাইল।
রবিবারই রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বলেন, “আমি দেশের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ও সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফকে নির্দেশ দিয়েছি তারা যেন রাশিয়ান ডেটেরেন্স ফোর্সকে কমব্যাট স্পেশাল মোডে প্রস্তুত থাকার কথা বলেন”। এই নির্দেশের কারণ ব্যাখ্য়া করে তিনি আরও বলেন, “আপনারা সকলেই দেখেছেন পশ্চিমী দেশগুলি কেবল অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেই আমাদের সঙ্গে অনায্য ব্যবহার করছে না, ন্যাটোর সদস্যগুলির উচ্চপদস্থ আধিকারিকরাও আমাদের দেশের বিরুদ্ধে আগ্রাসী মনোভাব প্রকাশ করে বিবৃতি দিচ্ছেন।”
অন্যদিকে,ইউক্রেনের সঙ্গে চারদিন ধরে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চালানোর পর রবিবার রাশিয়ার তরফে ইউক্রেনকে আলোচনায় বসার প্রস্তাব দেওয়া হয়। পুতিন বেলারুশে বৈঠকে বসার প্রস্তাব দিলেও, সেই প্রস্তাব প্রথমে খারিজ করে দেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জ়েলেনস্কি। তিনি জানিয়েছিলেন, মিনস্ক যেহেতু নিজেই রাশিয়ার আগ্রাসনের ভিত, তাই এই দেশে বৈঠক করার প্রশ্নই ওঠে না। পরে বেলারুশের নেতা আলেকজাণ্ডার লুকাশেনকোর সঙ্গে কথা বলেন তিনি। শেষ অবধি জানা গিয়েছে, বেলারুশ সীমান্তেই রাশিয়ার সঙ্গে বৈঠকে বসার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলে আগামী এক-দু’দিনের মধ্যেই তারা বৈঠকে বসতে পারেন।