US FDA: অস্তিত্ব সঙ্কটে চশমা, যুগান্তকারী এই এক ড্রপেই বাড়ছে দৃষ্টিশক্তি!

US FDA: সম্প্রতি মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফডিএ এমন একটি চোখের ড্রপ অনুমোদন করেছে, যা কার্যকরভাবে চশমাকে প্রতিস্থাপন করার দাবি করছে।

US FDA: অস্তিত্ব সঙ্কটে চশমা, যুগান্তকারী এই এক ড্রপেই বাড়ছে দৃষ্টিশক্তি!
প্রতিদিন যারা চশমা ব্যবহার করে, তারাই জানে চশমার ব্যবহার কতটা ঝকমারি হতে পারে
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 15, 2022 | 10:47 PM

ওয়াশিংটন: দুর্বল দৃষ্টিশক্তির ব্যক্তিদের কাছে চশমা নিঃসন্দেহে একটি আশীর্বাদ। গত কয়েক শতাব্দী ধরে পড়াশোনা থেকে শুরু করে চলাফেরা – জীবনের প্রতিটি কাজে দৃষ্টিশক্তির প্রতিবন্ধকতার প্রতিকার হিসেবে মানুষ চশমা ব্যবহার করে এসেছে। চশমা যে শুধু দুর্বল দৃষ্টিশক্তির প্রতিকার তাই নয়, চশমা কারোর ব্যক্তিত্বের অংশও বটে। নেতাজি বা গান্ধীজি থেকে জন লেনন – প্রত্যেককেই তাঁদের আইকনিক চশমা দিয়েই চেনা সম্ভব। এর মধ্যে কন্ট্যাক্ট লেন্স এসেছে বটে, কিন্তু চশমার জায়গা নিতে পারেনি সে। তবে, এইবার বোধহয় চশমার দিন গেল। অন্তত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। সম্প্রতি মার্কিন ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন বা এফডিএ এমন একটি চোখের ড্রপ অনুমোদন করেছে, যা কার্যকরভাবে চশমাকে প্রতিস্থাপন করার দাবি করছে।

প্রতিদিন যারা চশমা ব্যবহার করে, তারাই জানে চশমার ব্যবহার কতটা ঝকমারি হতে পারে। বাড়িতে বা গাড়িতে ভুলে চশমা ফেলে আসার ঘটনা হামেশাই ঘটে। এছাড়া, কোভিড-১৯ মহামারি এই সময়ে ফেস মাস্কের সঙ্গে চশমা পড়া মানে, কাচে বাষ্প জমে অন্ধ হয়ে যাওয়া। আবার একটু অসতর্ক হলে চশমা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে। কন্ট্যাক্ট লেন্সের আবার অন্য ঝামেলা। লেন্স পরিষ্কার করো। বারবার করে লেন্স বদল করো ইত্যাদি। এই অবস্থায়, দুর্বল দৃষ্টিশক্তির চিকিৎসায় যুগান্ত কারী পরিবর্তন আনতে চলেছে ভুইটি (Vuity) নামে একটি আই ড্রপ বা চোখের ওষুধ। এমনটাই দাবি করা হচ্ছে। এই ড্রপ চোখে দিলেই আর দুর্বল দৃষ্টিশক্তির ব্যক্তিদের চশমা ব্যবহার করতে হবে না।

তবে এখনও পর্যন্ত চশমাকে পুরোপুরি প্রতিস্থাপন করার মতো ক্ষমতা অর্জন করতে পারেনি ভুইটি। এই ওষুধটি আপাতত এটি বয়স-সম্পর্কিত কাছের দৃষ্টিশক্তি উন্নত করার দাবি করছে। অর্থাৎ, বয়সের সঙ্গে সঙ্গে কাছের জিনিস দেখার ক্ষেত্রে যে দুর্বলতা তৈরি হয়, এখনও পর্যন্ত তারই সমাধান দিচ্ছে ভুইটি আই ড্রপ। এক্সপ্রেস ডট ইউকে-র এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই চোখের ড্রপ প্রতি ছয় ঘণ্টায় একবার করে প্রয়োগ করতে হবে। চোখে দেওয়ার ১৫ মিনিটের মধ্যে এটি কাজ করতে শুরু করবে। অর্থাৎ, পরের ছয় ঘন্টা কাছের জিনিস দেখতে আর অসুবিধা হবে না।

রিপোর্ট অনুসারে, এর কাজ যুগান্তকারী হলেও, ওষুধটি যে খুব নতুন কিছু, তা নয়। এটি আসলে ‘পাইলোকারপাইন’ নামে একটি সুপরিচিত যৌগেরই অন্য এক রূপ। চোখের টিয়ার ফিল্মের পিএইচ মাত্রার সঙ্গে দ্রুত খাপ খাইয়ে নিতে পারে, এমনভাবেই গবেষকরা এটিকে তৈরি করেছেন। কোনও তরল কতটা ক্ষারীয় বা কতটা অম্ল, তা মাপা হয় এই পিএইচ মাত্রা দিয়ে। চোখের তারা বা পিউপিলকে সংকুচিত করার প্রাকৃতিক ক্ষমতা রয়েছে মানব-চক্ষুর। এতে দৃষ্টিশক্তি বাড়ে। যে কারণে, আমরা কিছু দেখতে সমস্যা সমস্যা হলে, চোখ ছোট করে দেখার চেষ্টা করি। মানব-চক্ষুর এই সংকুচিত হওয়ার স্বাভাবিক ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়েই ওষুধটি দূরের দৃষ্টিশক্তিকে ঠিক রেখে কাছের দৃষ্টিশক্তি সাময়িকভাবে বাড়িয়ে দেয়। ফলে,

এই ড্রপটির দুটি ব়্যান্ডমাইজড কন্ট্রোল ট্রায়াল করা হয়েছে। সব মিলিয়ে অংশ নিয়েছিলেন প্রায় ৭৫০ জন। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই কোনও গুরুতর বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। তবে, অল্প সংখ্যক কিছু রোগীর ক্ষেত্রে হাল্কা মাথাব্যথা, চোখে লাল ভাবের মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা গিয়েছে। গবেষকদের বিশ্লেষণ অনুসারে ড্রপটি সব বয়সের রোগীরাই নিতে পারেন। তবে, সবথেকে কার্যকর হবে ৪০ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মানুষদের ক্ষেত্রে।