ওয়াশিংটন: নতুন সরকারের ঘোষণা করেছে তালিবান (Taliban)। সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের অনুষ্ঠানেও আমন্ত্রণ পেয়েছে চিন, পাকিস্তান, রাশিয়ার মতো দেশগুলি। ক্ষমতা দখলের পরি আচমকা তালিবানের সঙ্গে সখ্যতা বাড়ানো নিয়ে এ বার কটাক্ষ করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন(Joe Biden)। মঙ্গলবার তিনি বলেন, “আমি নিশ্চিত চিন তালিবানের সঙ্গে কোনও প্রকার সমঝোতা করতে চাইবেই।”
গত ১৫ অগস্ট আফগানিস্তান (Afghanistan) দখল করলেও বিভিন্ন কারণে বারবার পিছিয়ে যাচ্ছিল তালিবানের সরকার গঠনের প্রক্রিয়া। অবশেষে মঙ্গলবার নতুন সরকারের ঘোষণা করে তালিবান। মন্ত্রিসভার ৩৩ সদস্যের নামও ঘোষণা করা হয়। নয়া সরকারের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে চিন (China), পাকিস্তান (Pakistan), রাশিয়া (Russia), তুরস্ক (Turkey), ইরান (Iran) ও কাতার(Qatar)-কে আমন্ত্রণও জানিয়েছে। এই বিষয়েই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, “তালিবানের সঙ্গে সত্যিই সমস্যা রয়েছে চিনের। তাই ওরা তালিবানের সঙ্গে কোনও প্রকার সমঝোতায় আসার চেষ্টা করবেই, এ বিষয়ে আমি নিশ্চিত। একইভাবে পাকিস্তান ও রাশিয়াও চেষ্টা চালাবে। ওরা সকলেই কী করা উচিত, তা বোঝার চেষ্টা করছে।”
তালিবান বাহিনী আফগানিস্তান দখলের পরই আমেরিকা ও সঙ্গী সাতটি দেশ তালিবানের বিষয়ে মিলিতভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা স্থির করেছে। ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটনের তরফে আফগানিস্তানের অর্থভাণ্ডারে তালিবান যাতে হাত লাগাতে না পারে, তার জন্য অ্যাকউন্টের গতিবিধি বন্ধ করে দিয়েছে। নিউইয়র্কের ফেডারেল রিজার্ভ দ্বারাই এতদিন আফগানিস্তানের অর্থভাণ্ডার নিয়ন্ত্রিত হত।
এ দিকে, বর্তমানে তালিবানের প্রয়োজন বিপুল অর্থ। এই পরিস্থিতিতে চিন, রাশিয়ার মতো দেশ তালিবানকে অর্থসাহায্য করতে পারে বলেই আশঙ্কা আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞদের। এই প্রসঙ্গে প্রশ্ন করতেই প্রেসিডেন্ট বাইডেন জানান, চিন তালিবদের অর্থ সাহায্য করবে, এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত।
জি-২০ দেশগুলির বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইটালিও আফগানিস্তান প্রসঙ্গে একটি ভার্চুয়াল বৈঠকের আয়োজন করার চেষ্টা করছে। তবে চিন ও রাশিয়াও এই গোষ্ঠীরই সদস্য় হওয়ায় এবং বিভিন্ন দেশের মধ্যে আফগানিস্তান নিয়ে মতপার্থক্য় সৃষ্টি হওয়ায় এখনও অবধি কোনও নির্দিষ্ট দিন স্থির করা হয়নি।
এ দিকে, গত ২৯ অগস্টই মার্কিন স্টেট সেক্রেটারি অ্যান্টনি ব্লিনকিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন চিনের স্টেট কাউন্সিলর তথা বিদেশমন্ত্রী ওয়াং ই। সেই ফোনালাপে চিনের তরফে অনুরোধ জানানো হয়েছিল, আন্তর্জাতিক মহল যেন তালিবানের সঙ্গে কথা বলে এবং তাদের সঠিক পথে চালিত হতে সাহায্য করে।
চিনের তরফে এখনও অবধি তালিবানকে আফগানিস্তানের নতুন শাসক হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার না করা হলেও, গত জুলাই মাসেই মোল্লা বরাদর, যিনি বর্তমানে আফগানিস্তানের ডেপুটি প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, তার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। সেই সময়ও চিনের তরফে জানানো হয়েছিল, তালিবানদের উপরে অহেতুক চাপ সৃষ্টি না করে, তাদের সরকার গঠনের প্রক্রিয়ায় সাহায্য করা হয়।
আরও পড়ুন: শান্তি চাইছে তালিবান! নয়া সরকারের প্রথম বার্তাতেই শরিয়া আইনে জোর সুপ্রিম নেতা আখুন্দজাদার
আরও পড়ুন: ‘এটা উচিত হল না’, আমেরিকার এমন কাজে গা জ্বলছে তালিবানের