Taiwan: তাইওয়ানে ‘যুদ্ধ প্রস্তুতি’, চিনের ভয়ে ‘হাই অ্যালার্ট’-এ সেনা…ঈশান কোনে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ?

Taiwan: তাইওয়ানে চলছে চিনের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি। সেনাবাহিনীকে রাখা হয়েছে হাই অ্যালার্ট-এ। নাগরিকদের করানো হচ্ছে যুদ্ধকালীন অনুশীলন। আশঙ্কা বাড়ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের।

Taiwan: তাইওয়ানে 'যুদ্ধ প্রস্তুতি', চিনের ভয়ে 'হাই অ্যালার্ট'-এ সেনা…ঈশান কোনে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ?
তাইওয়ানে চলছে চিনের সঙ্গে যুদ্ধের প্রস্তুতি, আশঙ্কা বাড়ছে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 02, 2022 | 8:20 AM

তাইপেই সিটি: তাইওয়ান জুড়ে সাইরেন বাজছে। রাস্তাঘাট খাঁখাঁ করছে। অধিকাংশ নাগরিককে আশ্রয়কেন্দ্রগুলিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। যারা তারপরও রাস্তায় রয়েছে, তাদের মাথার উপর হাত দিয়ে দৌড়তে নির্দেশ দিচ্ছে পুলিশ। না, সত্যিকারের যুদ্ধ পরিস্থিতি নয়। তবে, তার থেকে কমও কিছু নয়। গত সপ্তাহে তাইওয়ান জুড়ে প্রতিটি শহর ৩০ মিনিটের জন্য স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এটা ছিল দেশব্যাপী সামরিক মহড়া। আসলে, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্য়ে ক্রমেই উত্তেজনা বাড়ছে এশিয়া মহাদেশের এই অংশেও। মার্কিন স্পিকার ন্যান্সি পেলোসির সম্ভাব্য সফরের বিষয়ে চিনের কড়া সতর্কতায় উত্তেজনার আঁচ এখন পুরো গনগনে বলা চলে। মঙ্গলবার (২ অগস্ট) এই অঞ্চলে সফরে আসছেন ন্যান্সি পেলোসি। যে বারুদ থেকে লেগে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগুন, আশঙ্কা করছেন আন্তর্দজাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।

তিনি তাইওয়ানে আসবেন কি না তাই নিয়ে ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা চলছিল। এর মধ্যে রবিবার (৩১ জুলাই) মার্কিন স্পিকারের কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার তাঁর এশিয়া সফর শুরু হবে। তিনি সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং জাপানে যাবেন। সফর কর্মসূচিতে কোথাও তাইওয়ানের কোনও উল্লেখ নেই। তাই বলে উত্তেজনা কমছে না।

দেশব্যাপী সামরিক মহড়ার পাশাপাশি, সূত্রের খবর তাইওয়ানের ন্যাশনাল ডিফেন্স মিনিস্ট্রি তাদের সমস্ত অফিসার এবং জওয়ানদের ছুটি বাতিল করেছে। বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনীকে “যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত” হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের সকল সদস্যকে একত্রিত করা হচ্ছে।

অন্যদিকে বসে নেই বেজিং-ও। গত সপ্তাহেই চিন সাফ জানিয়েছিল, মার্কিন হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস-এর স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি যদি ‘চিনের থেকে স্বাধীনতা থাকতে চায় এমন দেশটিতে সফর করেন, তবে তাদেরও প্রতিক্রিয়া জানাতে হবে। তাদের সেনাবাহিনী হাত গুটিয়ে বসে থাকবে না।” পেলোসির সফরসূচিতে তাইওয়ান নেই জানানোর পরও সোমবার, চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র ঝাও লিজিয়ান বলেছেন, “পেলোসি তাইওয়ান সফর করলে তা চিনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে চরম হস্তক্ষেপ করা হবে। যা অত্যন্ত গুরুতর উন্নয়ন এবং গুরুতর পরিণতির দিকে যেতে পারে। চাইনিজ পিপলস লিবারেশন আর্মি বসে থাকবে না। চিন তার সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক অখণ্ডতা রক্ষার জন্য দৃঢ় এবং শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া জানাবে।” পিএলএ কী ধরনের ব্যবস্থা নেবে তা সরাসরি না জানিয়ে ঝাও বলেছেন: “অপেক্ষা করুন, দেখতে পাবেন।” তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ কিছু ভিডিয়ো প্রকাশ করে দাবি করা হয়েছে, তাইওয়ানের নিকটবর্তী চিনা উপকূলে ভারি অস্ত্রশস্ত্র মোতায়েন করা হচ্ছে।

বেজিং বরাবরই তাইওয়ানকে চিন রাষ্ট্রের অংশ বলে মনে করে। তবে, এখনও পর্যন্ত তারা এই দ্বীপরাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণে আনতে শক্তি প্রয়োগ করেনি। তবে, দ্বীপটির দাবিও কখনও ছাড়েনি। তাইওয়ানে তৃতীয় কোনও কোনও দেশের পদক্ষেপকে তারা চিনা সার্ববৌমত্বের উপর আঘাত বলে মনে করে। অন্যদিকে তাইওয়ান চিনের এই সার্বভৌমত্বের দাবি প্রত্যাখ্যান করে পাল্টা বলে যে, দ্বীপটির ভবিষ্যত শুধুমাত্র সেখানকার জনগণই নির্ধারণ করতে পারে।

কিন্তু, চিনের মিত্রশক্তি রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছে তাইওয়ানের ক্ষেত্রে বেজিং-ও মস্কোর পদাঙ্ক অনুসরণ করতে পারে। এরই মধ্যে ন্যান্সি পেলোসির সফরকে কেন্দ্র করে চিনা হুমকি সেই সম্ভাবনাকে আরও জোরালো করে তুলেছে। শেষ পর্যন্ত তাইওয়ানে যদি বেজিং কোনও নজিরবিহীন পদক্ষেপ করে, সেই ক্ষেত্রে পশ্চিমী শক্তি বনাম চিন-রাশিয়া – তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের বারুদের গন্ধ কিন্তু বাতাসে ভাসছে।