AQI
Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

Bangladesh-Adani Power Supply Deal: আদানির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে ‘পথ’ খুঁজছেন ইউনূস?

Bangladesh-Adani Power Supply Deal: আন্তজার্তিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা লেনদেন নিয়ে আদানির চুক্তিতে কোনো অনিয়ম, অবৈধ আর্থিক বিনিময় হয়েছে কিনা– খুঁজে দেখছে বাংলাদেশ।

Bangladesh-Adani Power Supply Deal: আদানির সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে 'পথ' খুঁজছেন ইউনূস?
| Updated on: Dec 02, 2024 | 6:52 PM
Share

শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই চরম অস্থিরতার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। আইন শৃঙ্খলা থেকে অর্থনৈতিক দশা সব কিছুরই যেন বেহাল দশা। তারই সঙ্গে বাড়ছে সংখ্যালঘু এবং হিন্দুদের উপর অত্যাচারের ঘটনাও। যা নিয়ে সরব গোটা বিশ্ব।

এই অস্থির পরিস্থিতির মধ্যেই আরও এক ফ্যাসাদে পড়েছে মহম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। তা হল বিদ্যুৎ বিভ্রাট। বাংলাদেশের একটা বড় অংশের বিদ্যুৎ সরবরাহ হয়, আদানি গোষ্ঠীর সংস্থা ‘আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেড’ থেকে। কিন্তু দীর্ঘ দিন ধরেই বকেয়া বিদ্যুৎ বিল মেটাচ্ছে না বাংলাদেশ। যার পরেই গত ৩০ অক্টোবরের মধ্যে বকেয়া ৮৪৬ মিলিয়ন ডলার মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল ইউনূস সরকারকে। কিন্তু সেই কথাতেও কর্ণপাত করেনি পড়শি দেশ। ফলে নভেম্বর মাসের গোড়ার দিকেই বিদ্যুৎ উৎপাদন অর্ধেক করে দেয় আদানির সংস্থা। ১৪৯৬ মেগাওয়াটের পরিবর্তে ৭০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে সংস্থা।

৭ নভেম্বরের মধ্যে বকেয়া অর্থ মেটানো না হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। পুরো টাকা মেটাতে না পারলেও, ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ‘লেটার অব ক্রেডিট’ গ্যারান্টি হিসাবে চেয়েছিল আদানি সংস্থা। কৃষি ব্যাঙ্কের মাধ্যমে পেমেন্ট গ্যারান্টি জোগাড় করার চেষ্টা করলেও, শর্তের মিল না হওয়ায় সেই গ্যারান্টিও দিতে ব্যর্থ হয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার।

এদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেক হয়ে যাওয়ায় সঙ্কটে পড়েছে বাংলাদেশে। নিজস্ব পাওয়ার প্ল্যান্টেও জ্বালানি সঙ্কট দেখা গিয়েছে। এমতাবস্থায় এবার আদানি গোষ্ঠীর সঙ্গে হওয়া হাসিনা সরকারের চুক্তি নিয়ে নতুন করে ভাবছে ইউনূস সরকার।

সূত্রের খবর দেশের অন্তর্বর্তী সরকার কিছু দিন ধরেই এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার পথ খুঁজছে। আন্তজার্তিক বিশ্লেষকরা বলছেন, নানা লেনদেন নিয়ে আদানির চুক্তিতে কোনো অনিয়ম, অবৈধ আর্থিক বিনিময় হয়েছে কিনা– খুঁজে দেখছে বাংলাদেশ। এমন কোনও অনিয়মের অছিলায় বাংলাদেশ আদানিদের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে দরকষাকষি বা বাতিলের পথে হাঁটতে পারে।

যেমন কর ছাড় সহ পাওয়া বেশ কিছু সুবিধার বিষয়ে বাংলাদেশকে নাকি কিছু জানায়নি আদানি গ্রুপ। যা বেআইনি বলে মনে করছে ইউনূস সরকারের ঘনিষ্টরা। যা চুক্তির লঙ্ঘন বলেও মনে করছেন বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশের সঙ্গে আদানি গ্রুপের এই চুক্তিতে নানা অনিয়ম ও অসংগতি রয়েছে বলেও প্রথম থেকে দাবি করে সরব হয়েছিল হাসিনা বিরোধীরা। বিশ্লেষকদের একাংশের মত সম্প্রতি আদানি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ওঠা একাধিক অনিয়মের অভিযোগকেও হাতিয়ার করে এগোতে চাইতে পারে বাংলাদেশ সরকার।

ইউনূস সরকার এই চুক্তি বাতিল করার জন্য নানা উপায় অবলম্বন করছে। জানা গিয়েছে, এক আইনজীবি এই চুক্তি বাতিল করার দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ হাইকোর্টে অ্যাপিল করেছে। সেই অ্যাপিলের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত একটি কমিটি তৈরি করে চুক্তির খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছে। আশা করা হয়েছে আগামী ফ্রেব্রুয়ারি মাসের মধ্যেই সেই তদন্ত শেষ হবে। সুতরাং, এই চুক্তির ভবিষ্যৎ নির্ধারিত হতে পারে তখনই।

প্রসঙ্গত, রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে বাংলাদেশের অবস্থা এখন অনেকটা সাপের ব্যাঙ খাওয়ার মতো। না পারছে গিলতে না পারছে উগরে দিতে। বিপুল টাকা বকেয়া হয়ে যাওয়ায় এমনিতেই ফ্যাসাদে পড়েছে সরকার। অন্যদিকে বাংলাদেশের ভাঁড়ারের অবস্থা খুব একটা ভাল নয়। সূত্রের খবর মার্কিন ডলারেও টান পড়েছে। এখন এই পরিস্থিতিতে চুক্তি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়ে বাংলাদেশ পিঠ বাঁচাতে চাইছে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। বকেয়া টাকা নিয়েও বাংলাদেশ বিদ্যুৎ বিভাগ ইতিমধ্যেই দাবি করেছে, আগের সব বকেয়া অর্থ মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে গত জুলাই মাস থেকে আদানি গোষ্ঠী বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। পিডিবি সাপ্তাহিক ১৮ মিলিয়ন ডলার করে আদানি পাওয়ারকে দিলেও সংস্থা নাকি প্রতি সপ্তাহে অতিরিক্ত ২২ মিলিয়ন ডলার চার্জ করেছে । সেই কারণেই বিপুল পরিমাণ অর্থ বকেয়া রয়ে গিয়েছে।