Indian Citizenship: বাবা-মা আমেরিকান, মেয়ের জন্ম ভারতে, তারপর দেশহীন! পায়নি কোনও দেশেরই পাসপোর্ট! আদালত বলল…
Delhi High Court: বাবা-মা আমেরিকান। ভারতের আইন অনুযায়ী ভারতে বড় হওয়া সত্ত্বেও সন্তান ভারতের নাগরিক নন। আবার ভারতে জন্ম ও এ দেশেই বড় হওয়ায় আমেরিকার নাগরিকত্বও পাননি তিনি।

বাবা-মায়ের জন্ম ভারতে। পরবর্তীতে পেয়েছেন আমেরিকান পাসপোর্ট। আর তাঁদের মেয়ের ভারতে জন্ম হলেও সে কোনও দেশেরই নাগরিক নয়। গল্প মনে হলেও এই ঘটনা অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। এমনই ঘটনা ঘটেছে অন্ধ্রপ্রদেশের রচিতা ফ্রান্সিস জেভিয়ারের ক্ষেত্রে।
২০০৬ সালে অন্ধ্রপ্রদেশের নিদামানুরুতে জন্মগ্রহণ করেন রচিতা। তাঁর বাবা ও মা তাঁদের জন্মের সময় ভারতের নাগরিক হলেও, পরবর্তীতে তাঁরা ভারতের নাগরিকত্ব ছেড়ে দেন ও আমেরিকার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। ২০০১ সালে রচিতার বাবা ও ২০০৫ সালে রচিতার মা আমেরিকান পাসপোর্ট পান। ফলে ভারতীয় আইন অনুযায়ী, ২০০৬ সালে রচিতার জন্মের সময় তাঁর বাবা ও মা ভারতের নাগরিক ছিলেন না। আর এই কারণেই পরবর্তীতে ভারতে বড় হওয়া রচিতাও ভারতের আইন অনুযায়ী ভারতের নাগরিক নন। আবার ভারতে জন্ম ও এ দেশেই বড় হওয়ায় আমেরিকার নাগরিকত্বও পাননি রচিতা।
২০১৯ সালে রচিতা পাসপোর্টের আবেদন করেছিলেন। আর তখনই তিনি এই সমস্যা সম্পর্কে জানতে পারেন। আর এর পরই তিনি দিল্লি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। নাগরিকত্ব আইনের উপর ভিত্তি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আদালতে জানিয়েছিল, রচিতাকে ‘ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি’ হিসাবে বিবেচনা করা যাবে না। যেহেতু তাঁর কাছে ভারতে থাকার কোনও বৈধ নথি ছিল না, তাই তাঁকে ‘অবৈধ অভিবাসী’ গণ্য করার কথা বলেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক।
কিন্তু এই মামলায় ২০২৪ সালের ১৫ মে দিল্লি হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারক রচিতার এই অবস্থানকে ‘অনন্য’ বলেন। যেহেতু রচিতার জন্ম ভারতে ও তিনি ভারতের বাইরে কখনও যাননি, এ ছাড়াও তাঁর বাবা মায়ের ‘ওভারসিজ সিটিজেন অফ ইন্ডিয়া’ বা OCI কার্ড ছিল। সেই কারণে রচিতা ‘অবৈধ অভিবাসী’ নন, বরং ‘ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তি’ হিসাবে গণ হবেন, বলেন বিচারক। অতঃপর ২০২৪ সালের ৩১ জুলাই ভারতের নাগরিকত্ব পান রচিতা।
এরপরই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে। তবে রচিতার নাগরিকত্ব পাওয়ার বিষয়ে কোনও বিরোধিতা করেনি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। তারা সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারকের ঘোষণাকে চ্যালেঞ্জ করেছে। স্বরাষ্ট মন্ত্রক জানিয়েছে, শুধুমাত্র রচিতার জন্যই ‘অবৈধ অভিবাসী’ শব্দবন্ধ প্রযোজ্য হবে না। কারণ রচিতার জন্ম ভারতে ও তিনি ভারতের বাইরে কখনও যাননি।
দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি কে উপাধ্যায় এবং বিচারপতি তুষার রাও গেদেলার ডিভিশন বেঞ্চের কাছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আবেদন জানিয়েছে যাতে রচিতার মামলার রায়কে একটি পৃথক মামলা হিসেবে বিবেচনা করা উচিত, নজির হিসেবে নয়। অর্থাৎ আগামীতে এমন কোনও ঘটনার জন্য যেন এই মামলায় রায়কে উল্লেখ করা না হয়।
