লকডাউনের এক বছরে দেশে বেকারত্বের হার বৃদ্ধি, ফেব্রুয়ারিতে হার প্রায় ৭ শতাংশ
নতুন বছরের শুরুতে এই বেকারত্বের হারের সামান্য উন্নতি হয়। জানুয়ারিতে এই হার কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬.৫ শতাংশে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে তা ফের খানিকটা বেড়ে হয়েছে ৬.৯ শতাংশ। যা চিন্তার বিষয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
কলকাতা: লকডাউনের জেরে দেশে বেকারের সংখ্যা (Unemployment) যে উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, তা ইতিমধ্যেই সামনে এসেছে। কিন্তু লকডাউন পেরিয়ে গেলেও দেশে বেকারের সংখ্যা যে খুব একটা হ্রাস পায়নি সেই তথ্যই এবার সামনে এল।
সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকনমি বা সিএমআইই যে সর্বশেষ তথ্য পেশ করেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে চলতি বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে ৬.৯ শতাংশে। যা গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে ছিল ৭.৮ শতাংশ। তবে ২০২০-এর মার্চ অর্থাৎ লকডাউন জারির মাসে এই হার কিছুটা বেড়ে হয়েছিল ৮.৮ শতাংশ।
সিএমআইই-এর তথ্য বলছে, লকডাউনের মধ্যে এপ্রিল ও মে মাসে দেশে বেকারত্বের হার তুঙ্গে উঠেছিল। ওই দুই মাসে বেকারত্বের হার ছিল যথাক্রমে ২৩.৫ শতাংশ ও ২১.৮ শতাংশ। তবে তারপরে বেশ খানিকটাই কমেছে বেকারত্বের হার।
যদিও এই হ্রাস খুব একটা আশাপ্রদ নয় বলেই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তবে জুন মাস থেকে দেশে বেকারত্বের হার ক্রমশই কমেছে বলেই এই সিএমআইই-এর সমীক্ষায় বলা হয়েছে। জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সাত মাসে এই বেকারত্বের হার দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১০.২ শতাংশ (জুন), ৭.৪ শতাংশ (জুলাই), ৮.৩ শতাংশ (অগস্ট), ৬.৭ শতাংশ (সেপ্টেম্বর), ৭ শতাংশ (অক্টোবর), ৬.৫ শতাংশ (নভেম্বর) এবং ৯.১ শতাংশ (ডিসেম্বর)।
কিন্তু নতুন বছরের শুরুতে এই বেকারত্বের হারের সামান্য উন্নতি হয়। জানুয়ারিতে এই হার কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৬.৫ শতাংশে। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে তা ফের খানিকটা বেড়ে হয়েছে ৬.৯ শতাংশ। যা চিন্তার বিষয় বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গত বছর জুলাইয়ের পরবর্তী সময় থেকে বেকারত্বের এই হারে বেশ কিছুটা উন্নতি পরিলক্ষিত হয়েছে। কিন্তু ডিসেম্বর ও ফেব্রুয়ারির তথ্য বলছে এই ক্ষেত্রে আরও কিছুটা ধারাবাহিকতার প্রয়োজন রয়েছে। তা না হলে মাঝে মাঝেই এই হার বৃদ্ধির একটা সম্ভাবনা রয়েছে। যা দেশের পক্ষে খুব একটা ইতিবাচক নয়।
তথ্য বলছে, উৎপাদন, কৃষি ও পরিষেবা ক্ষেত্রে গত তিন-চার মাসে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি হয়েছে। কিন্তু সেই অনুপাতে কর্মসংস্থানের হার সেভাবে বাড়েনি, যা অত্যন্ত নেতিবাচক। যদি এই ক্ষেত্রগুলির বৃদ্ধির সঙ্গে কর্মসংস্থানের হার সমানুপাতে বাড়ত, তাহলে সমগ্র চিত্র অন্যরকম হত বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রকের তথ্য বলছে, গত অক্টোবর মাসে চালু হওয়ার পর চলতি মাসের ১০ তারিখ পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকারের আত্মনির্ভর ভারত প্রকল্পে প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ কাজ পেয়েছেন। ফলে এটা স্পষ্ট বেসরকারি ক্ষেত্রে এই সময়ের মধ্যে কর্মসংস্থান হওয়ার সম্ভাবনা ছিল, ততটা হয়নি। এই দিকটি গুরুত্ব দিয়ে না দেখলে বেকারত্বের হার কমার সম্ভাবনা কম বলেই জানিয়েছে সিএমআইই।
আরও পড়ুন: টানা ২৫ দিন অপরিবর্তিত থাকার পর বুধবার সামান্য দাম কমল পেট্রল-ডিজেলের