লখনউ: বিজেপি (BJP)থেকে অখিলেশের দলে যোগ দিতে না দিতেই ঘাড়ে চেপে বসল বিপদ। শুক্রবারই সদ্য দলত্যাগী দুই মন্ত্রী ও একাধিক বিধায়ক সমাজবাদী পার্টি(Samajwadi Party)-তে যোগদান করেন। কিন্তু জাতীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকায় উল্লেখিত জনসংখ্যার বেশি জমায়েত হওয়ায়, করোনাবিধি ভঙ্গ (COVID Norms Floating) করার অভিযোগে ২৫০০ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির নামে অভিযোগ দায়ের করল উত্তর প্রদেশ পুলিশ।
বিধানসভা নির্বাচনের আর হাতে গোনা একমাস বাকি, তার আগেই দলবদলের খেলা শুরু হয়েছে উত্তর প্রদেশে। একের পর এক বিজেপি নেতা, বিধায়করা দল ছেড়ে সমাজবাদী পার্টি বা অন্য কোনও দলে নাম লেখাচ্ছেন। চলতি সপ্তাহেই বিজেপি ছাড়েন শ্রমমন্ত্রী স্বামী প্রসাদ মৌর্য্য। তাঁর দেখাদেখি আরেক মন্ত্রী ধর্ম সিং সাইনিও ইস্তফা দেন। একাধিক বিধায়কও একে একে ইস্তফা জমা দেন। এরপর শুক্রবারই স্বামী প্রসাদ মৌর্য্য, ধর্ম সিং সাইনি ও ৫ জন প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক ও ১ জন আপনা দলের বিধায়ক অখিলেশ যাদবের উপস্থিতিতে সমাজবাদী পার্টিতে যোগদান করেন।
এই যোগদান অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করেই কয়েকশো সমর্থক ভিড় জমিয়েছিলেন সমাজবাদী পার্টি অফিসের বাইরে। সামাজিক দূরত্ব তো দূরের কথা, অধিকাংসের মুখে মাস্কটুকুও ছিল না। এই ভিড়ের ছবি ও ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরই নড়েচড়ে বসে পুলিশ প্রশাসন। গৌতম পল্লী পুলিশ স্টেশনে নির্বাচনী বিধিভঙ্গ ও মহামারি আইনে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সংবাদসংস্থা পিটিআই সূত্রে খবর, মূলত করোনাবিধি ভঙ্গেরই অভিযোগ জানানো হয়েছে এবং তদন্তও শুরু হয়েছে। জেলা প্রশাসন ও পুলিশের একটি দল সমাজবাদী পার্টি অফিসেও যান।
করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই নির্বাচন কমিশনের তরফে আগামী ১৫ জানুয়ারি অবধি ভোটমুখী পাঁচ রাজ্যে সমস্ত জনসভা, মিছিল, শোভাযাত্রা, এমনকি পাড়ার মোড়ের মিটিংগুলির উপরও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। কমিশনের তরফে ১৬টি পয়েন্টের একটি নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, যেখানে রাস্তার ধারের পথসভা, মিটিং-মিছিলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচারের ক্ষেত্রেও একটি নির্দিষ্ট জনসংখ্যা বেধে দেওয়া হয়েছে। ভোটের ফলপ্রকাশের পরও বিজয় মিছিলের ক্ষেত্রে জনসংখ্য়া বেধে দেওয়া হয়েছে। যদিও উত্তর প্রদেশে একাধিক রাজনৈতিক দলকেই নির্বাচনী বিধিভঙ্গ করতে দেখা গিয়েছে।
সম্প্রতিই লখনউয়ের জেলাশাসক জানিয়েছিলেন, সমাজবাদী পার্টি বিনা অনুমতিতেই মিছিল বের করছে। বারবার নির্বাচনী ও করোনাবিধি ভঙ্গের জন্য সমাজবাদী পার্টির অফিসে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এই বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। অন্যদিকে, করোনাবিধি ভঙ্গের অভিযোগের জবাবে সমাজবাদী পার্টির নেতা উত্তম পটেল বলেন, “আমাদের পার্টি অফিসের ভিতরেই ভার্চুয়াল অনুষ্ঠান চলছিল। আমরা কাউকে ডাকিনি, সাধারণ মানুষ নিজে থেকেই এসেছেন। সাধারণ মানুষ করোনাবিধি মেনেই চলছে। বিজেপি নেতা-মন্ত্রীদের বাড়ির সামনে বা বাজারেও ভিড় হচ্ছে, কিন্তু সমস্য়া শুধু আমাদের নিয়েই।”
লখনউ সহ উত্তর প্রদেশের একাধিক জেলায় ইতিমধ্যেই উর্ধ্বমুখী করোনা সংক্রমণ। টিকাকরণের হারও তুলনামূলকভাবে অনেকটাই কম। রাজ্যের ৩০ শতাংশেরও কম জনগণ করোনা টিকার দুটি ডোজ় নিয়েছেন। এদিকে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়েই বিপর্যস্ত রাজ্যগুলির মধ্যে অন্যতম ছিল উত্তর প্রদেশ। গঙ্গা নদীতে ও পাড়ে সারি সারি মৃতদেহের ছবি ধরা পড়েছিল, যার জেরে প্রবল সমালোচনার মুখে পড়েছিল যোগী সরকার।