নয়া দিল্লি: এক মাস বাদেই উত্তর প্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন (Uttar Pradesh Assembly Election 2022)। শাসকদল বিজেপির অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে কংগ্রেস, সমাজবাদী পার্টি ছাড়াও উঠে আসছে শিবসেনা(Shiv Sena)-র নাম। শেষ মুহুর্তের প্রচার, প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত করতেই ব্যস্ত যখন সমস্ত দল, সেই সময়ই কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইত(Rakesh Tikait)-র সঙ্গে দেখা করলেন শিবসেনা নেতা তথা সাংসদ সঞ্জয় রাউত (Sanjay Raut)। আর এই সাক্ষাতকে ঘিরেই শুরু হয়েছে নতুন রাজনৈতিক সমীকরণের জল্পনা।
চলতি সপ্তাহেই শিবসেনার তরফে জানানো হয়েছিল, তারা এবার উত্তর প্রদেশ নির্বাচনেও অংশ নিতে চলেছেন। কমপক্ষে ৫০ থেকে ১০০টি আসনে আমরা লড়ব। বৃহস্পতিবারই শিবসেনা সাংসদ সঞ্জয় রাউত উত্তর প্রদেশের মুজাফ্ফরনগরে ভারতীয় কিসান ইউনিয়নের নেতা রাকেশ টিকাইতের সঙ্গে দেখা করেন। ফোনে কথা বলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও। তারা জানান, আসন্ন নির্বাচনে কৃষকদের আশির্বাদ নিতেই এই সাক্ষাৎ।
সঞ্জয় রাউত জানান, দলীয় কর্মীদের প্রচার ও আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের ছক কষতেই তিনি দিল্লি ও উত্তর প্রদেশে নিয়মিত আসছেন। তিনি জানান, মথুরা, বারাণসী, এমনকি মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য়নাথের বিরুদ্ধে অযোধ্যাতেও শিবসেনা প্রার্থী দেবে। তাঁর দাবি, উত্তর প্রদেশে শিবসেনা তুলনামূলকভাবে নতুন হলেও, সেনা ভাল সংখ্যক ভোটই পাবে। কারণ দেশে ক্ষমতার পরিবর্তন প্রয়োজন। তাই শিবসেনা জিতবেই।
রাকেশ টিকাইতের সঙ্গে সাক্ষাতকে “অরাজনৈতিক” সাক্ষাৎ বলেই অ্যাখ্যা দেন। তিনি বলেন, “সাক্ষাতের অধিকাংশ আলোচনাই কৃষকদের নিয়ে হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেও রাকেশ টিকাইতের সঙ্গে ফোনালাপে কৃষকদের সমর্থনের জন্য মহারাষ্ট্র সরকার কী নীতি গ্রহণ করেছে, তা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। উনি টিকাইতকে মহারাষ্ট্রে আসার আমন্ত্রণও জানিয়েছেন।”
রাকেশ টিকাইতকে নিয়েই বৃৃহস্পতিবার সাংবাদিক বৈঠক করেন সঞ্জয় রাউত। সেখানে তিনি বলেন, “উদ্ধবজী ও রাকেশ টিকাইতের মধ্যে দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে কৃষকদের নানা সমস্যা নিয়ে। আমরা কখনওই রাকেশ টিকাইতজীকে নির্বাচনী রাজনীতিতে প্রবেশ করতে বলব না। তবে দেশের রাজনীতি কৃষকদের সমর্থন ছাড়া চলতে পারে না। কৃষকরাই ঠিক করেন কে গদিতে বসবেন এবং ইতিহাস সাক্ষী রয়েছে যে যখনই কেউ ক্ষমতায় এসেছে, তারা কৃষকদের কথা ভুলে গিয়েছেন। কিন্তু উদ্ধবজী ক্ষমতায় আসার দুই মাসের মধ্যেই কৃষকদের সমস্ত ঋণ মকুব করে দিয়েছিলেন।”
কৃষক নেতা রাকেশ টিকাইতও জানান, তিনি শীঘ্রই মহারাষ্ট্রে আসবেন। তিনি বলেন, “উদ্ধবজী আমায় মহারাষ্ট্রে আসার জন্য আমায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। উনি বলেছেন যে কৃষিকাজ ও কৃষকদের নিয়ে মহারাষ্ট্র সরকারের নীতি আলোচনা করতে চান। আমরা ওই নীতি পর্যালোচনা করে দেখব এবং তা দেশের বাকি প্রান্তে ছড়িয়ে দেব। এরসঙ্গে রাজনীতির কোনও সংযোগ নেই। রাজনৈতিক দলগুলির কাজ হল নির্বাচনে লড়াই করা। দিল্লিতে যখন কৃষক আন্দোলন চলছিল, তখন মহারাষ্ট্র সরকার বরাবর নিজেদের সমর্থন জানিয়েছিল। যখনই আমরা কোনও বনধ ডেকেছিলাম, মহারাষ্ট্রেও তা পালন করা হয়েছিল।”
সঞ্জয় রাউত জানান, উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনে শিবসেনা অন্য কোনও দলের সঙ্গে জোট বাধবে না। অযোধ্যাতে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্য়নাথের বিরুদ্ধেও শিবসেনার প্রার্থী দাঁড় করানো হবে কিনা, জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “আমরা কোনও একজনের বিরুদ্ধে লড়াই করতে আসিনি। আমরা নিজেদের রাজনীতি মতো করতে ও নির্বাচনে লড়তে এসেছি। সংবিধানে কি কোথায় বলা হয়েছে আমরা নির্দিষ্ট কোনও ব্য়ক্তির বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে পারব না? আমরা অযোধ্য়া থেকেও প্রার্থী দেব।”