Meera Pandey on WB Panchayat Polls: ‘হিংসার ঘটনা ঘটবেই, সঠিক পদক্ষেপে নিয়ন্ত্রণ সম্ভব’, বর্তমানকে প্রাক্তনের পাঠ
West Bengal Panchayat Polls: বারবার ২০১৩ সালের প্রসঙ্গ উঠে আসছে এবার। সেই সময় মীরা পাণ্ডে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে প্রশ্ন উঠেছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে। সদ্য নিযুক্ত কমিশনার রাজীব সিনহাকে ভর্ৎসনার মুখে পড়তে হয়েছে আদালতে। এরই মধ্যে আবার সেই কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল। কার্যত এক নজিরবিহীন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যে। আদালতে শুনানি চলাকালীন উঠে এসেছে ২০১৩-র নির্বাচনের প্রসঙ্গ। সেই সময় কত বেশি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গ তুলেছেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি। ২০১৩-তে সেই ভোটের সময় কমিশন-রাজ্য সংঘাতের কথা মনে আছে অনেকেরই। তৎকালীন কমিশনার তথা অবসরপ্রাপ্ত আইএস মীরা পাণ্ডে মনে করছেন, সঠিক পদক্ষেপ করলে হিংসা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। একান্ত সাক্ষাৎকারে জানালেন TV9 বাংলাকে।
কী পদ্ধতিতে হয় কমিশনার অপসারণ?
রাজ্যপাল জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠানোর পর প্রশ্ন উঠেছে, তবে কি রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে সরে যেতে হবে? এই প্রসঙ্গে মীরা পাণ্ডে বলেন, “যতদূর জানি, কমিশনার একটি সাংবিধানিক পদ। তাই তাঁকে সরাতে গেলে ইমপিচমেন্ট প্রসেসের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। হাইকোর্টের বিচারপতিকে সরাতে গেলে যে পদ্ধতি, সেই পদ্ধতিতেই সরাতে হয় কমিশনারকেও।”
২০১৩ সালে কত বাহিনী?
বারবার ২০১৩ সালের প্রসঙ্গ উঠে আসছে এবার। সেই সময় মীরা পাণ্ডে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার আর্জি জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গিয়েছিলেন। প্রাক্তন কমিশনার জানান, সে বার ৫ দফায় ভোট হয়েছিল। প্রতি দফার জন্য ২০০ কোম্পানি করে বাহিনী নেওয়া হয়েছিল। তবে পঞ্চম দফায় বুথের সংখ্যা কম থাকায় একটু কম বাহিনী ছিল। সব মিলিয়ে ৮০০ কোম্পানির বেশি বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিল।
‘একদিনের নির্বাচনে প্রয়োজন অনেক বেশি বাহিনী’
প্রাক্তন নির্বাচন কমিশনার বলছেন, প্রত্যেকবার ভোটে ছবিটা বদলে যাচ্ছে। কোনও কোনও জায়গায় বেশি গণ্ডগোল হচ্ছে। আবার এমন কিছু জায়গা আছে, যেখানে প্রতিবারই গণ্ডগোল হয়। সেই সব এলাকাগুলো চিহ্নিত করে কমিশনকে মূল্যায়ন করে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হয়। এবার ভোটার ও বুথের সংখ্যা বেড়েছে। তাই কমিশনকে বেশি ভোটকর্মী আনতে হবে বলেও মনে করেন মীরা পাণ্ডে। তিনি বলেন, “নিরাপত্তা নিয়েও ভাবনাচিন্তা প্রয়োজন। শুধু বুথেই নয়, মোবাইল ভ্যানে, সেক্টর অফিসেও নিরাপত্তা দরকার আছে। আর এবার একদিনে পুর নির্বাচন। তাই আলাদাভাবে মূল্যায়ন করতে হবে কমিশনকে। যত নিরাপত্তা বাহিনী দরকার, তার ওপর কিছু রিজার্ভে রাখতে হয়। সেটা একটা অঙ্কের ব্যাপার।”
‘সঠিক পদক্ষেপ করলে পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব’
পশ্চিমবঙ্গের প্রত্যেক নির্বাচনেই কিছু না কিছু ঘটে বলে মন্তব্য করেছেন মীরা পাণ্ডে। তাঁর মতে, পঞ্চায়েত নির্বাচন অর্থাৎ যে ভোটে গ্রামের লোক প্রার্থীকে চেনে, সেখানে হিংসার ঘটনা ঘটে থাকে। তবে সঠিক পদক্ষেপ করলে পরিস্থিতি সামলানো সম্ভব বলে মনে করেন তিনি।
‘কমিশনের ওপর আস্থা হারানো দুর্ভাগ্যজনক’
প্রাক্তন কমিশনার বলেন, “কমিশনটা তৈরি করা হয়েছে সুষ্ঠ নির্বাচনের জন্য। তবে প্রতিটি নির্বাচনে পরিস্থিতি বদল হয়। কমিশন সেগুলো দেখেই সিদ্ধান্ত নেয়। কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাকে আইন মেনেই সবটা করতে হয়। তবে যে সব ঘটনা ঘটছে, তা দেখে যদি কারও মনে হয়, কমিশন দায়বদ্ধতা থেকে সরে যাচ্ছে তাহলে সেটা দুর্ভাগ্যজনক।”
উল্লেখ্য, মনোনয়ন পর্বের হিংসার ঘটনা প্রসঙ্গে বুধবার বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেছেন, ‘এত হিংসা হলে রাজ্যে নির্বাচন বন্ধ করে দেওয়া উচিত। এটা লজ্জার।’ অন্যদিকে, হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি কমিশনারের উদ্দেশে বলেছেন, ‘চাপ রাখতে না পারলে ছেড়ে দিন।’