WB Panchayat Polls 2023: নির্বাচন কমিশনারকে কি সরাতে পারেন রাজ্যপাল? নিয়ম কী? জানালেন অবসরপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি
WB Panchayat Polls 2023: নির্বাচনের ১৬ দিন আগে প্রশ্ন উঠেছে, এবার কী হবে? কমিশনার পদ কি ছাড়তে হবে রাজীব সিনহাকে? কমিশনারকে কি এত সহজে অপসারণ করা সম্ভব?
রাজ্যে তৈরি হয়েছে এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহার জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস। ভোট ঘোষণার আগে তিনিই রাজীব সিনহাকে ওই পদে নিয়েগ করেছিলেন। নির্বাচনের ১৬ দিন আগে প্রশ্ন উঠেছে, এবার কী হবে? কমিশনার পদ কি ছাড়তে হবে রাজীব সিনহাকে? কমিশনারকে কি এত সহজে অপসারণ করা সম্ভব? TV9 বাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে সেই নিয়ম সম্পর্কে উত্তর দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি দেবাশিস কর গুপ্ত।
TV9 বাংলা: রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল, এর ফলে কী হতে পারে?
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি: আমরা জানি সংবিধান সংশোধন করে রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে সংবিধানের আওতায় আনা হয়েছে। আর্টিকল ২৪৩-কে (১)-এ তাঁর নিয়োগ পদ্ধতি সম্পর্কে বলে দেওয়া আছে। তাঁর নিয়োগকর্তা রাজ্যপাল।
আর্টিকল ২৪৩-কে (২) তে বলা আছে অপসারণের বিষয়। হাইকোর্টের বিচারপতিকে যে কারণে ও যে পদ্ধতিতে অপসারণ করতে হয়, সেই পদ্ধতিতেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনারকে অপসারণ করতে হয়। তবে জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত পাঠালে কী হবে, সেটা আইনে বলা নেই। যদি এটা নিয়ে কোনও বিতর্ক হয় বা মামলা হয় তাহলে আইনি পথে সিদ্ধান্ত গৃহীত হবে। যদি আধিকারিক মেনে নেন, তাহলে কোনও অসুবিধা নেই, রাজ্যপালের সিদ্ধান্ত বহাল থাকবে। আর বিরোধিতা করলে আইনি পথে লড়তে হবে।
TV9 বাংলা: জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত দিয়ে কি কোনও বার্তা দিতে চাইলেন রাজ্যপাল?
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি: অবশ্যই। এখানে রাজ্যপাল তাঁর ভাবনার প্রকাশ করলেন। এটা নিশ্চয় একটা মেসেজ।
TV9 বাংলা: এভাবে কমিশনারকে সরানো কি আদৌ সম্ভব?
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি: এই ঘটনাটি আমাদের কাছে অভূতপূর্ব। আগে কখনও ঘটেনি। যদি মামলা হয়, তাহলে আইনের মাধ্যমেই একটা সিদ্ধান্তে উপনীত হতে হবে।
TV9 বাংলা: যিনি বিচারপতির মর্যাদা পান, তাঁর অপসারণ কীভাবে হতে পারে?
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি: সংবিধান চার ধরনের পদকে কক্ষাকবচ দিয়েছে। সেই সব পদে নিয়োগ হওয়ার পর বা কাজ শুরু হওয়ার পর পদ থেকে সরাতে হলে পিটিশনের ভিত্তিতে লোকসভা ও রাজ্যসভা উভয়কক্ষে দুই-তৃতীয়াংশ মেজরিটিতে ইমপিচমেন্ট পাশ করতে হবে। এই চার পদের মধ্যে রয়েছে- সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, হাইকোর্টের বিচারপতি, নির্বাচন কমিশনার (পরে যুক্ত হয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার), কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল।
TV9 বাংলা: রাজ্যপাল নিয়োগ করলেন, আবার তিনিই জয়েনিং রিপোর্ট ফেরত দিলেন। আপনি কীভাবে দেখছেন বিষয়টা?
প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি: আমাকে প্রাক্তন বিচারপতি হিসেবে দেখতে হবে, কোন পথে এগোতে পারে। এই প্রসঙ্গে একটা উদাহরণ দিই- গোয়ার নির্বাচন কমিশনার নিয়োগের ক্ষেত্রে এভাবেই প্রশ্ন উঠেছিল। বম্বে হাইকোর্ট সেই নিয়োগে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল। অ্যাডিশনাল চিফ জুডিশিয়াল সেক্রেটারিকে সেখানে নিয়োগ করা হয়েছিল। পরে সুপ্রিম কোর্টে মামলা হয়। শীর্ষ আদালত বলেছিল, রাজ্যের কোনও আধিকারিককে নির্বাচন কমিশনার পদে নিয়োগ করা যাবে না। নিয়োগ করতে হলে আগের পদে ইস্তফা দিয়ে স্বাধীনভাবে এই পদ নিতে হবে। এখানেও রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে যদি চ্যালেঞ্জ করা হয়, তাহলে বিচার ব্যবস্থা কী বলে, তার জন্য অপেক্ষা করতে হবে।