Aindrila Sharma First Death Anniversary: ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর এক বছর, ডুকরে উঠে যা বললেন তাঁর ক্যানসার আক্রান্ত মা

EXCLUSIVE: গত বছর ২০ নভেম্বর না-ফেরার দেশে চলে যান ছোটপর্দার অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মা। ১ নভেম্বর স্ট্রোকে আক্রান্ত হন দু-দু'বারের ক্যানসারজয়ী অভিনেত্রী। তারপর ২০ দিনের লড়াই। এবং প্রয়াণ। ঐন্দ্রিলার মৃত্যুদিনের সেই শোককে বহন করে বেড়াচ্ছেন তাঁর পরিবার এবং প্রিয়জনেরা। প্রথম প্রয়াণ দিবসে TV9 বাংলা কথা বলল অভিনেত্রীর মা শিখা শর্মার সঙ্গে।

Aindrila Sharma First Death Anniversary: ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর এক বছর, ডুকরে উঠে যা বললেন তাঁর ক্যানসার আক্রান্ত মা
ঐন্দ্রিলা শর্মার প্রথম মৃত্যুদিবসে কী বললেন তাঁর মা শিখাদেবী...
Follow Us:
| Updated on: Nov 20, 2023 | 3:04 PM

স্নেহা সেনগুপ্ত

‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে,/আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে/চুকিয়ে দেব বেচা কেনা,/মিটিয়ে দেব গো, মিটিয়ে দেব লেনা-দেনা…’ পার্থিবের যাবতীয় ‘লেনা-দেনা’ মিটিয়ে তিনি চলে গিয়েছেন এক বছর হল। তাঁর ‘পায়ের চিহ্ন’ আর পড়ে না দক্ষিণ কলকাতার টালিগঞ্জ এলাকার সুসজ্জিত অ্যাপার্টমেন্টে। তবু ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করে শেষমেশ শেষতম নিঃশ্বাস ত্যাগ-করা ছোট মেয়ের একরাশ স্মৃতি বুকে আঁকড়ে ধরে রাখতে চায় মায়ের মন। শুধু কি মন? না, এক বছর পর মস্তিষ্কও তাই-ই চায় মায়ের। ঘটনাচক্রে প্রয়াত অভিনেত্রী ঐন্দ্রিলা শর্মার মা শিখাদেবীও ক্যানসারে আক্রান্ত। ২০২২-এর ২০ নভেম্বর দু’-দু’বারের ক্যানসারজয়ী ঐন্দ্রিলার মৃত্যুর এক বছর পর, আজ, ওই দিনে, ছোট্ট মেয়ের ছেলেবেলার প্রিয় বহরমপুরে বৃক্ষরোপণ করবেন, বস্ত্রবিতরণ করবেন শিখাদেবী। অভাবী মানুষকে খাওয়াবেন বলেও ঠিক করেছেন ক্যানসার আক্রান্ত শিখাদেবী।

শর্মা পরিবারের কাছে এ বছরের নভেম্বর মাসটা বিষাদের… একাকিত্বের… শূন্যতার… কান্নার। গত বছর (২০২২) চিরকালের মতো তাঁদের ছোট্ট মেয়ে সব হিসেব-নিকেশ ‘চুকিয়ে’ হারিয়ে গিয়েছিল এই নভেম্বরেই। গত বছর ১ নভেম্বর হঠাৎই স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন ঐন্দ্রিলা। টানা ২০ দিনের লড়াই। হাওড়ার বেসরকারি হাসপাতালে হত্যে দিয়ে পড়ে থাকা প্রেমিক সব্যসাচী (চৌধুরী)-র নাছোড় ভালবাসা, পেশায় নার্স শিখাদেবীর অক্লান্ত চেষ্টা, চিকিৎসক দিদি ঐশ্বর্যর নিরলস পরিশ্রম আর বাবা উত্তম শর্মার জেদি প্রার্থনা… সবকিছুকে ব্যর্থ করে ২৫ বছরে পা দেওয়ার আগেই ঐন্দ্রিলার জীবন থেমে যায় বরাবরের মতো। ২০ নভেম্বর চলে যান ছোটপর্দার অভিনেত্রী। কেটে গিয়েছে একটা গোটা বছর। ফের ফিরে এসেছে নভেম্বর মাস। ঐন্দ্রিলার মায়ের দ্বিতীয়বার ক্যানসার ধরা পড়েছে। তিনিও লড়ছেন। বহরমপুরে ছোটবেলা কাটিয়েছেন ঐন্দ্রিলারা। সেখানেই তাঁর মা শিখাদেবী এ বারের ২০ নভেম্বরটা ছোট মেয়ের জন্য বৃক্ষরোপণ করবেন, বস্ত্রবিতরণ করবেন এবং অভাবী মানুষকে খাওয়াবেন। ঐন্দ্রিলা বড় ভালবাসত এগুলো করতে। তাই প্রয়াত মেয়ের হয়ে মা-ই করবেন সবকিছু… ‘শেষ হয়ে হইল না শেষ’-এর মতো যেন…

বহরমপুরে বড় হলেও কলকাতায় থাকতে খুবই ভালবাসতেন ঐন্দ্রিলা। টালিগঞ্জের সেই সুসজ্জিত অ্যাপার্টমেন্ট এখন খালিই পড়ে রয়েছে। মাঝেমধ্যে সেখানে গিয়ে ঘুরে আসেন শিখাদেবী। মেয়ের ফেলে রাখা স্মৃতিকে খানিক হাতড়ে বেড়ানো আর কী। মনে করেন, সেখানে গেলেই যেন ঐন্দ্রিলাকে ছুঁতে পারবেন। মেয়ের উপস্থিতি আজও সেখানেই টের পান শিখাদেবী। অভিনেত্রীর প্রেমিক সব্যসাচীও যান সেই অ্যাপার্টমেন্টে। এই নভেম্বরেই গিয়েছিলেন। ঐশ্বর্য এবং শিখাদেবীর সঙ্গে সময় কাটিয়ে এসেছেন। TV9 বাংলাকে শিখাদেবী বলেছেন, “আমি গেলেই দেখা করতে আসে সব্য।” সব্যসাচীর প্রেমিকা আর এই পৃথিবীর বাসিন্দা নন। তা হলে কি একাকী হয়েই জীবন কাটিয়ে দেবেন সব্যসাচী? এ ব্যাপারে শিখাদেবীর মনের গহনে ঠিক কী ভাবনা চলে? জবাব দেন শিখাদেবী, তিনি বলেছেন, “আমার মনেই হয় না সব্যসাচী আর অন্য কাউকে ভালবাসবে অথবা অন্য কারও সঙ্গে সংসার করবে।”

ঐন্দ্রিলার মতোই দ্বিতীয়বার ক্যানসারে আক্রান্ত শিখাদেবীর শারীরিক অবস্থা এই ভাল, এই খারাপ। তিনি পেশায় একটি নার্সিং স্কুলের ইন-চার্জ। নিত্যদিন সেই নার্সিং স্কুলে যান। কেমো থেরাপিও চলছে। ডুকরে ওঠা মন অথচ দাঁতে-দাঁত রেখে কথা বলে যাওয়ার সাহস এতদিনে সঞ্চয় করে নিয়েছেন শিখাদেবী। বলেন, “মিষ্টিই (ঐন্দ্রিলার ডাকনাম) আমাকে লড়াই করার সাহস দিয়েছে। ওঁরও ক্যানসার ছিল। কেমো থেরাপি করানোর পর নাচত। কখনও ভয় পেত না। আমার ছোট্ট মেয়েটা যদি সেই কষ্টকে অতিক্রম করে হাসি মুখে থেকে যেতে পারে, আমি ওঁর মা হয়ে তা পারব না?” তাই তো ওরাল কেমো (কেমো থেরাপির ট্যাবলেট) নিয়েও কর্মস্থানে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। বলেছেন, “আমার মেয়েটা তো কাজ থামিয়ে দেওয়ায় বিশ্বাসী ছিল না। ও বলত, শরীর খারাপ তো কী হয়েছে? তোমার মনটা ঠিক আছে তো। মনের জোর আছে তো… সেই জোরটাই দেখাচ্ছি জেদ করে। শুধু আমার মেয়েটাকে দেখতে পাইনি এই এক বছরে।”

এ দিকে, বর্তমানে বজবজে চাকরি করেন ঐন্দ্রিলার চিকিৎসক দিদি ঐশ্বর্য। ঐন্দ্রিলা জীবিত থাকার সময় দুই বোনে একসঙ্গেই থাকতেন। অভিনেত্রীর প্রয়াণের পর তিনিও টালিগঞ্জের অ্যাপার্টমেন্ট ছেড়ে হাসপাতালের আবাসনে থাকছেন। বোনের মৃত্যুদিনে কাজের মধ্যেই ডুবে থাকবেন। বললেন, “দিনটা ভুলে যেতে চাই। এই দিনটা যে ক্য়ালেন্ডারের পাতায় রয়েছে, সেটাই আর মনে রাখতে চাই না আমি… তাই এই দিন আমি কাজই করব। হাসপাতালের কাজ…”

ঐন্দ্রিলার জার্নি কতখানি প্রেরণা জোগায় ঐশ্বর্যকে? দু’জন রোগী দেখে নম্র স্বরে বলেছেন, “আমার বোনটা বেঁচে থাকলে অনুপ্রেরণা দিত। ও তো আর নেই আমাদের মধ্যে। অভিনেত্রী ছিল। চুল উঠে যাওয়া, চেহারা বদলে যাওয়া, মোটা হয়ে যাওয়া… এগুলো তো ছিলই। পুরোপুরি ঠিক হল যখন, মনের মধ্যে খুব ভয় হত, ঠিক হয়ে যাবে তো? আবার ক্যানসার ফিরে আসবে না তো? সব জেনেও না-জানার, না-বোঝার চেষ্টা করতাম।” ঐন্দ্রিলাকে যাঁরা কাছে থেকে চেনেন, তাঁরা জানেন অভিনেত্রী এক্কেবারেই হেরে যাওয়ার পাত্রী ছিলেন না তিনি। মৃত্যুর কাছে ছাড়া আর কোত্থাও তিনি হারেননি। বোনের সেই গুণটাকেই পাথেয় করে এগিয়ে যাচ্ছেন ঐশ্বর্য। “ক্লান্ত দিনের শেষে বাড়ি ফিরে বোনকে বলতাম আমার কিছু-কিছু হেরে যাওয়ার গল্প। মন খারাপ করলে ওর সঙ্গে শেয়ার করতাম। এখন বিছানায় বসে মনে-মনে কথা বলি ওর সঙ্গে। বোন বলত, যেটা করতে চাইবি দিদি, সেটাই করবি। ওটা আমি ওর থেকে শিখেছি। ও দেখে এ-ও শিখেছি, জীবনে যাই-ই হয়ে যাক না কেন, কোনও কিছু নিয়েই বেশি দুশ্চিন্তা করতে নেই,” নাগাড়ে বলে চলেন ঐশ্বর্য।

সব্যসাচীর সঙ্গে ঐন্দ্রিলার দিদি ঐশ্বর্য এবং মা শিখা শর্মা।

দ্বিতীয়বার ক্যানসারকে জয় করার পর ঐন্দ্রিলা যখন ফিরে এলেন, সালটা ছিল ২০২২। দিনটা ছিল ৪ ফেব্রুয়ারি। TV9 বাংলাকে দীর্ঘ সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন তিনি। বেঁচে থাকার জয়গান গেয়েছিলেন অভিনেত্রী। তাঁর জার্নি অগুণতি, অসংখ্য মানুষকে কীভাবে উদ্বুদ্ধ করছে, সেই কথাও বলেছিলেন ঐন্দ্রিলা। বলেছিলেন, “প্রত্যেকের জীবনে খারাপ সময় আসে এবং সেই খারাপ সময় চলেও যায়। আমি জানি, খুব কষ্ট হয়। আমি নিজে পেয়েছি সেই কষ্ট। কিন্তু দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করতেই হবে। আমি বিশ্বাস করি রাতের পরে দিন আসে।”

‘বিশ্বাসে মিলায় বস্তু, তর্কে বহুদূর।’ সেই ‘বহুদূর’-এর অমোঘ ডাক উপেক্ষা করতে পারেননি ঐন্দ্রিলা। কেউই পারেন না। পারা যায় না। শুধু যেটা পারা যায়, সেটা হল: অসুখের কাছে, বেদনার কাছে, তাঁর সদা হাস্যময় মুখটা চিরকাল মনে রেখে দেওয়া। ঐন্দ্রিলার সেই হাসি মুখ য়েন মনে করিয়ে দেয় সেই চিরকালীন সত্য: ‘আছে দুঃখ,আছে মৃত্যু,বিরহদহন লাগে/তবুও শান্তি,তবু আনন্দ,তবু অনন্ত জাগে’ জিতে গিয়েছিলেন তিনি। জিতেছিলেন অসুখের কাছে, বেদনার কাছে… তাঁর সদা হাস্যময় মুখ চিরকাল মনে রাখবে দুনিয়া।

ডিপসিকে রক্তস্নান করল আমেরিকার শেয়ার বাজার, হাহাকার দালাল স্ট্রিটেও!
ডিপসিকে রক্তস্নান করল আমেরিকার শেয়ার বাজার, হাহাকার দালাল স্ট্রিটেও!
কিঞ্জল নন্দ সিনেমা থেকে পয়সা পাচ্ছে সরকার ব্যবস্থা নেবে না?: সৌগত
কিঞ্জল নন্দ সিনেমা থেকে পয়সা পাচ্ছে সরকার ব্যবস্থা নেবে না?: সৌগত
টেলিভিশনের প্রাইম টাইমে গণতন্ত্র রেজাল্ট বেরোয় না: ঋতব্রত
টেলিভিশনের প্রাইম টাইমে গণতন্ত্র রেজাল্ট বেরোয় না: ঋতব্রত
'অর্পিতার সঙ্গে গল্প করা, পাশে বসিয়ে...' কেন বললেন সজল?
'অর্পিতার সঙ্গে গল্প করা, পাশে বসিয়ে...' কেন বললেন সজল?
তৃণমূল আর অমূলের কোনও ব্যাপার নেই, যদি কেউ অন্যায় করে থাকে...: ফিরহাদ
তৃণমূল আর অমূলের কোনও ব্যাপার নেই, যদি কেউ অন্যায় করে থাকে...: ফিরহাদ
গতকাল 'রক্তাক্ত হয়েছে' আমেরিকা, আজ তার প্রভাবে নেমেছে ভারতের বাজারও!
গতকাল 'রক্তাক্ত হয়েছে' আমেরিকা, আজ তার প্রভাবে নেমেছে ভারতের বাজারও!
ফাঁসি চাওয়া-না চাওয়া তিলোত্তমার বাবা-মায়ের ওপর নির্ভর করে না: কল্যাণ
ফাঁসি চাওয়া-না চাওয়া তিলোত্তমার বাবা-মায়ের ওপর নির্ভর করে না: কল্যাণ
বাম কংগ্রেসকে বিজেপির ছত্রছায়ায় আসার আহ্বান সুকান্তর
বাম কংগ্রেসকে বিজেপির ছত্রছায়ায় আসার আহ্বান সুকান্তর
কেন সঞ্জয়ের মৃত্যু চাইছেন না তিলোত্তমার মা-বাবা?
কেন সঞ্জয়ের মৃত্যু চাইছেন না তিলোত্তমার মা-বাবা?
Tathagata Roy: 'রাজ্য সভাপতি শুভেন্দুই', সিলমোহর দিলেন তথাগত
Tathagata Roy: 'রাজ্য সভাপতি শুভেন্দুই', সিলমোহর দিলেন তথাগত