Swastik Sanket: ইতিহাস বিকৃত, দর্শক বিভ্রান্ত! বিতর্কে ‘স্বস্তিক সঙ্কেত’, পাল্টা সওয়াল পরিচালক-অভিনেতার

ছবি নিয়েই টলিপাড়ায় জোর শোরগোল। অন্যতম টলি প্রযোজক রানা সরকার ছবিটি নিয়ে খুল্লামখুল্লা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। তাঁর সাফ কথা, লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস নরক সঙ্কেত অবলম্বনে তৈরি এই ছবি ধারে কাছেও পৌঁছতে পারেনি মূল উপন্যাসের।

Swastik Sanket: ইতিহাস বিকৃত, দর্শক বিভ্রান্ত! বিতর্কে 'স্বস্তিক সঙ্কেত', পাল্টা সওয়াল পরিচালক-অভিনেতার
বিতর্কে 'স্বস্তিক সঙ্কেত'
Follow Us:
| Updated on: Jan 24, 2022 | 8:19 PM

 

৫০ শতাংশ দর্শক নিয়ে টিমটিম করে চলছে সিনেমা হল। এরই মধ্যে গত ২১ জানুয়ারি ‘স্বস্তিক সঙ্কেত’ নামক একটি ছবি মুক্তি পেয়েছে প্রেক্ষাগৃহ। ছবিটির প্রযোজক এসকে মুভিজ। অভিনয়ে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায়, রুদ্রনীল ঘোষ, নুসরত জাহান, গৌরব চক্রবর্তীসহ অনেকেই। পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল।

এই ছবি নিয়েই টলিপাড়ায় জোর শোরগোল। অন্যতম টলি প্রযোজক রানা সরকার ছবিটি নিয়ে খুল্লামখুল্লা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন সামাজিক মাধ্যমে। তাঁর সাফ কথা, লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের উপন্যাস নরক সঙ্কেত অবলম্বনে তৈরি এই ছবি ধারে কাছেও পৌঁছতে পারেনি মূল উপন্যাসের। রাখঢাক না করেই রানা লেখেন, ‘বলা হয় টলিউড বাংলা সাহিত্যকে ব্যবহার করে না। করলেই বা তার ফল কী ? যখন পড়েছিলাম ‘নরক-সংকেত’ আমার অসাধারণ লেগেছিলো…সরি দেবারতি তোমার লেখার মান টলিউড রাখতে পারলো না।”

তাঁর অভিযোগ ছবির প্রযোজকদের বিরুদ্ধে। রানার এই অভিযোগের সঙ্গে কি একমত দেবারতি? কী বক্তব্য পরিচালক সায়ন্তন ঘোষাল ও অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষের? তা জানতেই, টিভিনাইন বাংলা কথা বলেছিল রানা,সায়ন্তন, রুদ্রনীল ও দেবারতি মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে। রানার কথার সঙ্গে কিছুটা হলেও একমত দেবারতি। যদিও পাল্টা যুক্তি সায়ন্তন ও রুদ্রনীল। টিভিনাইন বাংলাকে কে কী বললেন তা দেখে নেওয়া যাক–

রানা সরকার (প্রযোজক): সাবসিডি পাব বলেই লন্ডনে গিয়ে ছবি শুট করে ফেললাম এ আসলে দর্শককে বিভ্রান্ত করা। একেই কোভিড পরবর্তী সময়ে বাংলা ইন্ডাস্ট্রির অবস্থা খারাপ। এর মধ্যে শুধুমাত্র লন্ডনে গিয়ে শুটিং করব শুটিং করে ফেললাম এই যদি কোনও প্রযোজনা সংস্থার পয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট হয় তবে দর্শক আর আমাদের বিশ্বাস করবে না। ভাল কন্টেন্ট দিন, লন্ডনে শুটিং করতেই হবে কেন? পয়সা খরচা করুন। নেতাজী, হিটলারের ঐতিহাসিক তথ্য বিকৃত করবেন কেন? পরিচালককে দোষ দিয়ে লাভ নেই, সে বাধ্য হয় প্রযোজকের কথা শুনতে।

সায়ন্তন ঘোষাল (স্বস্তিক সঙ্কেতের পরিচালক) : উনি সিনিয়র মানুষ, দর্শক হিসেবে উনি বলেছেন। ওঁর ভাল নাই লাগতে পারে। আমি সেটিকে সম্মান করি। সবাইকে খুশি করা তো সম্ভব নয়। ওঁর ভাল লাগেনি আমি ব্যাপারটা শ্রদ্ধা করছি। কিন্তু ওঁকেও একটা জিনিস বুঝতে হবে। কোনও বই থেকে যখন সিনেমা তৈরি হয় তখন সিনেমাটিক লিবার্টি নিতে হয়। অনেক এলিমেন্ট যোগ করতে হয়। আমাদের মনে হয়েছে আমরা করেছি কারও জন্য ওয়ার্ক করেনি। দ্যাট ইজ ফাইন। অনেকের ক্ষেত্রে করেওছে। তাঁরা সেটা জানিয়েওছেন।

দেবারতি মুখোপাধ্যায় (নরক সঙ্কেতের লেখিকা): শঙ্কর বলেছিলেন, নিজে উপন্যাসের রাইটস প্রযোজনা সংস্থাকে দেওয়ার পর তার সমালোচনা মানে হচ্ছে অ্যারেঞ্জ ম্যারেজ করে মেয়েকে শ্বশুরবাড়িতে পাঠানোর পর জামাইয়ে নিন্দে করা। এটা ঠিকই এই করোনা অতিমারিতে তাঁরা বিশাল বড় ঝুঁকি নিয়েছেন, সবার অভিনয় ভীষণ ভাল, ভীষণ পরিশ্রম করেছেন প্রত্যেকে কিন্তু সেকেন্ড হাফটা এতটা জটিল হয়ে গিয়েছে আমার মনে হিয় নেতাজিকে আনাটা বোধহয় প্রয়োজনীয় ছিল না। তার কারণ উপন্যাসের মূল যে প্লট ইউজেনিক্স বা ইউরোপের শরণার্থী সমস্যা সেটা কিছুটা ব্যাকফুটে চলে গিয়েছে নেতাজি প্রসঙ্গ আনার জন্য। আমার উপন্যাসে একটা জমাটি ক্লাইম্যাক্স ছিল। যে প্রধান ভিলেন তাঁকে ক্লাইম্যাক্সে ফাঁস করা হয়েছে কিন্তু ওরা ছবির মধ্যভাগেই তা বলে দিয়েছেন।

রুদ্রনীল ঘোষ (অভিনেতা): কারও ভাল লাগতে কারও ভাল নাই লাগতে পারে। পুষ্পা এত হিট, কিন্তু পুষ্পা কিছু লোক না দেখে টনিক দেখছে। যখনই কোনও উপন্যাস থেকে সিনেমা তৈরি হয় তখন সেই উপন্যাসের কাহিনী ও সিনেমার চিত্রনাট্য এক থাকে না। যদি সেই সিনেমাটি হিট করে যায় তখন এই আলোচনাগুলো ঢাকা পড়ে যায়। হুবহু উপন্যাস আর উপন্যাস অবলম্বনে সিনেমার মধ্যে যে মিল থাকবে এমনটা কে বলেছে? উপন্যাস পড়ার সময় পাঠক নিজের মনে দৃশ্যকল্প বানিয়ে নিতে পারেন। কিন্তু সিনেমার ক্ষেত্রে তা হয় না।